চীনের প্রত্যন্ত তিব্বত অঞ্চলে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৫ জনে। ভূমিকম্পে আহত হয়েছেন আরও ১৩০ জন। মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ৫ মিনিটে নেপালের সীমান্তবর্তী তিব্বতের ডিংরি কাউন্টিতে এ ভূমিকম্প আঘাত হানে। চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম সিনহুয়া ও সিসিটিভি এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
চীনের ভূমিকম্প নেটওয়ার্ক সেন্টার (সিইএনসি) জানায়, ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৬.৮। তবে মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, এটি ছিল ৭.১ মাত্রার। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল ডিংরি কাউন্টির সোগো শহরে, ভূপৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীরে।
ভূমিকম্পের ফলে ডিংরি কাউন্টি এবং এর আশপাশের এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। উৎপত্তিস্থল থেকে ২০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে তিনটি শহর ও ২৭টি গ্রামে বহু ঘরবাড়ি এবং স্থাপনা ধসে পড়েছে। চীনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর শিগেইসসহ বিভিন্ন শহরে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের ছবি প্রকাশিত হয়েছে।
শিগেইস বিভাগের চাংসুও শহরের টংলাই এলাকায় সবচেয়ে বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় প্রশাসনের মতে, কয়েক ডজন পরাঘাত (আফটার শক) অনুভূত হয়েছে, যার মধ্যে সর্বোচ্চ মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৪.৪।
ভূমিকম্পটি শুধু তিব্বতে সীমাবদ্ধ ছিল না। নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু, ভারতের বিহার রাজ্য, ভুটানের থিম্পু এবং বাংলাদেশের কিছু এলাকায় ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে। নেপালে বাসিন্দারা আতঙ্কে ঘর ছেড়ে বাইরে ছুটে যান।
সিনহুয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্ষয়ক্ষতির হিসাব করতে স্থানীয় প্রশাসনের দলগুলো ডিংরি এবং পার্শ্ববর্তী শহরে পৌঁছেছে। উদ্ধারকাজ পরিচালনা করছে বিভিন্ন সংস্থা। ভূমিকম্পের পর অঞ্চলের পরিস্থিতি মোকাবিলায় জরুরি ত্রাণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
তিব্বত অঞ্চলের ভূমিকম্পের ইতিহাস দীর্ঘ। ভারতীয় ও ইউরেশীয় টেকটোনিক প্লেটের সংঘর্ষের ফলে চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল, নেপাল, ভুটান এবং ভারতের উত্তরাঞ্চলে প্রায়ই ভূমিকম্প হয়।
এই ভূমিকম্প চীনের তিব্বত অঞ্চলের নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতাগুলো তুলে ধরেছে। স্থানীয় প্রশাসন আরও কার্যকর সতর্কতামূলক ব্যবস্থা এবং উদ্ধার পরিকল্পনার জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছে।