বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় হিসেবে বিবেচনা করা হয় ১৯৭০ সালের এবং ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়কে। সবচেয়ে প্রলয়ঙ্করী ছিল ১৯৭০ এবং ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়। পরবর্তীতে সাইক্লোন সিডরের কথা উল্লেখ করা হয়।
১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর সবোর্চ্চ ২২৪ কিলোমিটার বেগে চট্টগ্রামে আঘাত হানা প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে ১০ থেকে ৩৩ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছাস হয়েছিলো। যে হিসেব পাওয়া যায় তাতে ১৯৭০ সালের প্রবলতম ঘূর্ণিঝড়ে পাঁচ লাখ মানুষ নিহত হয়েছিলো। সে সময়ে জলোচ্ছাসে অসংখ্য গবাদি পশু এবং ঘরবাড়ি ডুবে গিয়েছিলো।
উরিরচরের ঘূর্ণিঝড় নামে পরিচিত ১৯৮৫ সালের সাইক্লোনটির বাতাসের গতিবেগ ছিল ১৫৪ কিলোমিটার। এটা অল্প জায়গায় হয়েছে। ফলে তেমন কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। ১২ থেকে ২২ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছাসের প্রবল ঘূর্ণিঝড়টিতে বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ২২৫ কিলোমিটার। ১৯৯১ সালের এপ্রিলের ওই ঘূর্ণিঝড়কে আখ্যা দেয়া হয় ‘শতাব্দীর প্রচন্ডতম ঘূর্ণিঝড়’ হিসেবে। ওই ঝড়ে এক লাখ ৩৮ হাজার মানুষ নিহত হয়েছিলো। যদিও বেসরকারী সংগঠনের দাবি অনেক মাছধরার ট্রলার সাগরে ডুবে নিখোঁজ হয়েছিলো আরও অনেকে। এছাড়া ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এক কোটি মানুষ।
২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর খুলনা-বরিশাল উপকূলীয় এলাকায় ১৫ থেকে ২০ ফুট উচ্চতার প্রবল ঘূর্ণিঝড় সিডর আঘাত হেনেছিলো। যার বাতাসের গতিবেগ ছিল ২২৩ কিলোমিটার। জোয়ারের সময় এ ঝড় হয়নি বলে প্লাবন কম হয়েছে। যেকারণে তুলনামূলকভাবে মানুষও কম মারা গেছে। কিন্তু অবকাঠামোগত অনেক ক্ষতি হয়েছে। সিডরে রেডক্রস সোসাইটির হিসেবে ১০ হাজার মানুষ মারা গেছে বলা হলেও সরকারীভাবে ছয় হাজার বলা হয়েছিল। ২০০৯ সালের ২৫ মে পশ্চিমবঙ্গ-খুলনা উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানে প্রবল ঘূর্ণিঝড় আইলা। যার বাতাসের গতিবেগ ছিল ৭০ থেকে ৯০ কিলোমিটার পর্যন্ত।