জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাও: ভার্চুয়ালি তারেক রহমান

এফএনএস (প্রহলাদ মণ্ডল সৈকত; রাজারহাট, কুড়িগ্রাম) : : | প্রকাশ: ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫, ০৭:৪৬ পিএম
জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাও: ভার্চুয়ালি তারেক রহমান

মঙ্গলবার(১৮ফেব্রুয়ারি) বিকালে কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙা ইউনিয়নের বুড়িরহাট তিস্তা নদীর পাড়ে দ্ইুদিন ব্যাপী অবস্থান কর্মসূচির শেষ দিনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তারেক রহমান ভার্চুয়ালভাবে আলোচনায় অংশগ্রহন  করেন। পরে সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সমাপ্ত ঘোষনা করা হয়েছে। সারাদিন আলোচনায় বক্তব্য রাখেন- রাজারহাট উপজেলার বিএনপির সাবেক সভাপতি ও তিস্তা বাঁচাও কমিটির উপজেলা সমন্বয়ক আনিছুর রহমান, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারন সম্পাদক সাহিদুল ইসলামসহ উপজেলার নেতৃবৃন্দ। মাঝে মাঝে বিনোদন দিতে সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠানে মুখরিত ছিল পুরো এলাকা। মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় বুড়িরহাট ক্রসবাধ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়,  দুইদিনের কর্মসূচীতে দুর দুরান্ত থেকে মানুষ তিস্তা নদী বাঁচাতে এ এলাকায় অবস্থান করলেও একটুকুও ক্লান্তিবোধ করেনি। তার সদা হাসোজ্জ্বল অবস্থায় কর্মসূচী পালন করছেন। রাত জেগে কর্মসূচী পালন করায় মঙ্গলবার দুপুরের পর একটু ক্লান্ত বোধ করায় কেউ কেউ খড়ের গাধায় শুয়ে বিশ্রাম করছিলেন। উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নের মীরের বাড়ী এলাকা থেকে আসা আঃ হাকিম(৬২) বলেন, সোমবার সকাল থেকে এখানে অবস্থান করছি। আলোচনা সভায় অংশগ্রহন করি।  বেলা খাওয়া-দাওয়ার কোন ত্রুটি হয়নি। তিস্তা নদী বাঁচাতে আমি আন্দোলনে যোগ দিয়েছি। একই ইউনিয়নের কিংছিনাই ধরলা নদী এলাকার সামিউল হক(৪২) বলেন, খাওয়া-দাওয়া ত্রুটি তো দুরের কথা সুন্দরভাবে পাশের মসজিদে নামাজ আদায় করতে কোন অসুবিধা হয়নি। কয়েকটা জামাত হয়েছে।অনেকে এখানেই নামাজ আদায় করেছে। উপজেলার উমরমজিদ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির  সাবেক গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক  আব্দুল ওহাব ও তিস্তা নদী রক্ষা কমিটির শিক্ষক প্রতিনিধি প্রখভাষক রুম্মান হোসেন রোমান বলেন, আমি কোন তিস্তা নদী রক্ষা কমিটির সদস্য নই। কিন্তু আমি ৪’শ থেকে ৫’শ জন গণ আমার এলাকা থেকে নিয়ে এসেছি। তিস্তা নদীর পানির হিস্যা হলে এ এলাকায় কৃষি বিপ্লব ঘটবে। পার্শ্ববর্তী দেশের কারণে তিস্তা নদী মেগা প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে না। এ আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা অবশ্যই সফল হবো।  নাজিমখান ইউয়িনের নাজিমখান এলাকা থেকে রাহেনুল ইসলাম সরকার(৩৮) গত কাল থেকে এ এলাকায় আন্দোলনে যোগ দিয়ে অবস্থান করছেন। আন্দোলন সফল না হওয়া পর্যন্ত তিনি ঘরে ফিরে যাবেন না বলেন জানান। উমরমজিদ ইউনিয়নের কুমরগঞ্জ  এলাকা থেকে শাহকামাল সরকার মুরাদ আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন। তিনি বলেন, তিস্তা নদী বাঁচলে বাংলাদেশে উন্নয়ন ঘটবে। বাংলাদেশের উন্নয়ন হলে  তিস্তাপাড়ের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে। ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পের চিকিৎসক ও ড্যাব সভাপতি ডাঃ মাহফুজার রহমান মারুফ  এবং ডাঃ রকিবুল হাসান বাধন বলেন, গতকাল থেকে ৭’শ/৮’শ জনকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে দু’জন সাংবাদিকও ছিলেন। আন্দোলনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে রাজারহাট থানার এ এসআই আলমগীর হোসেনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ কঠোর পরিশ্রম করছে বলে  তিনি জানান। তিস্তা নদী রক্ষা কমিটির সদস্য ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাহিদুল ইসলাম  জানান, দুই দিনের কর্মসূচী সুশৃঙ্খলভাবে পালিত হচ্ছে। এখানে খাওয়া-দাওয়া, থাকা, স্যানিটেশন ও নামাজের কোন সমস্যা নেই। তিস্তা নদী রক্ষা কমিটির রাজারহাট উপজেলা সম্বনয়ক ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আনিছুর রহমান জানান, কেন্দ্রীয় থেকে বিএনপির অনেক নেতা আন্দোলনে সহমত পোষন করে যোগ দিয়েছেন। সব নেতাই তিস্তা নদীর হিস্যা ও মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করে তিস্তা পাড়ের মানুষের দুঃখ-দুর্দশা লাঘব করার জন্য দাবী জানিয়েছেন। আমাদের এ আন্দোলন সফল হয়েছে। কেন্দ্রীয়ভাবে ঘোঘনা আসলে আমাদের দুই কর্মসূচীর সমাপ্ত ঘোষনা করা হবে। কেন্দ্রের নির্দেশনায় পরবর্তী কর্মসূচীর ডাক দেয়া হবে। 

জানা গেছে, ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি তিস্তা নদী বেষ্টিত লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, রংপুর ও গাইবান্ধা জেলার ১১টি পয়েন্টে সমাবেশ, পদযাত্রা, সাংস্কৃতিক  পরিবেশনার আয়োজন করে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটি। দুইদিন ব্যাপী কর্মসূচির আজ শেষ দিন।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে