আসছে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ইতিমধ্যে তফশীল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। তফশীল ঘোষণার পর থেকে সারা দেশের ন্যায় নীলফামারীর চারটি সংসদীয় আসনে বইছে ভোটের হাওয়া। এখন রাত পোহালেই শুরু হয় শুধু ভোট নিয়ে আলোচনা। ভোটের সাথে প্রার্থী নিয়েও চলছে ভোটারদের মধ্যে আলোচনা সমালোচনা। কোন প্রার্থীর কেমন আচরণ তা নিয়ে ভোটাররা করছেন চুলছেড়া বিশ্লেষণ। এমন কথা জানালেন নীলফামারী সদর আসনের ভোটার সফিকুল ইসলাম ও নীলফামারী -২ আসনের ভোটার আনোয়ার হোসেন।
এদিকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নীলফামারীর রাজ-নীতিতে নতুন সমীকরণ তৈরি করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
জেলার দুটি গুরুত্বপূর্ণ আসনে দলটি ঘোষণা করেছে দুইজন আলোচিত ও গ্রহণযোগ্য প্রার্থী। নীলফামারী ২ আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন জনপ্রিয় চিকিৎসক ডা.মো.কামরুল ইসলাম দর্পণ ও নীলফামারী ৩ (জলঢাকা) আসনে প্রার্থী হয়েছেন তরুণদের প্রিয় মুখ আবু সাঈদ লিওন। এই ঘোষণাকে ঘিরে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে তৈরি হয়েছে নতুন আলোচনার ঢেউ। দীর্ঘদিন চিকিৎসা সেবায় যুক্ত থেকে মানুষের আস্থা অর্জন করা ডা. মো. কামরুল ইসলাম মনোনয়ন পাওয়ার প্রতিক্রিয়ায় বলেন আলহামদুলিল্লাহ,আমাকে মনোনীত করায় নীলফামারীবাসী, গোড়গ্রাম, হাজিগঞ্জ এবং এনসিপির সকল অঙ্গসংগঠনের প্রতি কৃতজ্ঞ। উন্নয়ন ও জনগণের সেবাই হবে আমার মূল লক্ষ্য। তৃণমূল নেতাদের মতে, নীলফামারী ২ অঞ্চলে দীর্ঘদিন পর একজন শিক্ষিত, সৎ ও মানবসেবায় নিবেদিতপ্রাণ ব্যক্তির প্রার্থিতা স্থানীয় রাজনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তনের সম্ভাবনা তৈরি করেছে। অন্যদিকে জলঢাকা অঞ্চলের তরুণ সমাজে জনপ্রিয় আবু সাঈদ লিওন বলেন জলঢাকার মানুষই আমার শক্তি। প্রতিটি গ্রামের মানুষের কষ্ট আমি জানি। ক্ষমতার জন্য নয় মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্যই রাজনীতিতে এসেছি।
শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, কৃষি ও কর্মসংস্থান তার অগ্রাধিকার জানিয়ে তিনি বলেন, তরুণদের নেতৃত্বেই জলঢাকা নতুন উন্নয়নধারায় এগিয়ে যাবে। তার মনোনয়ন ঘোষণার পর থেকেই গ্রাম মাঠ হাটবাজারে চলছে ব্যাপক আলোচনা। জেলার চারটি আসন সামনে রেখে এনসিপির জেলা আহ্বায়ক আব্দুল মজিদ বলেন, নীলফামারী আমাদের কাছে শুধু রাজনৈতিক ক্ষেত্র নয় এটি জনগণের অধিকার ও উন্নয়নের প্ল্যাটফর্ম। আগামী নির্বাচনে নীলফামারী হবে এনসিপির অন্যতম শক্ত ঘাঁটি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নীলফামারীতে এনসিপি এবার নতুন সমীকরণ তৈরি করছে। তরুণ নেতৃত্ব, উন্নয়নমুখী পরিকল্পনা, সুশাসন ও দুর্নীতিমুক্ত রাজনীতির অঙ্গীকার এসব কারণে তরুণ ও নতুন ভোটারদের মধ্যে এনসিপির জনপ্রিয়তা বাড়ছে। এনসিপির প্রতিশ্রুতিতে উঠে এসেছে কৃষকবান্ধব নীতি, আধুনিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা, মানসম্মত শিক্ষা, যুবদের টেকসই কর্মসংস্থান, সড়ক যোগাযোগ উন্নয়ন, দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন। দলটির আশা মানুষের সমস্যা, সংকট ও স্বপ্নকে সামনে রেখে কাজ করলেই নীলফামারীর রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা সম্ভব। এনসিপির প্রার্থী ঘোষণার পর নীলফামারীর রাজনৈতিক মাঠে নতুন উত্তাপ বিরাজ করছে। নির্বাচন ঘনিয়ে এলে এই উত্তাপ আরও বাড়বে এমন মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। এখন নীলফামারীর মানুষের দৃষ্টি এনসিপির এই দুই প্রার্থীর দিকে। তারা কি পারবেন পরিবর্তনের বার্তা বাস্তবে রূপ দিতে।