২০২৪ সালের ১৬ জুলাই রংপুরের রাজপথে সেদিন চলছিল ভয়াবহ উত্তেজনা। একদিকে বিক্ষোভকারীদের গগনবিদারী স্লোগান, অন্যদিকে পুলিশের মুহূর্মুহূ গুলির শব্দে কেঁপে উঠছিল চারপাশ। এমন পরিস্থিতিতে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় হঠাৎ এক মুহূর্তে গুলিতে লুটিয়ে পড়লেন শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। সেই নির্মম দৃশ্য ভিডিও ধারণ ও সরাসরি সমপ্রচারণ করেছিলেন যমুনা টেলিভিশনের রংপুর ব্যুরো চীফ ও সিনিয়র রিপোর্টার সরকার মাজহারুল মান্নান এবং ভিডিও জার্নালিস্ট আলমগীর হোসেন পাইলট। উত্তরের এই দুই সাহসি সাংবাদিক সেদিন বীরত্বের পরিচয় দিয়েছিলেন। যা ইতিহাস হয়ে থাকবে। বুধবার রাজধানীতে যমুনা টেলিভিশনের প্রধান কার্যালয়ে তাদের দেয়া হয় বিরল সম্মাননা। এতে যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান সালমা ইসলামসহ এমডি ও পরিচালকবৃন্দ, যমুনা টেলিভিশনের উর্ধ্বতনরা উপস্থিত ছিলেন। জানাগেছে, এই দুই সাহসি সাংবাদিক তীব্র ঝুঁকির মধ্যেও তারা পিছু হটেননি। পুলিশের গুলির মুখে দাঁড়িয়ে আলমগীর হোসেন পাইলট ক্যামেরায় ভিডিও করেন সেই ভয়াবহ মুহূর্ত। শুধু ভিডিও ধারণই নয়, ভিডিওতে শোনা যাওয়া হৃদয়বিদারক শব্দ “গুলি খাইছে, গুলি খাইছে”রে সেটিও তারই কণ্ঠ। সেটি সরাসরি সমপ্রচারে যুক্ত ছিলেন যমুনা টেলিভিশনের রংপুর ব্যুরো চীফ ও সিনিয়র রিপোর্টার সরকার মাজহারুল মান্নান। তাদের সাহসিকতা ও পেশাদারিত্ব সেই মুহূর্তকে ইতিহাসের অংশ বানিয়েছে। এই ভিডিও প্রকাশের পর দেশজুড়ে নেমে আসে তীব্র প্রতিক্রিয়া। আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে, রূপ নেয় গণঅভ্যুত্থানে। সত্যের প্রতি দায়বদ্ধতা রেখে জীবন বাজি রেখে কাজ করা রংপুরের এই দুই সাংবাদিক আজ গণমাধ্যমের জন্য অনন্য উদাহরণ। সাংবাদিকতা শুধু খবর সংগ্রহের কাজ নয়, কখনো কখনো তা হয়ে ওঠে সময়ের সাক্ষী। রংপুরের সাংবাদিকতার উজ্জল নর্ক্ষত্র, সফল সংগঠক সরকার মাজহারুল মান্নান ও আলমগীর হোসেন পাইরট সেই সাক্ষী হয়ে থাকবেন, তাদের নাম ইতিহাসের পাতায় চিরদিন অমলিন থাকবে। জানাগেছে, সরকার মাজহারুল মান্নান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশুনা শেষ করে সাংবাদিকতার সাথে যুক্ত হন। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের সভাপতি-সম্পাদকসহ বিভিন্ন পদে দায়িত্বরত ছিলেন। বর্তমানে তিনি রংপুর সাংবাদিক ইউনিয়ন-আরপিইউজে এবং রংপুর রিপোর্টার্স ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও দৈনিক নয়া দিগন্ত পত্রিকার রংপুর ব্যুরো ইনচার্জ ও সিনিয়র রিপোর্টার হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তিনি রংপুর বিভাগের পেশাদার সাংবাদিক হিসেবে অনেকের আইডলে পরিনত হয়েছেন। তার এই সাফল্যে বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক নেতৃবৃন্দ অভিনন্দন এবং শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। অন্যদিকে আলমগীর হোসেন পাইলট দীর্ঘদিন ধরে যমুনা টিভির রংপুর অফিসের ভিডিও জার্নালিস্ট হিসেবে কর্মরত রয়েছে।