সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাঁথা স্মৃতি সংরক্ষণে কাজ শুরু করেছে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন। মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়ী বাড়ী গিয়ে সাক্ষাৎকার নিচ্ছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ জসীম উদ্দিন। স্বাধীনতার ৪ যুগ পর উপজেলার প্রশাসন প্রধানের এই বিরল উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলাবাসী। আজ (৭ আগস্ট) পর্যন্ত ৪ জন মুক্তিযোদ্ধার সাক্ষাৎকার গ্রহন করা হয়েছে। আগামি ঈদ ও জাতীয় শোক দিবসের পর এক এক করে ফেঞ্চুগঞ্জের সকল মুক্তিযোদ্ধার সাক্ষাৎকার গ্রহন করবেন ইউএনও মোঃ জসীম উদ্দিন। তবে এই ৪ জন মুক্তিযোদ্ধার মুক্তিযুদ্ধের বীরত্বগাঁতা পাঠ করা হবে আগামি ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪ তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে।
এ ব্যাপারে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ জসীম উদ্দিন বলেন, ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪ তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসের প্রস্তুতি সভার সিদ্ধান্তক্রমে মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়ী বাড়ী গিয়ে তাদের নিজ মুখের বীরত্বগাঁথা গল্প এবং সেটির শ্রুতিলিখনের কাজ শুরু করেছি, যা পরবর্তীতে সংকলণ প্রকাশের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা হবে। এতে করে এটি একটি সমৃদ্ধ সংকলণ হিসেবে পঠিত হবে এবং নতুন প্রজন্ম এর গুরুত্ব বুঝে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হবে। প্রতিটি অনুষ্ঠানে তিন থেকে চার জন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাঁথা পাঠ করে শুনানো হবে এবং সেটি বাঁধাই করে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের হাতে তুলে দেয়ার মাধ্যমে সম্মানিত করা হবে মুক্তিযোদ্ধাদের। তিনি আরো বলেন, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলার ১১২ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে যারা জীবিত রয়েছেন প্রত্যেকেরই বীরত্বগাঁথা গল্প শোনা হবে। এর মধ্যে আজ পর্যন্ত ৪ জনের গল্প শোনা হয়েছে। তাদের এই বীরত্বগাঁতা পাঠ করা হবে আগামি ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪ তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে। তাঁরা হলেন, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সাবেক কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা মোঃ নূরুল ইসলাম, ডেপুটি কমান্ডার অবসরপ্রাপ্ত হাবিলদার মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আমির হোসেন, সাবেক কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা আবদুল খালিক ফিরোজ ও মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী (পাখি মিয়া)।
এই মহৎ কাজে উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের সম্মানিত নেতৃবৃন্দ, মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ড এর সদস্যবৃন্দ, প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ, শিক্ষকবৃন্দ, সাংবাদিকবৃন্দ এবং সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের সার্বিক সহযোগিতায় এটি চুড়ান্ত রূপ লাভ করবে বলে আশাবাদী ইউএনও মোঃ জসীম উদ্দিন।
ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন ফেঞ্চুগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ উদ্দীন ইসকা। তিনি এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, অতিতে ফেঞ্চুগঞ্জের মুক্তিযোদ্ধাদের সাক্ষাতকারসহ বিভিন্ন সংকলণ প্রকাশিত হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাঁথা স্মৃতি সংরক্ষণে এই উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে, তবে এরকম উদ্যোগ আরো আগে নেয়া উচিত ছিল। ফেঞ্চুগঞ্জের অনেক মুক্তিযোদ্ধা মারা গেছেন, তাদের স্মৃতিও সংরক্ষণে রাখার দাবি জানিয়েছেন বরেণ্য সাংবাদিক রিয়াজ উদ্দীন ইসকা।