রাজশাহীতে এনসিপির চলমান ও উদ্ভূত অস্থিরতা নিয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেছে দলটির রাজশাহী জেলা শাখা।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে নগরীর সিএনবি মোড়ে অবস্থিত জুলাই স্মৃতিস্তম্ভের সামনে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) রাজশাহী জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক নাহিদুল ইসলাম সাজু।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে রাজশাহী এনসিপিকে জড়িয়ে যে “নোংরামি” করা হচ্ছে, এটি আর বরদাশত করা হবে না।
বক্তারা বলেন, “জাতীয় নাগরিক কমিটি বা জাতীয় নাগরিক পার্টি রাজশাহীতে প্রতিষ্ঠিত বা পরিচিত হয়নি অন্য কারও মাধ্যমে। আমাদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসংখ্য কর্মীর শ্রম, ঘাম ও ত্যাগের মধ্য দিয়েই এ সংগঠন দাঁড়িয়েছে। দলটিকে সামনে রেখে নোংরামি বন্ধ করুন। অন্যথায় সেই কালো শক্তির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা হবে এবং রাজশাহী থেকে বিতাড়িত করা হবে।”
তারা আরও অভিযোগ করেন, এখনো বাংলাদেশে পরিশ্রমীদের যথাযথ মূল্যায়ন করা হয় না। সঠিক মূল্যায়ন হলে সংগঠনটি এখন আরও সুসংগঠিত অবস্থায় থাকত বলে মন্তব্য করেন বক্তারা।
ব্যক্তিগত ক্ষোভ ও অভিজ্ঞতার উল্লেখ লিখিত বক্তব্যে নাহিদুল ইসলাম সাজু নিজের ১১ বছরের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা, রাজপথের সংগ্রাম এবং নানা বাধাবিপত্তি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেয়েও পড়তে পারিনি। ক্রসফায়ারের আসামির মতো পরিস্থিতিও মোকাবিলা করেছি। এরপরও শুধু বয়সের কারণে আমাকে পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবুও দলের স্বার্থে সব মেনে নিয়েছি।”
তিনি প্রশ্ন তোলেন— যোগ্যতার মূল্যায়ন কি শুধু বয়সভিত্তিক হওয়া উচিত? উদাহরণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন, “যদি বয়সই যোগ্যতার মাপকাঠি হতো, তাহলে তো নাহিদ ইসলাম ভাইয়ের নেতৃত্বে বাংলাদেশ দ্বিতীয়বারের মতো স্বাধীনতা পেত না।”
তিনি দাবি করেন, রাজশাহীতে মাঠের রাজনীতি ও রাজপথের কর্মীরা অবমূল্যায়িত হচ্ছেন, বরং যারা ব্যক্তিস্বার্থে রাজনীতি করেন, তারা আজ যোগ্য বিবেচিত হচ্ছেন।
কেন্দ্রীয় কমিটির প্রতি দাবি সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহী জেলা নেতারা কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে অনুরোধ জানান— যোগ্যতার ভিত্তিতে রাজশাহী জেলা কমিটিকে পুনর্মূল্যায়ন এবং বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করার জন্য।
তারা সতর্ক করে বলেন, “ব্যক্তিস্বার্থে দলটিকে ধ্বংস করবেন না। আমরা তরুণরা রাজশাহীতে এনসিপি নিয়ে সম্ভাবনা দেখি। প্রয়োজনে আমাদের ছুটি দিন, কিন্তু কোনো কালো শক্তি, লোভ বা ক্ষমতার কারণে আমরা আমাদের আদর্শ বিসর্জন দেব না।”