প্রথম শ্রেনীর টিভি চ্যানেলের হেড অফ নিউজ সেদিন রহস্য করে বলছিলেন ‘ দৈনিক ধর্ষণ নামে একটি পত্রিকা বের করলে কেমন হয়?’ প্রতিদিন এত ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে যে তার বর্ণনা লিখতে হয়তো পত্রিকার পাতা শেষ হয়ে যাবে। তাই আক্ষেপ করে তিনি ধর্ষনের জন্য আলাদা পত্রিকার প্রকাশের কথা বললেন। বলা যায় ধর্ষণ এখন মহামারি আকার ধারন করেছে। বোধ করি হাল সময়ে ধর্ষকরা ক্ষেপেছে। ৪ মাসে ২ শতাধিক ধর্ষনের ঘটনা ঘটেছে। যা শুধু আলোচনায় এসেছে। এর বাইরে তো রয়েছে অনেক। লোক-লজ্জা বা সম্মানের ভয়ে প্রকাশ করেনি ভুক্তভোগীরা। আইনবিদরা বলছেন, এ পরিস্থিতির উন্নতির জন্য মামলার সঠিক তদন্ত ও আইনের কঠোর প্রয়োগ প্রয়োজন। সমাজবিজ্ঞানীরা বর্তমান সময়ে এ ধর্ষণকে ব্যাধি হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন। আর এ ব্যাধির জন্য দায়ী করেছেন পরিবার, সমাজ ও পারিপার্শ্বিক অবক্ষয়কে।
প্রকৃত সত্যটা হলো এই যে, এদেশে ধর্ষণ মামলায় আইনের প্রয়োগ খুব কম। তাই ধর্ষকরা ক্ষণে ক্ষনেই ক্ষেপে ওঠে। শহর গ্রাম গঞ্জে ধর্ষিত হয় নারী। বাড়িতে কর্মস্থলে পথে ধর্ষিত হয় নারী। ধর্ষকদেও কাছে শিশু বৃদ্ধাও রেহাই পায়না। মসজীদেও ইমামা, বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ডাক্তার নার্স আয়া বুয়া, সাংবাদিক লঞ্চিত করে নারীদের। আয়া, বুয়া, কচি, বুড়া কেউ বাদ যায় না; ধর্ষিত হয়।
প্রশ্ন হলো ধর্ষণ রোধের উপায় কি? দেশে এত ধর্ষণ হচ্ছে কেন? এ প্রশ্নের উত্তরে অনেকেই বলেন- ভাল মেয়েরা ধর্ষণের শিকার হয় না; পোশাকের সমস্যার কারণে মেয়েরা ধর্ষিত হয়। অনেকে আবার বলেন বেহায়াপনা করে স্বল্প কাপড়ে রাস্তায় ঘুরে বেড়ালে ধর্ষণ হবে না তো কি হবে? আর কোন আলেম বলবেন- ‘পর্দা প্রথায় ফিরে আসলে ধর্ষণ আর হবে না।’ আবার অনেকে বলবেন- ‘কঠোর শাস্তি দিলে ধর্ষন কমবে।’ সবটাই মানি। তবে শিশুরা ধর্ষিত হচ্ছে কেন? পরিসংখ্যানতো বলছে এদেশে যত ধর্ষনের ঘটনা ঘটে তার অর্ধেটা ১২ বছর পর্যন্ত শিশু। আইনের কঠোর প্রয়োগের মাধ্যমে ধর্ষকদের ধর্ষকরা কুরুচিপূর্ণ সভাব রুখে দিতে হবে।
কোথায় ধর্ষণ, নারী নির্যাতন হচ্ছে না? ধর্ষণ হচ্ছে, ফেনী, বনানীতে, ধর্ষণ হচ্ছে টেকনাফ থেকে তেতুলীয়ায়। সাভার,রূপগঞ্জ, টাঙ্গাইল, বরিশাল, নোয়াখালীসহ সারা দেশে ধর্ষণ চলছে। ধর্ষিত হচ্ছে শিশু, যুবতী, গৃহবধূ, বিধবা, বৃদ্ধা। ধর্ষক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, ডাক্তার, প্রকৌশলী, পুলিশ, মাওলানা, ড্রাইভার, হেলপার, রাজনৈতিক সংগঠনসহ সকল শ্রেণী পেশার নরপশু। কিছুতেই ধর্ষণ থামছে না। ধর্ষণের এ ব্যাপকতার পেছনে অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে, মূল্যবোধের অবনতি আর অপরাধীর শাস্তি না হওয়া। দেশে নারী নির্যাতন প্রতিরোধে যথেষ্ট শক্তিশালী আইন থাকা সত্ত্বেও নির্যাতনকারীরা রাজনৈতিক আশ্রয় প্রশয়সহ বিভিন্ন উপায়ে পার পেয়ে যায় বলেই ধর্ষণ থামছে না। কতক মানুষরূপী নরপশু সভ্যতার ভাবধারাকে পাল্টে দিতে সারাদেশে হায়েনার নখ মেলে বসে আছে।
বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের (বিএসএএফ) এক পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ২০১৮ সালের নভেম্বর মাস পর্যন্ত, অর্থাৎ গত ৪ বছরে সারা দেশে ২৯২২ শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। আর ধর্ষণচেষ্টা ও যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছে আরও ৬৩৯ জন শিশু।অন্যদিকে ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ২০১৯ সালের ১৫ এপ্রিল মাস পর্যন্ত, অর্থাৎ গত চার বছরে সারা দেশে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ১৩১ জন শিশুকে। এ ছাড়া ধর্ষণের পর অপমান সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে ১৯ জন শিশু।আর ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ২০১৯ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত, অর্থাৎ গত তিন বছরে সারা দেশে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে ২৩১ শিশু। একই সাথে এই তিন বছরে সারা দেশে ১১২ জন প্রতিবন্ধী শিশুও ধর্ষণের শিকার হয়েছে।
বিএসএএফের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪ সালে সারা দেশে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ১৯৯ শিশু। আর ধর্ষণচেষ্টা ও যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছে ২১ শিশু। কিন্তু পরের বছর, অর্থাৎ ২০১৫ সালে এসে শিশু নির্যাতনের সংখ্যা আরও বেড়ে যায়। ২০১৫ সালে সারা দেশে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৫২১ শিশু। আর ধর্ষণচেষ্টা ও যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছিল ১৪৩ শিশু। এ ছাড়াও ধর্ষণের পরে হত্যা করা হয় ৩০ শিশুকে এবং ধর্ষণের পরে আত্মহত্যা করে চার শিশু। ওই সংস্থার ২০১৬ সালের পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, ওই বছরে সারা দেশে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৪৪৬ জন শিশু। আর ধর্ষণ চেষ্টা ও যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছিল ১৩৪ জন শিশু। এ ছাড়াও ধর্ষণের পরে হত্যা করা হয় ২১ শিশুকে এবং ধর্ষণের পরে আত্মহত্যা করে দুই শিশু। ২০১৬ সালের এই পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ৬৮ শিশু ওই বছর সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছিল। এ ছাড়া সে বছর ৪২ জন প্রতিবন্ধী শিশুও ধর্ষণের শিকার হয়। বিএসএএফের ২০১৭ সালের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০১৭ সালে সারা দেশে ধর্ষণের শিকার হয় ৫৯৩ জন শিশু। আর ধর্ষণচেষ্টা ও যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছিল ১৬২ জন শিশু। এ ছাড়াও ধর্ষণের পরে হত্যা করা হয় ২২ শিশুকে এবং ধর্ষণের পরে আত্মহত্যা করে সাত শিশু। ২০১৭ সালের এই পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ৭০ জন শিশু ওই বছর সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে। আর ২০১৭ সালে সারা দেশে ৪৪ জন প্রতিবন্ধী শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এ ছাড়া সংস্থাটির সর্বশেষ পরিসখ্যান অনুযায়ী, ২০১৮ সালে সারা দেশে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৬৭১ শিশু। আর ধর্ষণচেষ্টা ও যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছিল ১৪৩ শিশু। ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল ১৫ পর্যন্ত সারা দেশে ধর্ষণের শিকার হয়েছে দেড় শতাধিক জন শিশু। আর ধর্ষণচেষ্টা ও যৌন নিপীড়নের শিকার হয় ১৭৯ শিশু।
