নকল প্রসাধনীতে বাজার সয়লাব; কর্তৃপক্ষ কী করছে?

এফএনএস : | প্রকাশ: ১৫ জানুয়ারী, ২০২৫, ০৭:১৫ পিএম
নকল প্রসাধনীতে বাজার সয়লাব; কর্তৃপক্ষ কী করছে?

মানুষের সৌন্দর্য সচেতনতা বাড়ার কারণে বাড়ছে প্রসাধনী সামগ্রীর ব্যবহার। ফলে ব্যাপকহারে বাড়ছে প্রসাধনী পণ্যের চাহিদা। চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ভেজাল, নকল, মানহীন, অনুমোদনহীন ও মেয়াদোত্তীর্ণ প্রসাধনী সামগ্রী। দেশে ওষুধ ও কসমেটিকস আইন প্রণয়ন হলেও নিয়ন্ত্রণহীনভাবে চলছে প্রসাধনী শিল্পের বাজার। বছরে দেশে প্রসাধনী পণ্যের প্রবৃদ্ধি ৮ থেকে ১০ শতাংশ। যার সাথে তাল মিলিয়ে গড়ে উঠেছে দেশীয় প্রসাধনী প্রতিষ্ঠান। যেখানে উৎপাদিত হচ্ছে বিশ্বমানের পণ্য। তবে আকর্ষণীয় অনলাইন বিজ্ঞাপন আর বিদেশি মোড়কে নকল পণ্যে সয়লাব প্রসাধনী বাজার, যাতে প্রতারিত হচ্ছেন ভোক্তারা। বহুতল মার্কেট, শপিংমল ও বিপণিবিতানের পাশাপাশি অনলাইনেও বিক্রি হচ্ছে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের লোগো লাগানো এসব নকল সামগ্রী। শীত সামনে রেখে সম্প্রতি বেড়েছে বিক্রি। আর এসব নকল পণ্য কিনে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ। বিশেষ করে সৌন্দর্য ও স্বাস্থ্যসচেতন তরুণী, কর্মজীবী নারী ও স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা নকল প্রসাধনী ব্যবহার করে স্বাস্থ্যসমস্যায় ভুগছেন। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ত্বক, অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছেন নানা অসুখে।  দেশে কিছু অসাধু চক্রের সমন্বয়ে নকল, ভেজাল, মানহীন কসমেটিকস পণ্য উৎপাদন হচ্ছে। রাজধানী ঢাকার চকবাজার, মৌলভীবাজার, কেরানীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, মানিকগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে নকল কসমেটিকস তৈরির কারখানা। চরম গোপনীয়তার সঙ্গে এসব কারখানায় চলে নকল পণ্য উৎপাদনের মহোৎসব। এরপর তা ছড়িয়ে দেওয়া হয় ঢাকাসহ সারা দেশে। পুরান ঢাকার চকবাজার, মৌলভীবাজারসহ বিভিন্ন মার্কেটে প্রকাশ্যেই বিক্রি হয় বিভিন্ন নামি-দামি ব্রান্ডের নকল প্রসাধনী। ভোক্তা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে প্রায়ই এসব স্থানে অভিযান পরিচালনা করে জরিমানাও করা হয়। জানা গেছে দোকানগুলোতে বিশ্বমানের ব্র্যান্ড গার্নিয়ার, লরেল, রেভলন, হেড অ্যান্ড শোল্ডার, লাক্স লোশন, মাস্ক লোশন, অ্যাকুয়া মেরিন লোশন, পেনটিন, নিভিয়া লোশন, ফেড আউট ক্রিম, ডাভ সাবান, ইমপেরিয়াল সাবান, সুগন্ধির মধ্যে হুগো, ফেরারি, পয়জন, রয়েল, হ্যাভক ও কোবরা, অলিভ অয়েল, কিওকারপিন, আমলা, আফটার সেভ লোশন, জনসন, ভ্যাসলিন হেয়ার টনিক, জিলেট ফোম, প্যানটিন প্রো-ভি ও হারবাল এসেনশিয়াল লোশনের নামে ভেজাল প্রসাধনী বিক্রি হচ্ছে বেশি। আরও দেখা গেছে, বর্তমানে বাজারে বিক্রি হচ্ছে রং ফর্সাকারী পাকিস্তানি চাঁদনী, নূর, ডিউ, গৌরী, গোল্ডেন, বোটানি, লাকী, ওয়াইসি হোয়াটিনিং ক্রিম, গোল্ড ক্রিম, হেনোলাক্স, মার্কোলাক্স স্পট কিওর ক্রিম ও অন্যান্য বিভিন্ন ধরনের ক্রিম-লোশনসহ নানারকম ভেজাল প্রসাধনী। বিষয়টি বর্তমান সরকারের গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা উচিত। একই সঙ্গে জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার স্বার্থে এই সকল পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বপ্রাপ্ত বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনেরও (বিএসটিআই) সামগ্রিক উন্নতিসাধন জরুরি।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW