গ্যাস বিল আদায় বাধ্য করতে সরকারি কোয়ার্টারে প্রিপেইড মিটার বসাতে যাচ্ছে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড। সরকারি কোয়ার্টারের বাসিন্দারা অথবা সরকারি দফতরগুলো তিতাসের গ্যাস বিল পরিশোধ করে না। বেসরকারি গৃহস্থালিতে নিয়মিত গ্যাস বিল পরিশোধ না করলে লাইন বিচ্ছিন্ন করা হলেও সরকারি কোয়ার্টারগুলোতে তিতাস চাইলেও নানামুখী চাপে বিল আদায়ে তেমন পদক্ষেপ নিতে পারে না। জ্বালানি বিভাগ সরকারি ওসব জায়গায় অভিযান চালানোর নির্দেশ দিলেও তিতাস তা করতে ব্যর্থ হয়েছে। অভিযান বা অন্য কোনো পদক্ষেপ গ্রহণের চেষ্টা ওপর থেকে থামিয়ে দেয়া হয়। এমন পরিস্থিতিতে প্রিপেইড মিটারের মাধ্যমে গ্রাহকদের কাছ থেকে অগ্রিম বিল আদায় করতে প্রিপেইড মিটার বসাতে যাচ্ছে। তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বর্তমানে তিতাসের প্রি-পেইড মিটার স্থাপনে তিনটি প্রকল্প চালু আছে। এরমধ্যে সরকারি কোয়ার্টারে প্রি-পেইড মিটার স্থাপন করা হয়েছে। এর ফলে সরকারি কোয়ার্টারে বিল বকেয়া পড়বে না। আদায়েরও ঝক্কি থাকবে না। তখন গ্যাস সাশ্রয়ে গ্রাহকরাও সচেতন হবেন। ইতোমধ্যে রাজধানীতে তিন লাখের ওপরে প্রিপেইড মিটার স্থাপন হয়েছে। ওসব গ্রাহকরা গ্যাস ব্যবহারের আগেই বিল পরিশোধ করে। গ্রাহক চাইলেও বিল পরিশোধ না করে গ্যাস ব্যবহার করতে পারে না। প্রিপেইড মিটারে গ্যাস বিল আদায়ের হার শতভাগ।
সূত্র জানায়, প্রিপেইড মিটার ব্যবহারকারীকে সব বকেয়া পরিশোধ করতে হয়। কিন্তু সরকারি কোয়ার্টারে প্রিপেইড মিটার স্থাপনের ক্ষেত্রে বকেয়া থাকলেও গ্রাহককে প্রিপেইড মিটারের আওতায় আনতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে প্রিপেইড মিটার কমিশনিং করে দিতে বলা হয়েছে। যাতে মিটার পাওয়ার পর থেকেই গ্রাহক বিল পরিশোধ করে মিটার ব্যবহার করতে পারেন। সরকারি কোয়ার্টারগুলোতে কোনো কোনো ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দফতর বিল পরিশোধ করে, আবার অনেক ক্ষেত্রে যে কর্মকর্তা কিম্বা কর্মচারী থাকেন তাদেরও বিল দেয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু কোনো কোনো দফতর দীর্ঘদিন ধরে দেন-দরবার করার পরও বিল পরিশোধ করেনি। ফলে বিপুল পরিমাণ বিল বকেয়া রয়েছে। কোনোভাবেই বিল কোনোভাবেই আদায় করা সম্ভব না হওয়ায় বিকল্প হিসেবে বসানো হচ্ছে প্রিপেইড মিটার।।
সূত্র জানায়, বর্তমানে প্রতিদিন যে গ্যাস ব্যবহার হয় তার এক-তৃতীয়াংশ গ্যাস চড়ামূল্যে আমদানি করা হয়। আমদানি করা গ্যাসের বিল নিয়মিত পরিশোধ করতে হয়। সেক্ষেত্রে বিল বকেয়া থাকায় পেট্রোবাংলার ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে। এজন্য সরকারি-বেসরকারি সকল প্রতিষ্ঠানের গ্যাস বিল আদায় জোরদার করা হচ্ছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে গ্যাস বিল আদায় করার ক্ষেত্রে নানা অভিযান পরিচালনা হলেও সরকারি প্রতিষ্ঠানের বেলায় তা করা সম্ভব হচ্ছে না।
এ প্রসঙ্গে তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহনেওয়াজ পারভেজ জানান, তিতাসের প্রিপেইড মিটারের তিন প্রকল্পের মধ্যে জাইকার অর্থায়নের প্রকল্পটি শেষ হয়েছে। আরো দুটি প্রকল্প জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে। ওসব প্রকল্পের একটা অংশে সরকারি কোয়ার্টারে মিটার স্থাপন করা হবে। ৫ বছর মেয়াদি ওই দুই প্রকল্পে অর্থায়ন করবে এডিবি ও বিশ্বব্যাংক। দুই প্রকল্পে সব মিলিয়ে প্রায় ১৮ হাজার প্রিপেইড মিটার স্থাপন করা হবে।