পাবনার বেড়া থানার চাঞ্চল্যকর তিন পুলিশ হত্যা মামলায় অভিযুক্ত ৮ চরমপন্থির যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন রাজশাহীর আদালত। একই সাথে তাদের প্রত্যককে দশ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরো এক বছরের কারাদ- দেওয়া হয়েছে। আর এ মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় অপর তিন আসামীকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। বুধবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালের বিচারক অনুপ কুমার জনাকীর্ণ আদালতে এ রায় ঘোষণা করেন। দন্ডপ্রাপ্তরা নিষিদ্ধ ঘোষিত চরমপন্থি সংগঠন পূর্ববাংলা সর্বহারা পাটির সদস্য।
কারাদন্ডপ্রাপ্তরা হচ্ছে- পাবনা জেলার বেড়া উপজেলার ঢালাচর গ্রামের মৃত আক্কাস আলীর ছেলে জহুরুল ইসলাম (পলাতক), একই জেলার আটঘরিয়া চাঁদপুর গ্রামের মৃত ঢালু প্রামাণিকের ছেলে হাশেম ওরফে খোকন ওরফে বাচ্চু (পলাতক), রাজবাড়ী জেলার মাইছে ঘাঁটা গ্রামের মৃত চেনের উদ্দিনের ছেলে জোসন মোল্লা, বেড়া উপজেলার রাজধরদিয়া গ্রামের মৃত ওফাজ ফকিরের ছেলে নিজাম ফকির, ধারাই গ্রামের মৃত জনা মন্ডলের ছেলে রফিক ওরফে জৈটা রফিক, পশ্চিম কাছাদিয়া গ্রামের আলীর ছেলে আইয়ুব আলী ও শমসের সরদারের ছেলে শুকুর আলী সরদার এবং সুজানগর থানার পাকুরিয়া গ্রামের মৃত জেসের আলীর ছেলে জাহাঙ্গীর আলম ওরফে কানা আলম।
এ তথ্য নিশ্চিত করে রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আদালতের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট এন্তাজুল হক বাবু জানান, মামলায় মোট ১৬ আসামীর মধ্যে ৮ জনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদ- দিয়েছেন আদালত। আর অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তিন আসামীকে বেকসুর খালাস পেয়েছেন। বাকিরা বিভিন্ন সময় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ক্রসফায়ারে নিহত হয়েছেন। দন্ডপ্রাপ্ত আসামীর মধ্যে জহুরুল ইসলাম ও হাশেম ওরফে খোকন এখনো পলাতক রয়েছে।
মামলার ঊদৃতি দিয়ে পিপি বলেন, গত ২০১০ সালের ২০ জুলাই পাবনার বেড়ায় চরমপন্থিদের হাতে নিমর্মভাবে খুন হন তিন পুলিশ সদস্য। এরা হলেন- পাবনার বেড়া উপজেলার ঢালাচর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (উপ-পরিদর্শক) কফিল উদ্দিন (৫০), নায়েক ওয়াহেদ আলী (৩৫) ও কনস্টেবল শফিকুল ইসলাম (৩৫)। এ ঘটনায় পাবনার বেড়া থানার তৎকালীন পুলিশ কনস্টেবল রশিদুল ইসলাম বাদী হয়ে ২১ জুলাই একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর এ মামলায় ১৬ জনকে অভিযুক্ত করে ২০১১ সালের ৩১ অক্টোবর আদালতে চার্জশিট দেওয়া হয়। মামলাটি পরে দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ২০১৬ সালে রাজশাহী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল আদালতে স্থানান্তর করা হয়।
এদিকে, দীর্ঘ ৯ বছর পর সাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে এ রায় ঘোষণা করা হলেও ভিকটিম পরিবারের কাঙ্খিত প্রত্যাশা পূরণ হয়নি বলে আদালত চত্বরে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। তাদের প্রত্যাশা ছিল আসামীদের ফাঁসির রায় ঘোষণা করা হবে। আসামি পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট আবু বক্কর ও রাইসুল ইসলাম।