বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলায় ৪৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ও উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ। এর মধ্যে ৩৫টি বিদ্যালয়ের ভবনকে অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কাছে উপজেলা প্রকৌশল ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে আবেদন করা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়ায় ওই সকল বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক ও অভিভাবকরা ভীতির মধ্যে রয়েছে। এসব বিদ্যালয় ধ্বসে পরে যে কোন সময় বড়ধরণের দুর্ঘটনার আশংকায় রয়েছেন তারা। অনেক সময় এসব বিদ্যালয়ের প্লাষ্টার খসে পরে শিক্ষার্থীরা আহত হচ্ছে। জরুরীভিত্তিতে বিদ্যালয়গুলো পূণঃনির্মাণের জন্য দাবি জানিয়েছেন অভিভাবক, শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীরা।
স্থানীয় ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিসসূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ৯৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ওই বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ৩৫টি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ, ১২টি মাধ্য ঝুঁকিপূর্ণ ও ১টি সল্প ঝুঁকিপূর্ণ প্রাথমিক বিদ্যালয়কে হিসাবে চিহ্নিত করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। প্রচন্ডভীতির মধ্যে শিক্ষকরা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় পাঠদান চালাচ্ছেন। ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যালয়গুলো ১২ থেকে ১৫ বছর পূর্বে উপজেলা প্রকৌশলী বিভাগ থেকে নির্মাণ করা হয়েছিল। নির্মাণ কাজের সময় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে প্রকৌশল বিভাগের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবার কারণে কাজ গুলো নিন্মমানের হয়েছে। নির্মাণ কাজের সময় নিন্মমানের মালামাল ব্যবহার করায় কাজের গুণগতমান খারাপ হওয়ায় ওই বিদ্যালয়গুলো অতি তাড়াতাড়ি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পরেছে। উপজেলার বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে উত্তর শিহিপাশা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, পুর্ব সুজনকাঠী, সেরাল, পূর্বসুজনকাঠী আইডিয়াল, পশ্চিম সুজনকাঠী, নাঘিরপাড়, দাসপট্রি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাংতা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, পূর্ব আস্কর, বাগধা হাই সংলগ্ন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, পয়সা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, পশ্চিম আমবৌলা, ফেনাবাড়ি, চক্রবাড়ি, ও তালতারমাঠ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ৪৮টি বিদ্যালয় ঝুঁকিপূর্র্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা ও উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ। উপজেলা প্রকৌশল ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সংশিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কাছে সংস্কারের জন্য লিখিতভাবে আবেদন জানিয়েছেন।
শিক্ষার্থীদের একাধিক অভিভাবকরা জানিয়েছেন, বিদ্যালয়গুলো ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়ায় আমাদের সন্তানদেরকে পাঠাতে ভয় পাচ্ছি। তাদের বিদ্যালয় পাঠিয়ে প্রতিনিয়ত আতঙ্কে থাকি যে কখন দুর্ঘটনা ঘটে। তারা জরুরী ভিত্তিতে বিদ্যালয়গুলো পূণঃনির্মাণের জন্য দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিভাগে। তারা আরও জানান, বিদ্যালয়গুলো অনেকবার ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হলেও কোন কাজ হয়নি।
এ ব্যাপারে আগৈলঝাড়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সিরাজুল ইসলাম তালুকদার বলেন, উপজেলার ৪৮টি বিদ্যালয়কে ঝুঁকিপূর্ন হিসেবে চিহিৃত করে ডিপিও অফিসের মাধ্যমে সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে। বরাদ্দ আসলে ওইসব বিদ্যালয় সংস্কার করা হবে।
এব্যাপরে আগৈলঝাড়া উপজেলা প্রকৌশলী রাজ কুমার গাইন সত্যাতা,স্বিকার করেছেন।
এব্যাপারে আগৈলঝাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল চন্দ্র দাস বলেন, আমরা প্রথমিক বিদ্যালয়ের ঝুঁকিপূর্ন ভবনের তালিকা প্রস্তুত করেছি। অতিদ্রুত গণশিক্ষা মন্ত্রনালয়ে তালিকা পাঠানো হবে, নতুন ভবন তৈরি ও সংস্ককারে জন্য।