রাজধানীর মোহাম্মদপুরের শাহজাহান রোডের একটি ফ্ল্যাটে মা লায়লা ফিরোজ ও তার স্কুলপড়ুয়া মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজকে হত্যার ঘটনায় কথিত গৃহকর্মী আয়েশাকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ বলছে, হত্যাকাণ্ডের পর থেকে আয়েশা পলাতক এবং তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
মামলার বিষয়টি মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে নিশ্চিত করেন মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মেজবাহ উদ্দিন। তিনি জানান, লায়লা ফিরোজের স্বামী আ জ ম আজিজুল ইসলাম বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। প্রাথমিক তদন্তে মনে করা হচ্ছে, ঘটনাটির সঙ্গে গৃহকর্মী আয়েশা জড়িত এবং ঘটনার পর তিনি ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে যান।
পুলিশ ও পরিবার জানায়, চারদিন আগে ভবনের তত্ত্বাবধায়ক ও নিরাপত্তাকর্মীদের মাধ্যমে ওই গৃহকর্মীকে খণ্ডকালীন কাজে নেওয়া হয়। আয়েশা নিজের কোনো পরিচয়পত্র বা ফোন নম্বর দিতে রাজি হননি। তিনি দাবি করেছিলেন, আগুনে তার মা-বাবা মারা গেছেন এবং তিনিও দগ্ধ হয়েছিলেন। রোববার বাসার মূল দরজার চাবি হারিয়ে যাওয়ার ঘটনাও পরিবারকে ভাবিয়ে তুলেছিল, যদিও তখন তাকে প্রশ্ন করা হয়নি। ভবনের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, সকাল ৭টা ৫১ মিনিটে বোরকা পরে আয়েশা লিফটে করে সাততলায় ওঠেন এবং সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে নাফিসার স্কুলড্রেস ও মাস্ক পরে ব্যাগ হাতে নিয়ে নিচে নেমে যান।
ঘটনার আগে নাফিসার বাবা সকাল ৭টার দিকে স্কুলের উদ্দেশে বাসা থেকে বের হন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বাড়ি ফিরে তিনি লায়লা ফিরোজের রক্তাক্ত দেহ ও মেয়ের গুরুতর জখম অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। নাফিসাকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হলেও চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ জানায়, লায়লার শরীরে প্রায় ত্রিশটি এবং নাফিসার গলায় গভীর ছুরিকাঘাতের চিহ্ন ছিল। সম্ভাব্যভাবে হাতে গ্লাভস পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা করা হয়েছে।
তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এবং আসামিকে গ্রেপ্তারে পুলিশ তৎপর রয়েছে। ঘটনাটি নিয়ে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নাটোরের বড়গাছা এলাকায় মঙ্গলবার জানাজা শেষে মা ও মেয়ের দাফন সম্পন্ন হয়।