শেরপুর জেলা সদরের ইউনাইটেড হাসপাতালের ভুল চিকিৎসায় নবজাতককে হত্যার করার অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে বুধবার (৬ নভেম্বর) রাতে দুই চিকিৎসকসহ চারজন ও অজ্ঞাতনামা আরো ৪ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে নিহতের পিতা পনির। মামলার এজাহারনামীয়রা হলেন- ডা. হাসিনাতুল ফেরদৌস লোপা’র স্বামী মিলন (১ নং), ওই হাসপাতালের ডা. জসিম উদ্দিন (২নং), ওই হাসপাতালের মালিক দিদার (৩নং) ও ডা. মুসলিমা আক্তার মৌসুমী (৪ নং) আসামি করা হয়েছে।
মামলার নথিতে জানা যায়, শহরের খোয়ারপাড় মহল্লার শাহিনুর রহমান পনির এর স্ত্রী তানিয়ার সন্তানসম্ভবা হওয়ার পর থেকেই শহরের পারভিন ক্লিনিক বর্তমানে ইউনাইটেড হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. হাসিনাতুল ফেরদৌস লোপা’র তত্ত্বাবধানে থাকেন। সোমবার (৪ নভেম্বর) সকালে তানিয়া ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে তাকে জেলা হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা শুরু করান। কিন্তু ডা. হাসিনাতুল ফেরদৌস লোপা’র কাছে পরামর্শ করতে তার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে চিকিৎসকের স্বামী মিলন ফোন রিসিভ করে বিভিন্ন ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দেন। একপর্যায়ে তার মালিকানাধীন ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তির কথা বললে রাত সাড়ে ৮টার দিকে তানিয়াকে সেখানে ভর্তি করেন। কিন্তু গর্ভের সন্তান ক্ষতির শঙ্কা দেখিয়ে বার বার নিষেধ সত্বেও রাত সাড়ে ১০টার দিকে মিলনের ছোট ভাইয়ের স্ত্রী ডাঃ মুসলিমা আক্তার মৌসুমী রোগী তানিয়াকে অস্ত্রপাচার করলে তার গর্ভের সন্তান মারা যায়। পরে সু-কৌশলে হাসপাতালের সকল নার্স ও চিকিৎসক পালিয়ে যায়। পরে অস্ত্রপাচার করা তানিয়ার অবস্থা খারাপের দিকে গেলে স্বজনরা তাকে জেলা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন।
অন্যদিকে, এ ঘটনার তদন্তের জন্য ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা সিভিল সার্জন। কমিটিতে প্রধান করা হয় গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. লুৎফর রহমান। অন্যরা হলেন- সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডা. আবদুল করিম ও শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. আসাদুজ্জামান। কমিটিকে আগামী পাঁচ কার্যদিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্টসহ ওই হাসপাতালের আইনগত বৈধতা আছে কিনা তা পরীক্ষা করে রির্পোট দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
এ ব্যাপরে শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, বুধবার মামলা দায়েরের পর আসামি ধরতে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।