ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পানামী গ্রামে মৌসুমি বেগম (২৫) নামের এক গৃহবধূকে নির্যাতনের পর হত্যার অভিযোগ উঠেছে। শনিবার বিকাল ৫টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মৌসুমি শহরের লাউদিয়া গ্রামের মৃত শামসুল ম-লের মেয়ে।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালে সদর উপজেলার পানামী গ্রামের মকছেদ ম-লের ছেলে কৃষক রিপন ম-লের সঙ্গে মৌসুমি বেগমের বিয়ে হয়। এরপর থেকে নানা ভাবে মৌসুমিকে তার স্বামী রিপন নির্যাতন করতো। এর আগে কয়েকবার বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল মৌসুমিকে। সর্বশেষ প্রায় দু-বছর আগে সাবেক চেয়ারম্যান ফারুকুজ্জামান ফরিদের সমঝোতায় তাকে বাড়ি ফিরিয়ে নেয় রিপন।
এরপর শনিবার সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটের দিকে একটি ইজি বাইকে (চালক অজ্ঞাত) বাইকে করে অজ্ঞান অবস্থায় এক নারী মৌসুমিকে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। পরে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ৬ টা ৩০ মিনিটের দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করলে সঙ্গে থাকা ওই নারী পালিয়ে যায়।নিহতের ভাই ইমামুল বলেন, আমার বোনকে শ্বশুর বাড়ির লোকজন মেরে ফেলেছে। ওর হাতে আঘতের চিহ্ন আছে। মেরে দিয়ে ওরা এটিকে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করছে। আমরা সঠিক বিচার চাই।
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মিথিলা ইসলাম জানান, মৌসুমিকে আমরা মৃত অবস্থায় পেয়েছি। তার গলায় একটি চিহ্ন পাওয়া গেছে দেখে মনে হচ্ছে রশি অথবা ওড়না জাতীয় কিছুর সঙ্গে অনেকক্ষণ ঝুলে ছিল।
প্রকৃত ঘটনা জানতে পানামি গ্রামে গেলে রিপনের বাড়িতে কাউকে পাওয়া যায়না। গ্রামের লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায় যে বাড়ির সকলে বাড়িতে তালা লাগিয়ে পালিয়ে গেছে। তখন রিপনের প্রতিবেশি উপস্থিত সকলের সামনে মান্নান বলে বিকাল ৫ টার দিকে রিপনের বড় ছেলে তার দেড় বছরের বাচ্ছা কে কোলে নিয়ে কাঁদছিল আর বলছিল যে আমার মা ঘরে গলায় দড়ি নিয়েছে। তার কথা শুনে দৌড় দিয়ে বাড়ির মধ্যে গিয়ে দেখি দরজা বন্ধ। তখন জোরে দরজায় ধাক্কা দিলে দরজা খুলে যায়। তখন দেখি সে ঘরের আড়ার সাথে ঝুলছে। তখন ওড়না কেটে আমি ও আমার স্ত্রী নামায়ে হাঁটানর চেষ্টা করি। যখন কোন সাড়া না পাওয়ার কারনে ইজিবাইকে করে ঝিনাইদহ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পথেই বুঝতে পারি যে মৌসুমি মারা গেছে। তখন রিপন ইজিবাইক থেকে নেমে চলে যায়।যখন ঘটনা ঘটে তখন রিপনের বাড়িতে কেউ ছিল না। উপস্থিত অন্যরা জানায় কোলের শিশুটা অসুস্থ্য থাকার কারনে প্রায় ঝগড়া লেগেই থাকত।