দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ধার করে নয়, বরং নিজেদের অর্থনৈতিক সক্ষমতা দিয়েই বাড়াতে হবে বলে স্পষ্ট অবস্থান জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেছেন, রিজার্ভ বাড়াতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের ওপর নির্ভরশীল হওয়ার প্রয়োজন নেই, বরং টেকসই ও বাস্তবভিত্তিক পথেই এগোতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর ইআরএফ মিলনায়তনে ব্যাংকিং সেক্টর রিফর্ম, চ্যালেঞ্জ এবং করণীয় শীর্ষক এক সেমিনারে এসব কথা বলেন গভর্নর। তিনি জানান, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশের অর্থনীতি ভেঙে পড়ার কোনো আশঙ্কা নেই।
সেমিনারে গভর্নর দেশের ব্যাংকিং খাতের চিত্র তুলে ধরে বলেন, খেলাপি ঋণের হার প্রায় ৩৬ শতাংশে পৌঁছেছে, যা সম্ভবত বিশ্বে সর্বোচ্চ পর্যায়ের একটি। এ বিষয়ে কোনো তথ্য গোপন করা হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ডিসেম্বর মাসে পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতির দিকে যেতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
ব্যাংকিং খাতের সংস্কার প্রসঙ্গে ড. আহসান এইচ মনসুর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পূর্ণ স্বাধীনতার প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, প্রয়োজনে আন্দোলনের পথেও যেতে হতে পারে, যাতে অন্তর্বর্তী সরকার তাদের মেয়াদেই এই স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে পারে।
রিজার্ভ প্রসঙ্গে গভর্নর বলেন, ধার করে বা আইএমএফ থেকে অর্থ এনে কৃত্রিমভাবে রিজার্ভ বাড়ানোর কোনো লক্ষ্য নেই। নিজেদের আয়, রপ্তানি ও রেমিট্যান্সের শক্তির ওপর ভর করেই রিজার্ভ বাড়াতে হবে। তার ভাষায়, “আমাদের লক্ষ্য চলতি বছরে রিজার্ভ ৩৪ থেকে ৩৫ বিলিয়ন ডলারে নিয়ে যাওয়া।”
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের গ্রস রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ৩২ হাজার ৪৮২ দশমিক ৮৮ মিলিয়ন ডলারে। আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী নিট রিজার্ভ বর্তমানে ২৭ হাজার ৮১৭ দশমিক ৮৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।