বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেনটি বুড়িমারী থেকে যাত্রার দাবিতে রেল ও মহাসড়ক অবরোধ

এফএনএস (জিন্নাতুল ইসলাম জিন্না; লালমনিরহাট) : : | প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল, ২০২৫, ০৬:১৫ পিএম
বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেনটি বুড়িমারী থেকে যাত্রার দাবিতে রেল ও মহাসড়ক অবরোধ

বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেনটি বুড়িমারী থেকে যাত্রার দাবিতে লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কে অনির্দিষ্টকালের জন্য অবরোধ করে রেখেছে বুড়িমারী টু ঢাকা আন্তঃনগর ট্রেন বাস্তবায়ন আন্দোলন পরিষদ। একই সাথে লালমনি এক্সপ্রেস ট্রেনটিও বুড়িমারী থেকে চালুর দাবি জানান তারা। সোমবার(২৮ এপ্রিল) সকাল থেকে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কে গতকালকের মতো আজকেও অবরোধ করে রাখে স্থানীয়রা। এতে উভয় পাশে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার পথ জুড়ে কয়েক হাজার বাস, ট্রাক ও অন্যান্য যানবাহন আটকা চড়ে বিশাল যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

আন্দোলনকারীরা জানান, দেশের মানচিত্রে একমাত্র দীর্ঘ লম্বা এবং সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাট। একশত কিলোমিটার রেলপথ ও  সড়কের একই পথে রয়েছে জেলার ৫টি উপজেলা। যার এক প্রান্তে সদর তথা জেলা শহর লালমনিরহাট আর অপর প্রান্তে রয়েছে সর্বশেষের উপজেলা পাটগ্রাম। শেষ প্রান্তের উপজেলায় রয়েছে ত্রি দেশিয় আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কেন্দ্র বুড়িমারী স্থলবন্দর। এছাড়াও বাংলাদেশ রেলওয়ের ৪টি বিভাগীয় সদর দপ্তরের মধ্যে লালমনিরহাট একটি বিভাগ। রেলওয়ের বিভাগীয় শহর লালমনিরহাট জেলার যাত্রীদের জন্য দুইটি আন্তঃনগর ট্রেন রয়েছে। একটি লালমনি এক্সপ্রেস। যা লালমনিরহাট শহর স্টেশন থেকে ঢককার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। অপরটি বুড়িমারী এক্সপ্রেস। যা বুড়িমারী থেকে যাত্রা শুরু করার কথা থাকলেও উদ্বোধনী দিনের পর থেকে আর ট্রেনটির দেখা পায়নি জেলার ৪টি উপজেলার মানুষ। 

লালমনিরহাট রেলস্টেশন থেকে বুড়িমারী স্টেশনের দুরুত্ব প্রায় একশত কিলোমিটার। ফলে এই দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে জেলা সদরে এসে এসব আন্তঃনগর ট্রেন পেতে হয় জেলার ৪টি উপজেলার মানুষদের। এ কারনে আন্তঃনগর এই ট্রেন দুইটির সেবা তেকে বঞ্চিত রয়েছে ৪টি উপজেলা ও বুড়িমারী স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী এবং পাসপোর্ট ধারী যাত্রীরা। 

এ কারনে জেলাবাসীর জন্য দেয়া আন্তঃনগর ট্রেন লালমনি ও বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেন দুইটি বুড়িমারী থেকে যাত্রার দাবি করে আসছে জেলার ৪টি উপজেলার মানুষ। যার জন্য রেলপথ অবরোধ কর্মসুচি পালন করছে স্থানীয়রা।  এ ছাড়াও দীর্ঘ আন্দোলনে নানান কর্মসুচি পালন করেছেন তারা। আন্দোলনের একটি পর্যায়ে বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেনটি বুড়িমারী থেকে যাত্রা শুরু করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে টিকিট বিক্রি শুরু করে রেল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তা যাত্রার আগেই স্থগিত করা হয়। ফলে ক্ষুব্ধ মানুষ আরও ফুসে উঠে রেলপথ ও মহাসড়ক অরোধ কর্মসুচি পালন করছে। 

এ দাবিতে লালমনিরহাট বুড়িমারী রেলপথ অবরোধ করে রেখেছে স্থানীয়রা। ফলে বাধ্য হয়ে এ রুটের সকল ট্রেন কয়েকদিন থেকে চলাচল বন্ধ রেখেছে রেলওয়ে বর্তৃপক্ষ। কর্মসুচির অংশ হিসেবে শনিবার হাতীবান্ধা রেলস্টেশন থেকে মশাল মিছিল করা হয়। রোববার সকাল থেকে শুরু হওয়া অনির্দিষ্টকালের রেলপথের পাশাপাশি লালমনিরহাট বুড়িমারী মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে এলাকাবাসী। হাতীবান্ধা মেডিকেল মোড়ে মহাসড়কের পাশে মঞ্চ করে মহাসড়কে বসে পড়ে আন্দোলনকারীরা। এতে এ মহাসড়কের হাতীবান্ধার দুই প্রান্তে প্রায় চার কিলোমিটার পথে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। বাধ্য হয়ে যানবাহনের যাত্রীরা গাড়ি থেকে নেমে ছোট ছোট যানবাহনে যাতায়াত করেছে। বিপাকে পড়েছে বুড়িমারী স্থলবন্দের পন্যবাহি ট্রাক গুলো। 

অবরোধ কর্মসুচির নেতৃত্বে রয়েছেন বুড়িমারী টু ঢাকা আন্তঃনগর ট্রেন বাস্তবায়ন আন্দোলন পরিষদের সমন্বয়ক এম সাহিদুজ্জামান কোয়েল, ফিরোজ হোসেন, নিশাত ফারুক, সামসুল আলম খান বুলেট, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা মহসিন আলম, রানা, তাওহীদ প্রমুখ।

0 LIKE
0 LOVE
0 LOL
0 SAD
0 ANGRY
0 WOW
আপনার জেলার সংবাদ পড়তে