কুমিল্লার হোমনায় বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বিবাহিত এক যুবকের বিরুদ্ধে নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে (১৫) নিয়মিতভাবে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠেছে। এই ঘটনায় ওই যুবকের বিরুদ্ধে গতকাল সোমবার হোমনা থানায় মামলা হয়েছে। অভিযুক্ত যুবকের নাম শামীম (২০)। সে উপজেলার শ্রীমদ্দি গ্রামের আবদুল লতিফের ছেলে। পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে কুমিল্লা কোর্টের মাধ্যমে কারাগারে এবং মেয়েটিকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
মেয়েটির বাবা জানান, তিনি মাছ শিকার করে জীবীকা নির্বাহ করে মেয়ের পড়াশোনা চালিয়ে আসছিলেন। মেয়েটি উপজেলা সদরের খাদিজা মেমোরিয়াল বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির নিয়মিত ছাত্রী। তার জন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে বিয়ের প্রস্তাবও আসছিল। কিন্তু মেয়ে অপ্রাপ্ত বয়ষ্ক হওয়ায় বিয়ে দিচ্ছেন না। এদিকে প্রতিবেশী উশৃঙ্খল ও লম্পট শামীম দীর্ঘ দিন ধরেই তার মেয়েকে নানাভাবে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। তাদের অজান্তেই একসময় মেয়ের সঙ্গে ওই লম্পটোর সম্পর্কও হয়ে যায়। তিনি আরও জানান, মোবাইলে ম্যাসেজের মাধ্যমে তাদের নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। মেয়ের বরাত দিয়ে তিনি জানান, রাত নয়টা-দশটার পরে তারা ঘুমিয়ে পড়লে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দুই/একদিন পর পরই মেয়েকে বাহিরে নিয়ে গিয়ে শামীম ধর্ষণ করত।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শামীম হোমনা ডিগ্রি কলেজের ছাত্র এবং সে বিবাহিত। গত ছয় মাস পূর্বে শামীম তার বিয়ের বিষয়টি গোপন রেখে মেয়েটিকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় শামীম বিভিন্ন কৌশলে দীর্ঘদিনের চেষ্টায় মেয়েটিকে রাজী করায়। বিয়ের কথা না জেনে তার প্রেমে সাড়া দিলে লম্পট শামীম মেয়েটিকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন স্থানে একাধিকবার ধর্ষণ করে। গত ১ আগস্ট রাত নয়টার দিকে শামীম মেয়েটিকে তার বাড়ির পেছনে একটি ঝোঁপের ভেতর ডেকে নিয়ে গিয়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করে। তখন এলাকার কিছু লোক টের পেয়ে শামীমের সঙ্গে মেয়েটিকে অন্তরঙ্গ অবস্থায় আটক করে পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশের এসআই অহেদ মুরাদ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যায়। গতকাল বখাটে শামীমকে কোর্টের মাধ্যমে কারাগারে এবং মেয়েটিকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ মো. ফজলে রাব্বী বলেন, এলাকায় উশৃঙ্খল হিসেবে পরিচিত শামীম তার বিবাহিতের বিষয়টি গোপন রেখে মেয়েটির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে মেয়েটিকে সে নিয়মিত ধর্ষণ করত। জানতে পারি, শামীম বছর খানেক আগে উপজেলার ঘনিয়ারচর গ্রামে একটি বিয়ে করেছে এবং তার স্ত্রী অন্তঃস্বত্ত্বা। রাতের তাদের অন্তরঙ্গ অবস্থায় ধরে পুলিশে খবর দিলে ঘটনাস্থল থেকে তাদের আটক থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে আজ (গতকাল) সোমবার শামীমকে কোর্টের মাধ্যমে জেলে এবং আর মেয়েটিকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।