নিত্যই ব্যভিচার ও ধর্ষণকামিতার ঘটনা ঘটছে তো ঘটছেই। রোধ হচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে থাকছে না বয়স, স্থান, কাল, পাত্রের ভেদ। রাতবিরাতে নয় শুধু, দিনদুপুরে প্রকাশ্যে ধর্ষণের ঘটনাও ঘটছে। অপসংস্কৃতি আর ভিনদেশি সংস্কৃতির আগ্রাসন আমাদের সমাজকে কতটা ক্ষতবিক্ষত করছে তা হাল আমলের ধর্ষণের চিত্র দেখলেই বেশ টের পাওয়া যায়। যৌন হয়রানি শুধু নারীর বিরুদ্ধে নয়, মানবতার বিরুদ্ধেও চরম অপরাধ। ভারত ও বাংলাদেশে ধর্ষণের অপরাধ বেশি হয়ে থাকে। খুন, ধর্ষণ বর্তমান পৃথিবীর নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। আমাদের দেশে এর মাত্রা যেন সব সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ধর্ষণের এ ব্যাপকতার পেছনে অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে, মূল্যবোধের অবনতি আর অপরাধীর শাস্তি না হওয়া। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর নির্লিপ্ততাই এজন্য দায়ী। নারী নির্যাতন প্রতিরোধে যথেষ্ট শক্তিশালী আইন থাকা সত্ত্বেও নির্যাতনকারীরা বিভিন্ন উপায়ে পার পেয়ে যায়। বাংলাদেশের আইন ভারতের চেয়েও শক্তিশালী। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধিত ২০০৩)-এর ৯(১) ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো পুরুষ কোনো নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করে তবে সে যাবজ্জীবন কারাদ-ে দন্ডিত হবে। একই আইনের ৯(২) ধারায় আছে, ‘ধর্ষণ বা ধর্ষণ-পরবর্তী কার্যকলাপের ফলে ধর্ষিত নারী বা শিশুর মৃত্যু ঘটলে ধর্ষকের মৃত্যুদন্ড বা যাবজ্জীবন কারাদ- হবে।’ একই সঙ্গে জরিমানার কথাও আছে। সর্বনিম্ন জরিমানা ১ লাখ টাকা। ৯(৩) ধারায় আছে, ‘যদি একাধিক ব্যক্তি দলবদ্ধভাবে কোনো নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করে এবং ওই ধর্ষণের ফলে কোনো নারী বা শিশু মারা যায় তাহলে প্রত্যেকের যাবজ্জীবন কারাদ- বা মৃত্যুদন্ড, কমপক্ষে ১ লাখ টাকা জরিমানা হবে।’ ভারতে এ ক্ষেত্রে শুধু যাবজ্জীবনের কথা বলা আছে।
মহিলা আইনজীবী সমিতির এক জরিপে জানা যায়, নানা কারণে ধর্ষণ মামলার ৯০ শতাংশ আসামি খালাস পেয়ে থাকে। অপরাধ বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রশাসনে অযোগ্য লোক থাকায় অপরাধীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় পার পেয়ে যাওয়াও এর আরেক কারণ। এ ছাড়া ফৌজদারি আইনের দুর্বলতার কারণে অপরাধীর উপযুক্ত শাস্তি হয় না। এ বিষয়ে জনগণের প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। তাহলেই এরা শাস্তি পাবে। শুধু আইন প্রয়োগের অভাবে এখানে নারী নির্যাতন ও ধর্ষণ মহামারী ব্যাপক রূপ নিয়েছে। আমাদের প্রচলিত ব্যবস্থায় অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান বেশ কঠিন। সব কিছুতেই আজ দলবাজি চলে। তাতে কিছু মানুষ এ ধরনের অপরাধ করার সাহস পাচ্ছে। যৌন নির্যাতনের সঙ্গে ক্ষমতার সম্পর্ক আছে। নারীর ওপর বলপ্রয়োগের বহিঃপ্রকাশ হিসেবেও যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটতে পারে। কখনও দেখা যায়, সামাজিকভাবে কোণঠাসা কোনো ব্যক্তি অন্য কোনো ব্যক্তির সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক গড়ার আশায় অলীক কল্পনা করতে থাকে। কিন্তু কাঙ্খিত সমাধান না পেয়ে, বলপ্রয়োগের পথ বেছে নেয়। ঘরে-বাইরে নারীর ওপর আগ্রাসী