হজ নিবন্ধনে অনিহা; কারণ খুঁজে ব্যবস্থা নিন

এফএনএস : | প্রকাশ: ৬ জানুয়ারী, ২০২৫, ০৪:৫৬ পিএম
হজ নিবন্ধনে অনিহা; কারণ খুঁজে ব্যবস্থা নিন

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় হজ ব্যবস্থাপনায় সিন্ডিকেট করে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি করা হয়। এ সময় অযৌক্তিক বিমান ভাড়া নির্ধারণ করে হজযাত্রীদের সঙ্গে এক ধরনের প্রতারণা করা হয়। এতে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও হাবের নেতার সিন্ডিকেট কয়েকশ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। হাসিনা সরকার পতন হলেও হজ ব্যবস্থাপনায় এখনো সেই সিন্ডিকেট বিদ্যমান। সরকারি-বেসরকারিভাবে হজ নিবন্ধনের প্রাথমিক সময়সীমা শেষ হয়ে এলেও আশানুরূপ সাড়া মেলেনি। ২০২৫ সালের হজ নিবন্ধনের কার্যক্রম ৩০ নভেম্বর শেষ হবে। এখন পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারিভাবে হজের নিবন্ধন করেছেন মাত্র ২৩ হাজার ৭০৯ জন। উল্লেখ্য, সৌদি আরবের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জনের হজে যাওয়ার কথা রয়েছে। সেই হিসাবে এখনো কোটা খালি রয়েছে ১ লাখ ৩ হাজার ৪৮৯ জনের, যা শতকরা হিসাবে ৮১ শতাংশের বেশি। এ অবস্থা চলতে থাকলে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের হজের কোটা কমিয়ে দেওয়া হয় কিনা, সেটাই ভাবনার বিষয়। হজ মুসলমানদের একটি ফরজ ইবাদত হলেও সেটি এখন ব্যবসায় রূপ নিয়েছে। মুসলিম রাষ্ট্র হয়েও হজ ব্যবস্থাপনায় সরকারের কোনো সহায়তা নেই। উলটো অতিরিক্ত বিমান ভাড়া নির্ধারণ করে হজ প্যাকেজের খরচ বাড়ানো হয়। এতে একদিকে হজের খরচ বৃদ্ধি পায়, অন্যদিকে অনেক ধর্মপ্রাণ মুসলমান ইচ্ছে থাকলেও অর্থের অভাবে হজ পালন করতে পারেন না। ধর্ম মন্ত্রণালয় ও হজ এজেন্সির কতিপয় লোকের যোগসাজশে হজ পালন দিন দিন ব্যয়বহুল হয়ে যাচ্ছে। এতে মুসলমানদের হজ পালন কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। ফলে কয়েক বছর ধরে হজের কোটা পূরণ হচ্ছে না। জানা যায়, আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশগুলোয় হজের খরচ তুলনামূলক অনেক কম। প্রশ্ন উঠেছে, দেশে হজ প্যাকেজের মূল্য কেন এতটা বেশি? এক্ষেত্রে বিমানভাড়া বৃদ্ধি একটি কারণ অবশ্যই। তবে মানুষসৃষ্ট কিছু কারণও হজ প্যাকেজের মূল্যবৃদ্ধির পেছনে কাজ করছে। অভিযোগ আছে, হজকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা নানা সিন্ডিকেটের কাছে হজযাত্রীরা একরকম জিম্মি। হজ নিয়ে বাণিজ্য করার জন্য গড়ে উঠেছে হজকেন্দ্রিক মার্কেটিং অফিসার, কমিশন বাণিজ্য, এজেন্সির সিন্ডিকেট এবং হজযাত্রী পরিবহণ সিন্ডিকেট। সৌদি আরবে বাসাভাড়াকেন্দ্রিক প্রতারণা, কখনো কখনো হজযাত্রীদের জমা দেওয়া টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়াসহ নানা অবৈধ বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে হজ এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে। সব ধরনের বিমান সংস্থাকে হজের যাত্রী বহনের জন্য উন্মুক্ত করা দেওয়া হোক। এতে সিন্ডিকেট ভেঙে যাবে। এতে প্যাকেজের খরচ অনেক কমে আসবে। ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের জন্য হজকে আরও সহজ করতে সমস্যাগুলোকে চিহ্নিত করে এর দ্রুত সামধান করতে হবে।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW