ওষুধের দাম বৃদ্ধি; বাজার নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগী হোন

এফএনএস : | প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারী, ২০২৫, ০৮:০০ পিএম
ওষুধের দাম বৃদ্ধি; বাজার নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগী হোন

দেশে জীবন রক্ষাকারী বিভিন্ন ওষুধের দাম দফায় দফায় বাড়ছে। বিশেষ করে অসংক্রামক রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধের দাম বেশি বেড়েছে। কারণ এসব ওষুধ রোগীদের নিয়মিত সেবন করতে হয়। সেই সুযোগে কোম্পানিগুলো ওইসব ওষুধের দাম বাড়াচ্ছে। গত কয়েক দিনের মধ্যে তীব্র ব্যথানাশক ট্যাবলেট, অ্যান্টিবায়োটিক, ডায়াবেটিকস, ভিটামিন, গ্যাস্ট্রিকসহ বিভিন্ন ধরনের ওষুধ ও ইনজেকশনসহ কোনো কোনো কোম্পানির ওষুধ এক পাতার দাম ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০০ টাকা করা হয়েছে। অর্থাৎ ওষুধের দাম বেড়েছে ৬৭ শতাংশ পর্যন্ত। আর নিত্যপণ্যের দামের মতো লাগামহীনভাবে দাম বাড়ার ফলে জিম্মি হয়ে পড়ছেন রোগীরা। বিশেষ করে যাদের নিয়মিত ওষুধ খেতে হয়, তাদের অবস্থা বেশি শোচনীয় হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত একেকজন রোগীর প্রতি মাসে ওষুধ খরচ দ্বিগুণ বেড়েছে। ফলে অনেক সময় কাটছাঁট করে ওষুধ কিনতে হচ্ছে। গত বছর ডেঙ্গুর ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণের সময় বেড়েছিল নাপা, ফেক্সো-ফেনাডিন, ডক্সিভা, সেকলো, অমিডন, মন্টিয়ার-মোনাস, এমকাস, রিভার্সএয়ারের মতো বহুল ব্যবহৃত ওষুধগুলোর। তবে সবচেয়ে বেশি বেড়েছিল অ্যান্টিবায়োটিক জাতীয় ওষুধের দাম। চলতি বছরের শুরু থেকে আবারও ওষুধের বাজারে তৈরি হয়েছে অস্থিরতা। এমন পরিস্থিতিতে অন্যান্য খরচ কাটছাঁট করে চিকিৎসার খরচ চালাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। সেইসঙ্গে কারও কারও প্রশ্নÑ নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক দ্রব্যের খরচ চেষ্টা করলে হয়তো কাটছাঁট করা যায়, কিন্তু ওষুধের বিকল্প কি? স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যমতে, দেশের মানুষের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার জন্য তালিকাভুক্ত ১১৭টি ওষুধের দাম বাড়ানোর ক্ষমতা সরকারের হাতে রয়েছে। আর এই ক্ষমতাবলে সেগুলোর দাম বাড়ানো হয়। ফলে কিছু কিছু ওষুধের দাম যৌক্তিকভাবে বেড়েছে। কিন্তু এর সুবিধা নিচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগীরা। মাঠ পর্যায়ে অনেক অসাধু ওষুধ বিক্রেতা অধিক মুনাফার লোভে নির্ধারিত ওষুধের বদলে অন্যান্য ওষুধেরও দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এতে করে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকেই। ওষুধ কিংবা অন্য কোনো পণ্য হোক, দাম বাড়াতে ব্যবসায়ীদের কখনোই যেন যুক্তির অভাব হয় না। তারা ওষুধের দাম বৃদ্ধির জন্য গত বছরের মতো এ বছরও ডলারের দাম বৃদ্ধিকেই দায়ী করছেন। এমনকি অনেক বিক্রেতার দাবি, ওষুধ বিক্রি করে লভ্যাংশের সামান্যই তারা পান, বেশিরভাগ পায় কোম্পানিগুলো। ওষুধের দাম ক্রমেই বাড়তে থাকলে সাধারণ রোগী ও স্বল্প আয়ের মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছতে পারে। তাই সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ওষুধ ও চিকিৎসাসামগ্রীর মূল্য যেন অযৌক্তিকভাবে না বাড়ে এ বিষয়ে যথাযথ ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কল্যাণ নিশ্চিত করা আবশ্যক।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW