দুদকে অভিযোগ অনুসন্ধানে স্থবিরতা বিরাজ করছে

এফএনএস এক্সক্লুসিভ : | প্রকাশ: ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, ০৫:০৪ এএম : | আপডেট: ৪ জানুয়ারী, ২০২৫, ১২:৩৯ পিএম
দুদকে অভিযোগ অনুসন্ধানে স্থবিরতা বিরাজ করছে

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অভিযোগ অনুসন্ধানে স্থবিরতা বিরাজ করছে। মূলত কমিশন না থাকায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। কারণ দুদকের অভিযোগ অনুসন্ধান, তদন্ত, মামলা রুজু কিংবা চার্জশিট দেয়ার সিদ্ধান্তের একমাত্র ক্ষমতার অধিকারী কমিশন। কিন্তু কমিশন না থাকায় দুদক এক প্রকার অচল হয়ে পড়েছে। সংস্থাটিতে গড়ে প্রতিদিন প্রায় ৬০ থেকে ৮০টি অভিযোগ জমা পড়ে। আর কমিশন থেকে ওসব অভিযোগ যাচাই-বাছাইয়ের পর অনুসন্ধানের অনুমোদন নিতে হয়।

এরই মধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ হাজারের বেশি প্রভাবশালী ও দুর্নীতিবাজের বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়েছে। দুদক সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দুদক বিগত ২০০৭ সালে একবার দীর্ঘদিন কমিশনহীন ছিল। ফলে একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত দুদক অচল হয়ে থাকে। বর্তমানেও এমন অবস্থা বিরাজ করছে। দুদক কর্মকর্তারা এবার সংস্কার কমিশনের কাছে এর একটি সুরাহা চেয়েছেন। কারণ গত ২৯ অক্টোবর পুরো কমিশন পদত্যাগ করায় নতুন করে আর কোনো অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু হয়নি।

অথচ অনুসন্ধান শেষে সংশ্লিষ্ট অভিযোগের তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে মামলা দায়ের করে দুদক। আর কমিশন থেকে মামলা দায়েরের অনুমোদন নিতে হয়। এরপর মামলার তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা আদালতে চার্জশিট জমা দেন। আবার চার্জশিট দাখিলের আগেও কমিশন থেকে অনুমোদন নিতে হয়। অনুসন্ধান ও তদন্ত চলাকালীন অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের খোঁজ পেলে এবং সেসব সম্পদ হাতবদল হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে সেগুলো ক্রোক বা ফ্রিজ করে দুদক। এমনকি অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির পালিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকলে তার বিদেশে যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়।

সূত্র জানায়, আইন অনুযায়ী দুদক থেকে প্রথমে প্রশাসনিক আদেশ দিয়ে ইমিগ্রেশন ব্লক করে আদালতের মাধ্যমে আদেশ করা হয়। কিন্তু কমিশন থেকে এসব কিছুর অনুমোদন নিতে হয়। এমনকি কমিশন থেকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের সংক্রান্ত অনুমোদনও দেয়া হয়। এছাড়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বৈদেশিক প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণের অনুমোদন করে কমিশন। গত ২৯ অক্টোবর থেকে কমিশন না থাকায় দুদকের অতি গুরুত্বপূর্ণ এসব কাজ বন্ধ হয়ে আছে।

এমনকি চলতি অর্থবছরে (২০২৪-২৫) দুর্নীতি দমন কমিশনের অধীনে প্রাপ্ত বাজেট বরাদ্দ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ক্রয়ের অনুমোদন এবং আগামী ৯ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস-২০২৪ উদযাপনসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দিবসের কার্যক্রমবিষয়ক সব সিদ্ধান্ত আটকে আছে। এদিকে এসব বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, কমিশনের হাতে দুদকের সব ক্ষমতা। যে কারণে কমিশন ছাড়া কোনো সিদ্ধান্তই নেওয়া যায় না। এ ক্ষেত্রে দুদকের মহাপরিচালকদের হাতে কিছু সুনির্দিষ্ট বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা দেয়া প্রয়োজন। যাতে কমিশনে কোনো ধরনের শূন্যতা তৈরি হলে মহাপরিচালকরা সংস্থাটিকে চালিয়ে নিতে পারেন।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে