রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে রোববার সন্ধ্যার পর হঠাৎ করেই ব্যাপক শিলা বৃষ্টি হয়েছে। এতে করে বোরো ধানের ফলনে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হবে বলে কৃষকরা ধারণা করছেন।
একদিকে ধানের নায্য দাম পাওয়া হতে বঞ্চিত অপরদিকে শিলা বৃষ্টিতে ধান গাছ হতে ঝড়ে যাওয়ায় কৃষকরা বড় ধরনের ক্ষতি হবে এমন আশঙ্কায় কৃষকরা চিন্তায় ও হতাশাগ্রস্থ হচ্ছে।
গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাযায়,এবার গোদাগাড়ী উপজেলায় বোরো আবাদ হয়েছে ১৪ হাজার ২৭৫ হেক্টর জমিতে। আবাদের মৌসুমে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ধানের গাছ ও শীষ বেশ ভাল দেখায়। কিন্তু কিছুদিন পর পর আকাশ হতে অতিমাত্রায় শিলা বৃষ্টি হওয়ার কারণে ধানের ফলন কমে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
গোদাগাড়ী পৌর এলাকার কৃষক মামুন জানান, রোববার সন্ধ্যার পর শিলা বৃষ্টিতে ধানের অনেক ক্ষতি হয়েছে। সকালে গিয়ে জমিতে দেখি আমার প্রতিটি ধানের গাছের পেটে যে পরিমাণ ধান ছিলো তা ঝড়ে গিয়ে প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। এতে করে ধানের ফলন অনেক কমে যাবে।
তিনি আরোও বলেন আমি এবার প্রায় ৮ বিঘা বোরো আবাদ করেছি। এতে বিঘাপ্রতি ৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ধানের বাজার মূল্য অনেক কম থাকায় ধান বিক্রয় করে খরচের টাকা উঠাতো দূরের কথা বরং সারের দোকানে আমাদের ঋণ হয়ে যাবে। ধান উঠা মাত্রই সার ও কীটনাশক দোকানের মালিকরা বাকি টাকা নেবার জন্য চাপ দিতে থাকে ফলে ধান আবাদ করতে এখন ভয় হয়।
উপজেলার মাল কামলা গ্রামের কৃষক আব্দুল্লাহ বলেন, রোববার রাতের শিলা বৃষ্টিতে আমাদের এলাকার ধান ঝড়ে গেছে ফলে ধানের ফল কমে যাবে। বিঘা প্রতি ফলন প্রায় ৩-৪ মন কমে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি দাবি করেন, আমরা ধান আবাদ করে ক্ষতির সমূক্ষিণ হচ্ছি। ধানের নায্য দাম পাইনা। সরকার যদি ধানের বাজার নিয়ন্ত্রণ করে তাহলে কৃষকরা স্বস্থিতে থাকবে। সবার বেতন ভাতা ও সব কিছুর দাম বাড়ছে কিন্তু দিনের দিন কৃষকের কষ্টে ফলানো ধানের দাম কমে এটাই হলো আমাদের বাংলাদেশ।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের সাথে কথা হলে তারা জানান, আমারা কৃষক আজ রাতদিন মাঠে ফসল ফলিয়ে ধানের দাম পাই না। প্রতিদিন নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বড়ছে। ধান লাগতে শ্রমিকদের দামও বেড়ে গেছে কিন্তু ধানের দাম কমে গেছে এতে আমারা অনেক ক্ষতি হচ্ছি। তাই সরকার যদি সরাসরি বাজার তাদারকি বা কৃষকদের কাছ হতে নায্য মূল্যে ধান ক্রয় করে তবে তারা কিছুটা স্বস্থি পাবে বলে জানান।
গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, গতরাতে শিলা বৃষ্টিতে ধানের তেমন ক্ষতি না হবার কথা। গোদাগাড়ী সদরে বেশী পরিমাণ শিলা বৃষ্টি হয়েছে তবে বাইরে তেমন শিলা বৃষ্টি হয়নি। যেসব ধানের পরাগায়ন ও ফুল এসে গেছে সে গুলো তেমন ক্ষতি হবে না। তবে কিছু কিছু ধানের চিটা লেগে ক্ষতি হবে। তবে ধানের কি সঠিক কি পরিমাণ ক্ষতি হবে তা মাঠ পর্যায়ে আমাদের জরিপের কাজ চলছে তা পরে জানতে পারবো বলে জানানা।