বাসায় ফিরে যদি মনে হয়- ঢাকা শহরের জ্যাম ঘরে ঢুকে গেছে, তাহলে আর স্বস্তি কই থাকলো! বেশিরভাগ সময় ঘর অগোছালো জঞ্জালময় লাগার নানান কারণ থাকতে পারে। তবে কিছু অজানা কারণেও বাসাবাড়ি ঘিঞ্জি মনে হতে পারে।
প্রবেশ মুখটাই জঞ্জালময়
বাসায় আসলে প্রথমই চোখে পড়ে ঘরে ঢোকার জায়গাটা। সেখানে এলোমেলো থাকলে ঘরে অগোছালো-ভাব মনে হয়। এই বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ‘অপারেশন অর্গানাইজেশন’ য়ের প্রতিষ্ঠাতা ক্যাটরিনা টিপলি বলেন, ‘‘অনেক জুতা ঘরে ঢোকা মুখে পড়ে থাকলে, সেটাই আগে নজরে আসবে। ঘরের সৌন্দর্য নয়। সেটা আপনি বা আপনার অতিথি যেই হোক!’’ রিয়েলসিম্পল ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তিনি পরামর্শ দেন, ‘‘এই কারণে ঘরে প্র্রবেশের জায়গাটা হালকা-পাতলার রাখতে সপ্তাহে দুদিন অন্তত পরিষ্কারের উদ্যোগ নিতে হবে।’’ যেসব জুতা বেশি পরা হয় না সেগু্লাে ঘরে অন্যা কোথাও রাখা যেতে পারে। বাতিল জুতা ফেলে দিতে হবে। এমনকি বেশি জিনিস দিয়ে সাজানো থাকলে সেগুলো-ও হালকা করতে হবে। মোট কথা ঘরে প্রবেশের জায়গাটা হতে ফাঁকা ও পরিষ্কার।
হতে পারে বড় জিনিস পছন্দ
অনেকেই ঘরের আসবাবপত্র বাছইয়ের ক্ষেত্রে বড় জিনিস বেছে নেন। তবে ঘর জঞ্জাল মুক্ত রাখতে বাসার সাথে মানানসই আসবাব কেনা উচিত। এই বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ক্লিন মামা’র প্রবর্তক বেকি রাপিনচাক বলেন, ‘‘অনেকের বাসার দেয়াল ছোট তবে হয়ত ঝুলিয়ে রেখেছে বিশাল শিল্পকর্ম। কিংবা বিছানা বিশাল বালিশ। জায়গা দখল করে এমন জিনিস আসলে রাখা উচিত না।’’
ফ্রিজটা হতে পারে জঞ্জাল পূর্ণ
ঘর জঞ্জাল লাগার অন্যতম কারণ লাগতে পারে ফ্রিজ। তবে ভেতরের অংশের জন্য নয়, বাইরের দিকের জন্যই এরকম হতে পারে। টিপলি বলেন, ‘‘হতে ফ্রিজে চৌম্বক লাগানো ‘শো পিস’ যেগুলো আছে সেগুলো কমাতে হবে।’’ এছাড়া অনেকেই ফ্রিজের দরজায় নানান রকম নোট লিখে রাখেন। সেসবের পরিমারণ বেশি হলেও ঘর দেখতে অগোছালো লাগতে পারে।
অনেক বেশি জিনিস রাখা
টেবিল, শোকেইস, আলমারির ওপর- এসব জায়গায় বেশি জিনিসপত্র, সাজানোর জিনিস থাকলে ঘর জঞ্জালময় লাগে। ঘর গোছালো দেখাতে সাজানোর জিনিস বা অন্যান্য কিছু পরিমাণ কমাতে হবে।
বসায় জায়গার অভাব
বসার ব্যবস্থা কম থাকলে হয়ত ঘর দেখতে জঞ্জালময় কম লাগে। তবে এত কম রাখাও আবার ঠিক না যে, অতিথি কয়েকজন বেশি আসলেই বসার জায়গা না পায়।
মার্কিন পেশাদার পরিষ্কারক ও ‘ক্যানোনবল ক্লিনার’য়ের প্রতিষ্ঠাতা কেইন ব্যালেনটাইন বলেন, ‘‘অতিথিরা এদিকে সেদিক দাঁড়িয়ে থাকলেও ঘর দেখতে অগোছালো লাগে। হয়ত আপনার একার বা পরিবারের হিসেবে বাসর জায়গা ঠিকই আছে। তবে অতিথিদেরও বসার জায়গা ব্যবস্থা থাকতে হবে।’’
স্তুপ করে রাখা
জিনিস বা ধোয়া কাপড় পরে গোছাবো বলে স্তুপ করে রাখার অভ্যাস থাকলেও ঘর দেখতে অগোছালো লাগে। তাই স্তুপ করার কৌশলটা প্রাথমিকভাবে রাখা যেতে পারে। তবে সময় নিয়ে কাপড় কিংবা কাগজের স্তুপ পরিষ্কার করতে হবে।
যথেষ্ট জায়গা না থাকা
সবচেয়ে ভালোভাবে জঞ্জাল পরিষ্কার করার পরও ঘর অগোছালো লাগার কারণ লাগতে পারে, যথেষ্ট জায়গা না থাকা। হতে পারে সেটা আলমারিতে জায়গা কম বা বাসনপত্র রাখার যথেষ্ট জায়গা ফাঁকা নেই। যেকারণে সেগুলো হয়ত পড়ে থাকে টেবিলে কিংবা ঘরের অন্য কোনো জায়গায়। এই সমস্যা কাটাতে জায়গা কীভাবে ভালো মতো কাজে লাগানো যায় সে বিষয়ে অন্দরসজ্জাকরের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে। টিপলি বলেন, ‘‘মালপত্র বা জিনিস রাখার আসবাব এমন হওয়া উচিত যাতে ঘরের রুচির সাথে মিলে যায়। অনেক আসবাব আছে যেগুলো ভাঁজ করে রাখা যায়। প্রয়োজন মতো ছোট বড় করা যায়। ছোট জায়গায় এমন আসবাব রাখা যেতে পারে।’’ এছাড়া শিশুদের খেলার জিনিস ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকলে সেগুলো একটি নির্দিষ্ট জায়গায় রাখার ব্যবস্থা করলে ঘর জঞ্জালমুক্ত অনুভূত হবে।