মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার পারেরটং গ্রামের কৃষক রাকিবুল হাসান গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ করে অর্জন করেছেন অভাবনীয় সাফল্য। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ ও সহায়তায় তিনি বারি-৮ জাতের টমেটো চাষ শুরু করেন। আধুনিক মালচিং পদ্ধতি ব্যবহার করে মাত্র কয়েক মাসেই তিনি লাখ টাকার টমেটো বিক্রি করে এলাকায় উদাহরণ স্থাপন করেছেন।
রাকিবুল হাসান জানান, তিনি ৬০ শতক জমিতে টমেটো চাষ করেন। প্রদর্শনী প্লটের অংশ হিসেবে কৃষি অফিস থেকে চারা, সার, কীটনাশক, মালচিং পেপার ও পরিচর্যা বাবদ প্রণোদনা পান। এর ফলে উৎপাদন খরচ কমে যায় এবং গাছের বৃদ্ধি ও ফলন ভালো হয়। ইতোমধ্যে তিনি প্রায় ৫ লাখ টাকার টমেটো বিক্রি করেছেন। আগামী ৮-১০ দিন আরও টমেটো সংগ্রহ ও বিক্রি করা সম্ভব হবে বলে আশা করছেন তিনি, যা থেকে অতিরিক্ত আরো ৫০ হাজার টাকা আয় হবে।
শ্রীমঙ্গল কৃষি অধিদপ্তর সুত্র জানায়, উপজেলার আশিদ্রোন ইউনিয়নের পারেরটং গ্রামের কৃষক রকিবুল হাছান ‘আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে সিলেট অঞ্চলের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের’ আওতায় প্রথমবারের মতো ৬০ শতক জমিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটো আবাদ করেন।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. মাসুকুর রহমান জানান, মালচিং পদ্ধতি ব্যবহারের ফলে আগাছা কমে, মাটির আর্দ্রতা বজায় থাকে এবং ফলনও বেশি হয়। গ্রীষ্মকালীন সময়ে টমেটো চাষ তুলনামূলকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ হলেও সঠিক জাত ও পদ্ধতি প্রয়োগ করায় রাকিবুলের ক্ষেত্রে তা সফল হয়েছে।
সমপ্রতি কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শওকত মোহাম্মদ চৌধুরীর নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল রাকিবুল হাসানের টমেটো বাগান পরিদর্শন করেন। তারা উৎপাদন পদ্ধতি ও ফলনের মান দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং অন্যান্য কৃষকদের এ পদ্ধতি অনুসরণ করার আহ্বান জানান।
পরিদর্শনকালে আরো উপস্থিত ছিলেন মৌলভীবাজার কৃষি সমপ্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. জালাল উদ্দিন, প্রকল্প পরিচালক মোঃ রকিব উদ্দিন, সিনিয়র মনিটরিং অফিসার মো. আব্দুল মান্নান, শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. আলাউদ্দিন, কৃষি সমপ্রসারন কর্মকর্তা উজ্জ্বল সূত্রধর, উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মাসুকুর রহমান প্রমুখ।
স্থানীয় কৃষকরা বলছেন, রাকিবুল হাসানের এই সাফল্য এলাকাবাসীর মধ্যে নতুন অনুপ্রেরণা জাগিয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসও গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ সমপ্রসারণে আগ্রহী। শুধু আর্থিক লাভ নয়, আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ও সরকারি সহায়তার সঠিক প্রয়োগের মাধ্যমে কিভাবে কৃষি খাতে পরিবর্তন আনা যায়-রাকিবুলের বাগান এখন তারই জীবন্ত উদাহরন।