নওগাঁর মান্দায় বাবুল হোসেন ওরফে বাবু মোল্লা (৩০) নামে এক যুবকের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। শনিবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে মান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত বাবু উপজেলার ভারশোঁ ইউনিয়নের চেরাগপুর গ্রামের মোজাম্মেল হকের ছেলে ও এক সন্তানের জনক।
পুলিশ সুত্র জানায়, নারী নির্যাতন মামলার গ্রেফতারী পরোয়ানাভূক্ত আসামি উপজেলার পরানপুর ইউনিয়নের বানিসর গ্রামের মৃত আবদুল জলিলের বিধবা স্ত্রী পারভীন বিবিকে (৪৫) ধরতে শুক্রবার গভীর রাতে অভিযান দেয় পুলিশ। এ সময় পারভীন বিবির ঘরে বাবু মোল্লা অবস্থান করছিল। পুলিশ পারভীনকে গ্রেফতারসহ বাবুকেও হেফাজতে নিয়ে থানায় ফিরছিল। পথে বাবু অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসা চলার কিছু সময়ের মধ্যেই বাবুর মৃত্যু ঘটে।
আসামি পারভীন বিবি জানান, মোবাইলফোনের মাধ্যমে বাবুর সঙ্গে আমার পরিচয় ঘটে। সেই সুত্র ধরে শুক্রবার সন্ধ্যায় মুঠোফোনে যোগাযোগ করে রাতে একইসঙ্গে থাকার কথা বলে বাবু আমার বাড়িতে আসে। রাতে একইঘরে অবস্থানের সময় পুলিশ আমাদের দুজনকে আটক করে। তিনি আরও বলেন, পুলিশ আমাদের নিয়ে থানায় ফেরার পথে বাবু অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানেই বাবুর মৃত্যু হয় বলে উল্লেখ করেন তিনি।
মান্দা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক বিজয় কুমার জানান, ভোররাতে বাবুকে নিয়ে পুলিশ হাসপাতালে আসেন। এ সময় বাবু জানায় রাতে তিনি দুইটি যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট খেয়েছেন এবং অসুস্থবোধ করছেন। তার ভাষ্য অনুযায়ী চিকিৎসা শুরু করা হয়। এর কিছু সময়ের মধ্যে বাবু জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন ও মারা যান।
এদিকে শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বাবুর সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইউএনও খন্দকার মুশফিকুর রহমান। এ সময় বাবুর মা-বাবা, ভাইসহ আত্মীয়-স্বজন, মহাদেবপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু সালেহ মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। ইউএনও জানান, নিহত বাবুর শরীরে বাহ্যিক আঘাতের কোন চিহ্ন পাওয়া যায়নি। ময়না তদন্তের মাধ্যমে তার মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
মান্দা থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ (ওসি) মোজাফফর হোসেন জানান, নিহত বাবুর লাশ ময়না তদন্তের জন্য নওগাঁ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও জানান ওসি।