ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার উঠতি প্রজন্মের জন্য খুলছে স্বপ্নপূরণের আরেক দুয়ার। বিশেষ করে যারা কারিগরি শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতের জীবিকার উৎস বিনির্মান করতে চান তাদের জন্য দারুন সুখবর। উপজেলার কামারগ্রামে নির্মাণাধীন টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারের (টিসিসি) নির্মাণ কাজ প্রায় সম্পন্ন। এবার শুধু উদ্বোধনের পালা।
বাংলাদেশ কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ও ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য এবং দৈনিক ঢাকা টাইমস ও সাপ্তাহিক এই সময়ের সম্পাদক আরিফুর রহমান দোলনের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এই কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করছে সরকার।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কামারগ্রামে টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারের নির্মাণে দিনরাত কাজ করে ব্যস্ত সময় পার করছেন নির্মাণ শ্রমিকরা। চারতলাবিশিষ্ট দুইটি ও তিন তলাবিশিষ্ট একটি ভবনসহ বিভিন্ন নির্মাণকাজ প্রায় শেষের দিকে। যত দ্রুত সম্ভব প্রকল্পের কাজ শেষ করতে চান তারা।
প্রায় ৭০ কোটি টাকারও বেশি ব্যয়ে নির্মাণাধীন প্রতিষ্ঠানটি প্রাথমিক পর্যায়ে সরকারে বরাদ্দ দেওয়া ৪০টি টিটিসির মধ্যে একটি। স্বপ্নপূরণে আর খুব বেশি দিন বাকি নেই। চলতি বছরেই সম্পূর্ণ কাজ শেষে এটির উদ্বোধন করা হবে বলে জানাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।
ট্রেনিং সেন্টারের তিনটি ভবনের একটি অ্যাকাডেমিক ভবন, একটি ডরমেটরি, একটি প্রিন্সিপাল ও ভাইস প্রিন্সিপালের কোয়ার্টার ও ছাত্রী হোস্টেল। অ্যাকাডেমিক ভবনটিতে ক্লাস হবে। ডরমিটরিতে থাকবে ছাত্ররা।
স্থানীয়রা বলছেন, এ টিটিসির কার্যক্রম শুরু হলে শুধু আলফাডাঙ্গাই নয়, পার্শ¦বর্তী বোয়ালমারী, মধুখালী ও কাশিয়ানী উপজেলার তরুণরাও কারিগরি শিক্ষায় দক্ষ হয়ে উঠবে। এর পাশাপাশি গোটা আলফাডাঙ্গার আর্থিক অগ্রগতিও হবে। এখানকার ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার হবে। এই প্রতিষ্ঠানকে কেন্দ্র করে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির স্বপ্নও দেখছেন তারা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৭ সালের ২৯ মার্চ ফরিদপুর সফর করার যেসব উন্নয়নকাজের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেছিলেন তার মধ্যে কামারগ্রামের টিটিসি একটি। উদ্বোধনের মাস খানেকের মাথায় শুরু হয় প্রকল্পটির কাজ। সাবেক স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন এমপি যখন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন, তখন বিদেশের শ্রমবাজারে দক্ষ কর্মীর চাহিদার বিষয়টি খেয়াল করেন। এরপর সারা দেশের প্রতিটি উপজেলায় একটি করে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেন তিনি। প্রথম পর্যায়ে চট্টগ্রামে একটি মেরিন টেকনোলজি ইনস্টিটিউটসহ দেশের ৪০টি উপজেলায় টিটিসি স্থাপনে প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়।
বাংলাদেশ কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ও ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য এবং দৈনিক ঢাকাটাইমস ও সাপ্তাহিক এই সময়ের সম্পাদক আরিফুর রহমান দোলনের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় প্রাথমিক পর্যায়ে বরাদ্দ দেওয়া ৪০টি টিটিসির মধ্যে একটি অনুমোদিত হয় আলফাডাঙ্গার জন্য।
এ ব্যাপারে আলফাডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ আকরাম হোসেন বলেন, ‘আলফাডাঙ্গার কামারগ্রামে টিটিসি নির্মাণের কাজ দ্রুতগতিতে চলছে। প্রতিষ্ঠানটি এ অঞ্চলের মানুষের জন্য একটি আশীর্বাদ। এজন্য আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কৃতজ্ঞতা জানাই। সাবেক এলজিআরডি মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেনের আন্তরিক সহযোগিতা ছিল। তা না হলে এত বড় প্রকল্প আলফাডাঙ্গাবাসী পেত না।
‘পাশাপাশি আলফাডাঙ্গার কৃতী সন্তান আরিফুর রহমান দোলনের অক্লান্ত প্রচেষ্টা ছিল। তিনি তার যোগাযোগ-সম্পর্কের মাধ্যমে ৪০টি টিটিসির একটি আলফাডাঙ্গায় এনেছেন। এজন্য তাকেও ধন্যবাদ জানাই।’
ফরিদপুর জেলা পরিষদ সদস্য ও জেলা কৃষকলীগের সদস্য সচিব শেখ শহীদুল ইসলাম শহীদ বলেন, ‘গোটা আলফাডাঙ্গায় শিক্ষার আলো জ¦ালিয়েছিলেন মরহুম কাঞ্চন মুন্সী। তারই উত্তরসূরি আরিফুর রহমান দোলন প্রপিতামহের দেখানো পথে হাঁটছেন।’
‘কামারগ্রামে টিটিসি বরাদ্দের পেছনে তার দৌড়ঝাঁপের কথা সবাই জানে। এলাকার রাস্তাঘাট, খেলার মাঠ, কবরস্থান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত উন্নয়নেও অনেক কাজ করছেন তিনি।’
উল্লেখ্য, টিটিসি নির্মাণের জন্য জমি দিয়েছে কামারগ্রাম কাঞ্চন একাডেমী। ১৯৩৭ সালে মরহুম কাঞ্চন মুন্সী এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন। এ ছাড়া কামারগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, মসজিদ, কবরস্থান, খেলার মাঠসহ বিভিন্ন স্থাপনা কাঞ্চন মুন্সীর দান করা জায়গায় স্থাপিত হয়েছে।