মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ২৯শে বৈশাখ ১৪৩২
মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ২৯শে বৈশাখ ১৪৩২
মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫, ২৯শে বৈশাখ ১৪৩২
কক্সবাজার হয়ে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ‘মানবিক করিডোর’ স্থাপন নিয়ে জাতিসংঘ বা অন্য কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো আলোচনা হয়নি বলে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া নানা জল্পনা-কল্পনার প্রেক্ষাপটে এক বিবৃতিতে তিনি জানান, “সরকার তথাকথিত 'মানবিক করিডোর' বিষয়ে জাতিসংঘ বা অন্য কোনো সংস্থার সঙ্গে কোনো আলোচনায় যায়নি।”
তবে শফিকুল আলম বলেন, যদি জাতিসংঘের নেতৃত্বে রাখাইন রাজ্যে মানবিক সহায়তা প্রদানের কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়, তাহলে বাংলাদেশ লজিস্টিক বা যৌক্তিক সহায়তা দিতে নীতিগতভাবে প্রস্তুত রয়েছে। “রাখাইনে সহায়তা পৌঁছানোর বাস্তবসম্মত ও কার্যকর একমাত্র পথ এই মুহূর্তে বাংলাদেশের মধ্য দিয়েই সম্ভব,” — বলেন তিনি।
জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) সূত্রে জানা যায়, রাখাইন রাজ্যে বর্তমানে তীব্র মানবিক সংকট চলছে। এর ফলে সেখানে জরুরি ভিত্তিতে সহায়তা প্রয়োজন। শফিকুল আলম এ প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের আগের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে বলেন, “বাংলাদেশ সবসময় মানবিক বিপর্যয়ের সময় পাশে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি মিয়ানমারে ভূমিকম্পের পরও আমরা সাহায্য পাঠিয়েছি।”
তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, “রাখাইনে এই সংকট দীর্ঘ হলে বাংলাদেশে নতুন করে বাস্তুচ্যুত মানুষের ঢল নামার আশঙ্কা রয়েছে। আমাদের পক্ষে এ ধরনের চাপ আর বহন করা সম্ভব নয়।”
বর্তমানে রাখাইনে সরাসরি সহায়তা পাঠানোর বিষয়ে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলেও জানান প্রেস সচিব। তিনি বলেন, “আমরা সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে যথাসময়ে দেশের প্রাসঙ্গিক অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
এদিকে, সম্প্রতি কিছু সংবাদমাধ্যমে এ বিষয়ে একটি বৃহৎ বিশ্বশক্তির ‘ভূরাজনৈতিক পরিকল্পনা’ হিসেবে মানবিক করিডোরের প্রচার চালানো হচ্ছে বলে যে দাবি উঠেছে, তা পুরোপুরি ভিত্তিহীন ও কল্পনাপ্রসূত বলে মন্তব্য করেন তিনি। “এটি একটি ধারাবাহিক মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক প্রচারণার অংশ, যার লক্ষ্য বাংলাদেশকে বিভ্রান্ত করা,” — বলেন শফিকুল আলম।
তিনি আরও জানান, “সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যে বিদ্বেষপূর্ণ প্রচারণা চালানো হয়েছে, এটি তারই ধারাবাহিকতা। আমাদের সরকার এমন অপপ্রচারের বিষয়ে সচেতন এবং দৃঢ় অবস্থানে রয়েছে।”
