মাল্টা ভালো লাগে না এমন মানুষ পাওয়া কঠিন। মাল্টা চাষের সাফল্যে রঙিন কৃষকের মন। সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে ঝুলছে ফিকে সবুজ বর্ণের এসব লোভনীয় মাল্টা ও কমলা। দুই বছরেই পান সফলতা। আর এতেই তিনি নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন।
ভিটামিন‘সি’ সমৃদ্ধ একটি রসালো ফল হচ্ছে মাল্টা। ফলটি একসময় বাংলাদেশের পাহাড়ি অঞ্চলে চাষ হলেও এখন আর পাহাড়ে সীমাবদ্ধ নেই। ইতোমধ্যে এ দেশের আবহাওয়ায় মাল্টা চাষ করে সফলতা পেয়েছেন বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার ৩নং ভাটরা ইউনিয়নের টাকুরাই গ্রামের আবু বক্কর সিদ্দিক।
নন্দীগ্রাম উপজেলার মাটি অনেক উর্বর এর করণে মাল্টা চাষের উজ্জ্বল সম্ভবনা রয়েছে বলে কৃষি বিভাগ জানিয়েছেন। আবু বক্কর সিদ্দিকের বাগানে মাল্টায় নেই কোনো ফরমালিন, নেই কোন ঝুঁকি। তাই এই উপজেলায় মাল্টাও হতে পারে অধিক জনপ্রিয়। কৃষক প্রশিক্ষণ ও উদ্ধুব্ধকরণের মাধ্যমে মাল্টা চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। মাল্টা ব্যাপকহারে চাষ হলে নন্দীগ্রাম উপজেলায় অর্থনৈতিকভাবে বিপ্লব সাধিত হবে বলে কৃষি বিভাগসহ উদ্যোক্তারা আশা করছেন।
চাষি আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, মাটি চাষ উপযোগী ও লাভজনক হওয়ার কারণে মাল্টা চাষ শুরু হয়েছে। আর এ মাল্টা চাষে উদ্বুদ্ধ করেছে কৃষি বিভাগ। মাল্টা বাগানে ফল ধরেছে। ২০১৭ সালে নিজ গ্রামে ৫৪ শতক জমির উপর গড়ে তোলেন তার মাল্টা বাগান। এটাই এই উপজেলার সর্বপ্রথম মাল্টার বাগান বলে তার দাবি। তার বাগানে পাকিস্থানী জাতের ২১৫ টি মাল্টা গাছ লাগানো হয়েছে।
ওই একই জমিতে সাথী ফসল হিসেবে রয়েছে ২৩৫ টি থাই পিয়ারা, ২২০ টি থাই লেবু, ২০টি আম গাছ, ৫ টি কমলা, ১২০০ টি লিচু গাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফলের গাছ। চারা রোপণের দুই বছরেই মাল্টা ধরা শুরু করেছে। মাল্টার ২১৫ টি গাছেই ফল এসেছে। এ ছাড়া একটি কমলা গাছে শতাধিক কমলা ধরেছে। সেই সব গাছে ৫ টা থেকে ৫০ টি পর্যন্ত মাল্টা ধরেছে। এরইমধ্যে পাকতে শুরু করেছে, যা এলাকায় ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। ইতোমধ্যে এক লাখ টাকার মাল্টা ও কমলা বিক্রি করেছেন বলে মাল্টা চাষী আবু বক্কর জানান।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুহা: মশিদুল হক বলেন, ‘আবু বক্কর সিদ্দিক একজন মডেল চাষি। মাল্টা চাষ করে সে তাক লাগিয়ে দিয়েছে।’ মাল্টা চাষের এই সফলতা আগামীতে কৃষককে আরো অনুপ্রেরণা যোগাবে এমনটাই মনে করি আমরা।