বগুড়ার ধুনটে স্বামীর দেয়া মোটাতাজাকরণ ট্যাবলেট খেয়ে রতœা খাতুন (২২) নামে এক গৃহবধুর করুন মৃত্যু হয়েছে। বুধবার দুপুরে উপজেলার চরনাটাবাড়ী গ্রাম থেকে পুলিশ ওই গৃহবধুর লাশ উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরন হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ নিহতের স্বামী শাহাদত হোসেন (৩০), তার মা সাহারা বেগম (৪৫) ও বোন রানী বেগমকে (২৩) আটক করেছে।
থানা পুলিশ জানায়, শেরপুর উপজেলার মোমিনপুর গ্রামের আমজাদ হোসেনের ছেলে শাহাদত হোসেনের সাথে গত তিন বছর আগে ধুনট উপজেলার চরনাটাবাড়ী গ্রামের গাজিউর রহমানের মেয়ে রতœা খাতুনের বিয়ে হয়। তাদের দাম্পত্য জীবনে ২ বছর বয়সের ছেলে সন্তান রয়েছে।
নিহতের বাবা গজিউর রহমান জানান, তার মেয়ে রতœা খাতুনের বিবাহের পর থেকেই তাদের দাম্পত্য জীবনে ঝগড়া-বিবাদ লেগেই থাকতো। বিষয়টি স্থানীয় ভাবে কয়েক বার আপস মিমাংসাও করা হয়। গত ২৩ এপ্রিল আমি, আমার স্ত্রী, জামাই ও আমার মেয়ে রতœার সাথে নন্দীগ্রাম থানার মুরাদপুর গ্রামে আমার নানা শশুর জয়নাল আবেদীনের বাড়িতে বেড়াতে যাই। যাওয়ার পথে জামাই শাহাদত হোসেন এক ঔষধের দোকান থেকে আমার মেয়ের জন্য মোটা হওয়ার ওষুধ কিনে দেয়। শাহাদত হোসেন রাতে খাবারের শেষে ঔষধটি আমার মেয়েকে খেতে বলে ও কাউকে জানাতে নিষেধ করে। রাত সাড়ে ৮টায় ঔষধটি খাবার পর আমার মেয়ের বমি শুরু হলে জামাই পালিয়ে যায়। তখন আমি ও আমার শ্যালক দোলা মিয়ার সহযোগিতায় মেয়েকে নিয়ে শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসি। সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার আমার মেয়ের শারীরিক অবস্থা বেগতিক দেখে তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরনের জন্য রেফার্ড করে। কিন্তু আমি রেফার্ডের কাগজপত্র বুঝতে না পেরে আমার মেয়েকে নিয়ে ধুনট উপজেলা হাসপাতালের দিকে রওনা দেই। কিন্তু পথিমধ্যে ধুনট উপজেলার মাঠপাড়া এলাকায় সিএনজির ভিতরেই আমার মেয়ে রতœার মৃত্যু হয়। পরে আমার মেয়েকে হাসপাতালে না নিয়ে আমার নিজ বাড়ীতে নিয়ে যাই।
ধুনট থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ (ওসি সার্বিক) ইসমাইল হোসেন বলেন, সংবাদ পেয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরন হয়েছে। তবে ঘটনাস্থান নন্দীগ্রাম থানা এলাকায় হওয়ায় সেখানে মামলা দায়েরের জন্য পরামর্শ দিয়েছি। এ ঘটনায় আটককৃত নিহতের স্বামী, মা ও বোন ধুনট থানা থেকে নন্দীগ্রাম থানায় সোপর্দ করা হবে।