এমসি কলেজ ধর্ষণ মামলা: দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে নিষ্পত্তির পথ পরিষ্কার

এফএনএস (সিলেট): : | প্রকাশ: ১৮ মার্চ, ২০২৫, ০৮:০৬ পিএম
এমসি কলেজ ধর্ষণ মামলা: দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে নিষ্পত্তির পথ পরিষ্কার

সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় দায়ের করা দুটি মামলার বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে চলবে। হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করলেও শেষ পর্যন্ত তা প্রত্যাহার করা হয়েছে। ফলে মামলার বিচার দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন হওয়ার পথ সুগম হলো। ২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর এই নৃশংস ঘটনা ঘটে, যেখানে ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা এক তরুণীকে ধর্ষণ করে। দীর্ঘ বিচারপ্রক্রিয়ার পর, এখন মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির আশার আলো দেখছে।

সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে ২০২০ সালের একটি নৃশংস ঘটনায় ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা সংঘবদ্ধভাবে এক তরুণীকে ধর্ষণ করে। এই ঘটনার পর ভিকটিমের স্বামী শাহপরান থানায় মামলা দায়ের করেন, যা পরবর্তীতে দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে গিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট মামলাগুলোর বিচার এখন দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে সম্পন্ন হবে। হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরের আদেশ বহাল রাখা হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষ এই নির্দেশের বিরুদ্ধে আপিল করলেও পরে সেটি প্রত্যাহার করে নেয়।

সোমবার (১৭ মার্চ) রাষ্ট্রপক্ষের আপিল প্রত্যাহারের পর আপিল বিভাগ মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পরিচালনার পক্ষে চূড়ান্ত আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল আরশাদুর রউফ উপস্থিত ছিলেন, আর ভিকটিমপক্ষের পক্ষে আইনজীবী এম আব্দুল কাইয়ুম লিটন মামলাটি পরিচালনা করেন।

আইনজীবী কাইয়ুম লিটন জানান, ভিকটিমের স্বামী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলাটি স্থানান্তরের জন্য হাইকোর্টে রিট করেন। ২০২২ সালের ১৫ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রুল জারি করে ৩০ দিনের মধ্যে বদলির গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দেন। তবে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আপিল করে বিচার প্রক্রিয়া বিলম্বিত করার চেষ্টা করেছিল। দীর্ঘ প্রায় দুই বছর পর সেই আপিল প্রত্যাহার করা হয়েছে, ফলে হাইকোর্টের আদেশ বহাল থাকল। এতে করে মামলার বিচারপ্রক্রিয়া দ্রুত এগিয়ে যাওয়ার পথ সুগম হলো এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়েছে।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে বেঁধে রেখে ওই তরুণীকে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করা হয়। মামলার তদন্ত শেষে পুলিশ একই বছরের ৩ ডিসেম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আটজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়।

২০২১ সালের ১৭ জানুয়ারি ধর্ষণ মামলায় এবং ২০২২ সালের ১১ মে চাঁদাবাজির মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। কিন্তু এতদিনেও সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়নি। বিচারপ্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতা দূর করতে ভিকটিমের স্বামী উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন এবং হাইকোর্ট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরের নির্দেশ দেন।

অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন ছাত্রলীগ নেতা সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান ওরফে রনি, তারেকুল ইসলাম ওরফে তারেক, অর্জুন লস্কর, আইনুদ্দিন ওরফে আইনুল, মিসবাউল ইসলাম ওরফে রাজন, রবিউল ইসলাম এবং মাহফুজুর রহমান ওরফে মাসুম। এদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলার পাশাপাশি চাঁদাবাজির অভিযোগেও পৃথক চার্জশিট দেওয়া হয়েছে।

এই আদেশের ফলে আশা করা হচ্ছে, মামলাটি এখন দ্রুত নিষ্পত্তি হবে এবং দোষীদের যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে