দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের নামে রাজধানীর গুলশানে থাকা একটি ফ্ল্যাট জব্দ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। দলিল অনুযায়ী যার মূল্য ৫৭ লাখ টাকা।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) ঢাকার মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন। আদালত এ সিদ্ধান্ত দেন দুদকের উপপরিচালক মনিরুল ইসলামের আবেদনের প্রেক্ষিতে। ফ্ল্যাট জব্দের পাশাপাশি, সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একজন রিসিভার নিয়োগের অনুমতিও দেওয়া হয়েছে।
দুদকের আবেদনে জানানো হয়, সায়মা ওয়াজেদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তদন্ত চলছে এবং সেই প্রক্রিয়ায় গুলশানের এই ফ্ল্যাটটির অস্তিত্ব পাওয়া যায়। তদন্ত কর্মকর্তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেন, ফ্ল্যাটটি বিক্রি বা হস্তান্তরের চেষ্টা চলছে, যা মামলার কার্যক্রমে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাই অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে ফ্ল্যাটটি জব্দ করা জরুরি হয়ে পড়ে।
এই আদেশের মাধ্যমে আদালত আগের বেশ কিছু বড় পদক্ষেপের ধারাবাহিকতা বজায় রাখল। এর আগে মার্চ ও এপ্রিল মাসে শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা ব্যাংক হিসাব, সম্পত্তি এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আর্থিক লেনদেনের উপর একাধিকবার অবরোধ আরোপ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে:
• ১১ মার্চ: সজীব ওয়াজেদ জয় ও সায়মা ওয়াজেদের নামে থাকা ধানমন্ডির সুধা সদন জব্দ।
• ৪ মার্চ: সায়মা ওয়াজেদের নেতৃত্বাধীন সূচনা ফাউন্ডেশনের ১৪টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ।
• ১৮ মার্চ: শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা, সজীব ওয়াজেদ জয় ও সায়মা ওয়াজেদসহ সংশ্লিষ্টদের ৩১টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ। এতে মোট অর্থের পরিমাণ প্রায় ৩৯৪ কোটি টাকা।
• ৯ এপ্রিল: আরও ১৬ কোটি টাকা সমমূল্যের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়।
এইসব পদক্ষেপের মাধ্যমে দুর্নীতির বিরুদ্ধে দুদকের অবস্থান আরও সুসংহত হচ্ছে এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের সম্পদের উৎস ও ব্যবহার নিয়ে জনমনে যেসব প্রশ্ন তৈরি হয়েছে, তার অনুসন্ধানে একধাপ অগ্রগতি হচ্ছে।
এদিকে, পুতুলের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারিরও নির্দেশ এসেছে প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির একটি মামলায়, যা বিষয়টিকে আন্তর্জাতিক গুরুত্বও প্রদান করছে।