২১ আগস্ট ২০০৪ সালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে সংঘটিত ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার মামলায় তারেক রহমানসহ সব আসামির খালাসের বিরুদ্ধে আপিল করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।
বুধবার (১৯ মার্চ) সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় রাষ্ট্রপক্ষ আপিল আবেদন জমা দেয়। অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, শিগগিরই আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে এই আপিলের শুনানি হতে পারে।
গত ১ ডিসেম্বর হাইকোর্টের বিচারপতি একেএম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চের রায়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ সব আসামিকে খালাস দেওয়া হয়। এর আগে ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এই মামলার রায়ে ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড, ১৯ জনকে যাবজ্জীবন এবং ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়, যেখানে ২৪ জন নিহত হন এবং প্রায় ৩০০ জন আহত হন। হামলার পর মতিঝিল থানায় হত্যা ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে দুটি মামলা দায়ের করা হয়।
২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় মামলাগুলোর নতুন করে তদন্ত শুরু হয় এবং ২০০৮ সালে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ২২ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেয়। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ সরকার আমলে মামলার অধিকতর তদন্ত শেষে তারেক রহমানসহ ৩০ জনকে আসামি করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
বিচারিক আদালত তার রায়ে বলেছিলেন, এই হামলার উদ্দেশ্য ছিল আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করা। মামলার দ্বিতীয় অভিযোগপত্রের ভিত্তিতে বিচারিক আদালতে রায় ঘোষণা করা হয়। তবে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা দাবি করেন, অধিকতর তদন্তে তারেক রহমানসহ অনেককে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে জড়ানো হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের মাধ্যমে রাষ্ট্রপক্ষ এই মামলার উচ্চতর বিচার নিশ্চিত করতে চায়। আপিলের শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা দাবি করেন, বিচারিক আদালতের দেওয়া দণ্ডের ন্যায়সঙ্গততা রয়েছে এবং হাইকোর্টের রায় পুনর্বিবেচনা করা উচিত।
আদালত এখন আপিল গ্রহণ করবে কি না এবং পরবর্তী শুনানির দিন কবে ধার্য হবে, সে বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছে দেশবাসী।