রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে হত্যার আগে আসমা আক্তারকে চার যুবক ধর্ষণ করেছিল বলে পুলিশকে জানিয়েছে এই হত্যা মামলার প্রধান আসামি মারুফ হাসান বাধন (১৭)। বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে পঞ্চগড় জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে গিয়ে আত্মসমর্পণ করে পুলিশকে এ তথ্য জানায় সে। পরে পুলিশ তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে পঞ্চগড় থানা হাজতে রাখে। শুক্রবার (২৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় বাধনকে কমলাপুর জিআরপি থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে পঞ্চগড় থানা পুলিশ। পঞ্চগড় জেলা পুলিশ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
পুলিশকে বাধন জানায়, প্রেমের সূত্র ধরে আসমাকে গত ১৮ আগস্ট ঢাকায় নিয়ে যায় সে। পঞ্চগড় এক্সপ্রেসে করে গভীর রাতে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছায় তারা। সেখানে রাতের খাবার খেয়ে স্টেশনের আশপাশের আবাসিক হোটেলগুলোতে থাকার চেষ্টা করে। তবে পরিচয়পত্র না থাকায় এবং অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় কেউ তাদের হোটেলে থাকতে দেয়নি। পরে বাধন ও আসমা বলাকা কমিউটার ট্রেনের একটি পরিত্যক্ত বগিতে উঠে শুয়ে পড়ে। এ সময় তাদের আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলে অপরিচিত চার যুবক। তারা বাধনকে পাশের বাগিতে নিয়ে বেঁধে রেখে আসমাকে ধর্ষণ করে এবং শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে বাধনও সেখান থেকে পালিয়ে পঞ্চগড়ের উদ্দেশে রওনা হয়।
বৃহস্পতিবার আত্মসমর্পণের পর আজ সন্ধ্যায় বাধনকে কমলাপুর জিআরপি থানার উপ-পরিদর্শক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলী আকবরের কাছে হস্তান্তর করা হয়।এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেডকোয়ার্টার) নাঈমুল হাছান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদর্শন কুমার রায় ও পঞ্চগড় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু আককাছ আহমদ উপস্থিত ছিলেন।
কমলাপুর জিআরপি থানার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘বাধনের বক্তব্য সঠিক হতে পারে। আবার সেই পরিকল্পিতভাবে আসমাকে হত্যা করতে পারে। তাই স্বীকারোক্তি আমরা যাচাই বাছাই করে দেখছি।’
বাধনের চাচা ফারুক হোসেন শুক্রবার সন্ধ্যায় পঞ্চগড় থানা চত্বরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা বাধনকে পুলিশের হাতে তুলে দিতে বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নিয়ে যাই।’
পঞ্চগড় পুলিশ সুপার ইউসুফ আলী বলেন, ‘বাধনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আত্মসমর্পণ হয় আদালতে, পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণের কোনও সুযোগ নেই। তাকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার হাতে হস্তান্তর করা হয়েছে। ঘটনা এবং মামলা কমলাপুর রেলওয়ে থানায় হওয়ায় মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে আমরা তেমন কিছু বলতে পারবো না। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট থানার কর্মকর্তারাই ভালো বলতে পারবেন।’