রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বিধি বহির্ভুতভাবে অস্থিত্বহীন ও সাইনবোর্ড সর্বস্ব স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসাগুলোতে গোপনে শিক্ষক নিয়োগ করা হচ্ছে মর্মে অভিযোগ উঠেছে। চলতি আর্থিক বছরে দেশের এবতেদায়ী মাদ্রাসাগুলো এম,পিও ভুক্তিকরন করা হচ্ছে মর্মে সরকারি ঘোষণার পর পরই উপজেলার অধিকাংশ মাদ্রাসায় নতুন করে ওই নিয়োগদানে তৎপর হয়ে উঠেছে মাদ্রাসার নাম সর্বস্ব কমিটিে লোকজন।
এসব মাদ্রাসার তদারকির দায়িত্বে নিয়োজিত উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল মমিন জানান, পীরগঞ্জ উপজেলার ১৫ টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা এলাকায় কাগজপত্রে ৫২টি এবতেদায়ী মাদ্রাসা রয়েছে। এর মধ্যে সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত রয়েছে ৪টি মাদ্রাসা। মাদ্রাসাগুলো হচ্ছে- উপজেলার বড়দরগাহ্ ইউনিয়নের মথুরাপুর এবতেদায়ী মাদ্রাসা, ভেন্ডাবাড়ী ইউনিয়নের চেতনারপাড়া, রায়পুর ইউনিয়নের কুমারগাড়ী ও বড় আলমপুর ইউনিয়নের উজিরপুর এবতেদায়ী মাদ্রাসা। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, যে ৫২টি মাদ্রাসার নাম কাগজপত্রে উল্লেখ রয়েছে সেই মাদ্রাসা গুলোর অধিকাংশই তাদের কার্যক্রম শুরু করেছিল- ৮০’র দশকে। দীর্ঘদিন এরা সরকারি অনুদান প্রাপ্তিতে ব্যর্থ হওয়ায় শিক্ষার্থী সংগ্রহ কিংবা পাঠদানে মনোবল হারিয়ে ফেলেন। এভাবে ৩০ থেকে ৩৫টি বছর বিনা বেতন অথবা অনুদান বঞ্চিত জীবন কাটাতে গিয়ে অনেক শিক্ষক বার্ধ্যকে পৌছেন। ফলে তারা ক্ষোভে দুঃখে মাদ্রাসা গুলো ছেড়ে অন্যান্য পেশায় ফিরে যান এবং অনেক শিক্ষক এই সময়ের ব্যবধানে পরলোকে পাড়ি জমান। ফলশ্রুতিতে মাদ্রাসা গুলো স্বাভাবিক নিয়মে বন্ধ কিংবা অস্তিত্বহীন হয়ে যায়। এমতাবস্থায় চলতি আর্থিক বছরে এবতেদায়ী মাদ্রাসা এম,পিও ভুক্তির আওতায় আনা হবে মর্মে সরকারি ঘোষণার পরেই পীরগঞ্জের অস্থিত্বহীন অধিকাংশ মাদ্রাসা মেরামতসহ ঘর নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে নতুন করে নিয়োগ দেয়া শিক্ষকের অর্থে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার মতে, এবতেদায়ী মাদ্রাসা সমূহে শিক্ষক নিয়োগের কোন ক্ষমতা তাদের নেই। যেসব মাদ্রাসা উপজেলা যাচাই-বাছাই কমিটির সুপারিশক্রমে এম,পিও ভুক্তি কিংবা অনুদানের আওতায় আনার সুপারিশ করবেন কেবল সেই সমস্ত প্রতিষ্ঠানেই এম,পিও ভুক্তির আওতাভুক্ত হতে পারে। তাছাড়া সেইসব মাদ্রাসায় উপজেলা শিক্ষক নিয়োগ কমিটিই নিয়োগ প্রদানের ক্ষমতা সংরক্ষণ করেন। ওই শিক্ষা কর্মকর্তার তথ্যানুযায়ী সরকারের এম,পিও ভুক্তি ঘোষণা কার্যকর করতে প্রথমে ৫ সদস্যের একটি যাচাই-বাছাই কমিটি গঠিত হবে। যে কমিটিতে স্থানীয় এম,পি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার প্রতিনিধি অর্ন্তভূক্ত থাকবে। অথচ এখন পর্যন্ত সেই যাচাই-বাছাই কমিটিই গঠিত হয়নি। তবে এই কমিটি গঠনের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে প্রতিনিধি চাওয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান, এবতেদায়ী মাদ্রাসায় গোপনে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হচ্ছে মর্মে গুঞ্জন চলছে। তবে সু-নির্দিষ্ট কোন অভিযোগ না পাওয়ায় কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হচ্ছে না।