যৌন আচরণ, যৌন হয়রানি, যৌন নিপীড়ন, ধর্ষণ সবই পুরুষতান্ত্রিক ক্ষমতা কাঠামোতে নারীর অধস্তনতাই প্রকাশ করে নানারূপে। তাই ধর্ষণ, যৌন হয়রানি বা নিপীড়ন, নারীর সম্মতি ছাড়া তার ওপর যে কোনো ধরনের আগ্রাসী যৌন আচরণ ক্ষমতা প্রদর্শনের, দমন-পীড়নের, কর্তৃত্ব করার কুৎসিত বহিঃপ্রকাশ ছাড়া আর কিছুই নয়। দৃষ্টিভঙ্গি পুরুষতান্ত্রিক বলেই নারীকে তারা গণ্য করে অধস্তন লৈঙ্গিক পরিচয়ের বস্তু হিসেবে, যা পীড়নযোগ্য। এটা খুবই আশঙ্কার কথা যে, সমাজে বেশিরভাগ নারীই নিরাপদ নয়। যারা উচ্চবিত্ত, সমাজের ওপরতলার মানুষ, এ জাতীয় বিপদ তাদের ছুঁঁতে পারে কম। এদেশে নিপীড়নের শিকার হচ্ছে নিম্নবিত্ত আর মধ্যবিত্তরাই বেশি। যারা নিম্নবর্ণের বাসিন্দা, তারা সম্ভবত এখনও ধর্ষণকে স্বাভাবিক জ্ঞান করেন। ভয়ে চুপ থাকেন। ইজ্জত হারিয়েও মুখ খোলেন না। তারা জানেন, আইন-আদালত করলে তাদের ভাগ্যে উল্টো বিপত্তি ঘটবে। অন্যায় করে অপরাধীরা এভাবে পার পেয়ে যাচ্ছে বলেই দেশে ধর্ষণ বেড়ে গেছে। বর্তমানে আমরা ঈমানি শক্তি হারিয়েছি। দেশপ্রেম, সততা, নৈতিক মূল্যবোধ, যৌন কামনা ইত্যাদি নেতিবাচক প্রেরণা আমাদের অন্ধ করে ফেলেছে। তাই সমাজ থেকে সুখ, শাস্তি বা আনন্দ হারিয়ে যাচ্ছে। নিঃশর্ত ভালোবাসা বা ভক্তি কমে যাওয়ার কারণে আমাদের গঠনমূলক মনোভাব বা সৃষ্টিশীলতা নষ্ট হচ্ছে। এ কারণে বিপরীত লিঙ্গের প্রতি শ্রদ্ধার পরিবর্তে আমাদের ভোগের মনোভাব সৃষ্টি হচ্ছে। অনিয়ন্ত্রিত যৌন কামনার প্রভাবে আমাদের মধ্যে ধর্ষণ, জেনা, পরকীয়া ইত্যাদির প্রবণতা বাড়ছে। পার্শ্ববর্তী ভারতে ধর্ষণের ঘটনা ঘটলে হৈচৈ পড়ে যায়। এ ব্যাপারে আমাদের দেশের জনগণ একেবারেই নীরব। সচেতন কম। প্রতিবাদ হয় না, হলেও খুবই সামান্য।
ধর্ষণ রোধে আমাদের সচেতন হতে হবে। অবাধ মেলামেশার সুযোগ, লোভ-লালসা- নেশা, উচ্চাভিলাষ, সংস্কৃতির নামে অশ্লীল নাচ-গান, যৌন সুড়সুড়িমূলক বই-ম্যাগাজিন, অশ্লীল নাটক-সিনেমা ইত্যাদি মানুষকে প্রবলভাবে ব্যভিচারে প্ররোচিত করে, তা বর্জন করতে হবে। নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। ধর্মীয় শিক্ষা ও যৌন শিক্ষাগ্রহণ করতে হবে। বাজে সঙ্গ ও নেশা বর্জন করতে হবে।ধর্ষণের ভয়াবহতা থেকে বাঁচতে হলে কেবল আইনের কঠোর প্রয়োগেও কোনো কাজ হবে না। এর জন্য প্রয়োজন জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে নিজ নিজ পারিবারিক বলয়ে ধর্মানুশীলনে একনিষ্ঠতা, অশ্লীল সংস্কৃতিচর্চার পরিবর্তে শিক্ষণীয় বিনোদনমূলক ও শালীন সংস্কৃতিচর্চার প্রচলন নিশ্চিতকরণ। আর এটা করতে হলে সমাজের সর্বস্তরের মানুষ নিজ নিজ অবস্থান থেকে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। অপরাধ তদন্তে ও অপরাধীদের বিচারাধীন রায় পুলিশকে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে। ধর্ষক যে-ই হোক তাদের দ্রুত আটক করতে হবে। অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
সর্বোপরি, সরকারকে নারীর মর্যাদার আসন নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের বদলে যেতে হবে। আসুন আমরা নারীর ওপর লোলুপ দৃষ্টি নয়; মায়া-মমতার দৃষ্টিতে তাকাই। পরনারীকে কখনও মা, কখনও বোন, কখনোবা মেয়ে ভাবতে হবে। তবেই ধর্ষণ, নারী নির্যাতন কমে আসবে বলে আমাদের বিশ্বাস।
লেখক- মীর আবদুল আলীম, সাংবাদিক, কলামিষ্ট, গবেষক।