পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রচারণায় আচরণবিধি মানছেন না প্রার্থীরা। বিধিমালার তোয়াক্কা না করে প্রচারণা চালাতে গিয়ে দেয়াল ও যানবাহনে পোস্টার সাঁটাচ্ছেন তারা। অথচ আচরণ বিধিমালা অনুযায়ী এ ধরণের প্রচারণায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবে কয়েকজন প্রার্থীর দাবি, তাদের অজান্তেই অতিউৎসাহি হয়ে কর্মী-সমর্থকরা এ কাজ করেছে।
রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার গঙ্গিপাড়া, পুলঘাট বাজার, খালগোড়া বাজার, মোল্লার বাজার ও বাহেরচর বাজার এলাকার বিভিন্ন দোকানপাট, বসতঘর এবং সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের দেয়ালে প্রার্থীদের ছবি-প্রতীক সম্বলিত পোস্টার সাঁটানো রয়েছে। এ ছাড়া ওইসব এলাকার মটরসাইকেলেও প্রার্থীদের ছবি ও প্রতীক সম্বলিত পোস্টার (স্টিকার) সাঁটানো অবস্থায় দেখা গেছে। শুধু ওইসব এলাকাতেই নয়, এ চিত্র উপজেলার সর্বত্র।
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের আচরণ বিধিমালা ২০১৬ সালের ২১ ডিসেম্বরের প্রজ্ঞাপনের ৮ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়Ñকোন প্রার্থী বা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তার পক্ষে অন্য কোন ব্যক্তি, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান বা রাজনৈতিক দল নির্বাচনী এলাকায় অবস্থিত দেয়াল ও যানবাহনে পোস্টার, লিফলেট কিংবা হ্যান্ডবিল লাগাতে পারবে না। তবে ভোট কেন্দ্রে ব্যতিত নির্বাচনী এলাকার যেকোন স্থানে পোস্টার, লিফলেট ও হ্যান্ডবিল ঝুলাতে কিংবা টাঙ্গাতে পারবে।
উল্লেখিত পোস্টার, লিফলেট ও হ্যান্ডবিল ব্যবহার সংক্রান্ত বাঁধা-নিষেধ উপেক্ষা করে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদের বেশিরভাগ প্রার্থীকে প্রচারণা চালাতে দেখা গেছে। এ ছাড়া এখনও অনেক প্রার্থীর রঙিন শুভেচ্ছা পোস্টার নির্বাচনী এলাকায় সাঁটানো রয়েছে। যাও আচরণবিধি লঙ্ঘনের সামিল।
শনিবার উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আচরণবিধি অবহিতকরণ সভায় পটুয়াখালী জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. জিয়াউর রহমান খলিফা বলেছেন, ‘আমি আসার পথে কিছু জায়গার দোকানপাটের দেয়ালে পোস্টার দেখেছি। ওইসব পোস্টার প্রার্থীরা নিজ দায়িত্বে সরিয়ে ফেলবেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট অভিযান করবেন। দোকানপাটে পোস্টার থাকলে তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’ এই সভার নির্দেশনার পরও রোববার দুপুর পর্যন্ত প্রার্থীরা ওইসব পোস্টার সরানোর উদ্যোগ গ্রহণ করেননি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট (সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্বে) মো. মাশফাকুর রহমান বলেন, ‘আচরণ বিধিমালা লঙ্ঘন করে প্রার্থীরা পোস্টার, লিফলেট ও হ্যান্ডবিল ব্যবহার করার বিষয়টি প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
উল্লেখ্য, ১৮ জুন পঞ্চম ধাপে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে দেলোয়ার হোসেন (নৌকা), ডাঃ জহির উদ্দিন আহম্মেদ (দোয়াত-কলম), ড. আরিফ বিন ইসলাম (আনারস), ভাইস চেয়ারম্যান পদে আবুল হোসেন আবু (তালা), খালিদ বিন ওয়ালিদ (উড়োজাহাজ), কাওসার মৃধা (টিউবওয়েল), মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে জেসমিন বেগম (হাঁস), ফেরদৌসী পারভীন (ফুটবল) ও মাতোয়ারা লিপি (কলস) প্রতিদ্বন্দ্বীতা করবেন।