আর্থিক সংকট কাটিয়ে উঠেলেও

পাঁচ মাসের অগ্রগতিতে সন্তুষ্ট নয় বাংলাদেশ ব্যাংক

এফএনএস : | প্রকাশ: ৭ জানুয়ারী, ২০২৫, ০৪:২৪ পিএম : | আপডেট: ২০ জানুয়ারী, ২০২৫, ০৭:১২ পিএম
পাঁচ মাসের অগ্রগতিতে সন্তুষ্ট নয় বাংলাদেশ ব্যাংক

গত পাঁচ মাসে আর্থিক স্থিতিশীলতা আনতে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের সুফল কিছুটা পেলেও পুরোপুরি সন্তুষ্ট নয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে ইতোমধ্যে দেশের আর্থিক ভীতি কেটে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা।  

মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, "গত পাঁচ মাসে বাণিজ্যিক ব্যাংকের বোর্ড পুনর্গঠন, ব্যাংকিং টাস্কফোর্স গঠন, ডলার বাজার স্থিতিশীল করা এবং মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে একাধিক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা গেলেও আর্থিক খাতে পুরোপুরি স্থিতিশীলতা এখনো ফিরে আসেনি।" 

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংক নীতিসুদহার বাড়ানোর পদক্ষেপ নিয়েছে। হুসনে আরা শিখা জানান, জানুয়ারি মাসে মূল্যস্ফীতি কমার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে প্রয়োজন হলে নীতিসুদহার আরও বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।

তিনি বলেন, "ব্যবসায়ীরা উচ্চ সুদহারের কারণে ঋণ নিতে আগ্রহী নন। এতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ধীরগতি দেখা দিয়েছে। তবে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য শুধুমাত্র বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রচেষ্টা যথেষ্ট নয়। অবকাঠামোগত উন্নয়ন, জ্বালানি সরবরাহ এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।"  

এদিকে, বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি তলানিতে নেমেছে। ২০২৪ সালের নভেম্বরে ঋণ প্রবৃদ্ধি ছিল ৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ, যা গত সাড়ে তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। বাংলাদেশ ব্যাংকের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৮ শতাংশ।  এর কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়, দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা, বেনামি ও জালিয়াতি ঋণ বিতরণে হ্রাস এবং দুর্বল হিসেবে চিহ্নিত ১১টি ব্যাংকের নতুন ঋণ বন্ধ থাকা। এ ছাড়া এসব ব্যাংক আমানতকারীদের চাহিদা মেটাতেই হিমশিম খাচ্ছে।   বেসরকারি ঋণের চাহিদা কমে যাওয়ায় অনেক ব্যাংক সরকারি ট্রেজারি বিল ও বন্ডে বিনিয়োগ বাড়িয়েছে। এতে ঋণের তুলনায় বেশি মুনাফা অর্জিত হচ্ছে। বিল ও বন্ডে বিনিয়োগে ঝুঁকি কম থাকায় কিছু ব্যাংকের পরিচালন মুনাফায় গত বছর বড় প্রবৃদ্ধি হয়েছে।  

অর্থপাচারের বিষয়ে হুসনে আরা শিখা বলেন, "২০২৫ সালের শেষ নাগাদ কোন ব্যাংকের মাধ্যমে কী পরিমাণ টাকা কোন দেশে পাচার হয়েছে, সে বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে। পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনা একটি সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া। নির্ধারিত সংস্থাগুলো বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে তারা এসব তথ্য প্রকাশ করছে না।"  

বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আর্থিক খাতে স্থিতিশীলতা আনতে এখনো অনেক কাজ বাকি। তবে আর্থিক ভীতি কাটিয়ে ওঠা ইতিবাচক দিক। সব সংস্থার সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল অর্জন সম্ভব নয়।  

২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথমার্ধে কেন্দ্রীয় ব্যাংক যে ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল, তা অর্জনে সামগ্রিক অর্থনৈতিক নীতিমালায় আরও কার্যকর পদক্ষেপ প্রয়োজন বলে মনে করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে