মাংস বিক্রির জন্য জবাইয়ের উদ্দেশ্যে আনা পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার নিয়ম থাকলেও বগুড়ার নন্দীগ্রামে তা মানা হচ্ছে না। উপজেলার ৫ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার বিভিন্ন হাটবাজারে কোনো ধরনের ডাক্তারি পরীক্ষা ছাড়াই জবাইকৃত পশুর মাংস বিক্রি হচ্ছে অবাধে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কসাইদের অভিযোগ, গরু-ছাগল ও মহিষ জবাইয়ের আগে পরীক্ষা করতে হলে অনেক সময় কৃত্রিম প্রজনন অফিসারকে টাকা দিতে হয়। তাছাড়া সময় মতো ডাক্তারও পাওয়া যায় না। আবার তারা বিরক্তও মনে করে।
জানা গেছে, রোগাক্রান্ত দূর্বল গরু, মহিষ ও ছাগল জবাই করে উপজেলার বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। সব ক্ষেত্রেই পশুর জবাইয়ের আগে ডাক্তারি পরীক্ষার নিয়ম মানা হচ্ছে না। তাছাড়া গাভীকে ষাঁড় বলে মাংস বিক্রি চলছে। এ বিষয়ে কোনো তদারকি না থাকায় কসাইদের সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে আছে উপজেলাবাসী। এ অবস্থায় রোগাক্রান্ত পশুর মাংস খেয়ে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে উপজেলার আড়াই লাখ মানুষ। উপজেলার কুন্দারহাট, হাটকড়ই, রনবাঘা, পন্ডিতপুকুর, ওমরপুর, পৌর সদরসহ বিভিন্ন হাটবাজারে মাংস বিক্রি হয়ে থাকে। আবার অধিকাংশ মাংসের দোকানেই জবাইখানা নেই। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মহাসড়কের পাশে পশু জবাই করা হয়। ফলে পশুর রক্ত ও বর্জ্যরে দুর্গন্ধে দূর্ভোগ পোহাতে হয় পথচারীদের। নোংরা পরিবেশে চলে পশুর চামড়া ছাড়ানোর কাজ। কুন্দারহাটের মাংস বিক্রেতা বুলবুল হোসেন বলেন, ‘আমরা পশু জবাই করি ভোরে। কিন্তু ওই সময় ডাক্তার পাওয়া যায় না। তাছাড়া ডাক্তারি পরীক্ষা ছাড়া পশু জবাই করলেও এ বিষয়ে প্রশাসন থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। তবে আমরা সুস্থ পশুই জবাই করি।’ নন্দীগ্রাম হাটের মাংস বিক্রেতা জুয়েল বলেন, ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য উপজেলা প্রাণি সম্পদ কার্যালয়ে আমরা নিজেরাই গরু নিয়ে এলে তারা বিরক্ত মনে করে। অনেক দেরি করে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে। উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিসের কৃত্রিম প্রজনন মহি উদ্দিন খন্দকার বলেন, অফিসের সময় চলে যাওয়ার পর অনেকে গরু নিয়ে আসে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য। সে সময় অনেকে খুশি হয়ে কিছু টাকা দেয়। উপজেলা প্রাণি সম্পদ দপ্তরের ভেটেরিনারি সার্জন ডা: মো. নূরে আলম সিদ্দিকী (বিপু) বলেন, জনবল সংকটের কারণে উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা সম্ভব হয় না। তবে পৌরসভার হাটবাজারের পশু জবাইয়ের আগে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। কেউ যদি পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার নামে টাকা নেয়, এটা তাঁর ব্যক্তিগত বিষয়।