ভারত মহাসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি ঘণীভূত হচ্ছে, যা ঘূণিঝড়ে রুপ নিতে পারে। আগামি মে মাসের প্রথম সপ্তাহে বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলায় ঝড়সহ ভারি বৃষ্টির সম্ভবনা থাকায় ইরি-বোরো ধানের ক্ষতির আশঙ্কায় রয়েছে।
তাই এই উপজেলায় বোরো চাষীদের দ্রুত ধান কাটার জন্য আগাম সতর্কতা জারি করেছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে পাকা ধানের সম্ভাব্য ক্ষতির হাত থেকে কৃষকদের সাবধান করতেই এ পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
নন্দীগ্রাম উপজেলায় ইরি-বোরো মৌসুমে এবারও বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু কৃষকের মুখে হাসি ফুটতে না ফুটতেই শঙ্কা। মাঠভরা ফসল কিন্তু তা ঘরে তুলতে শ্রমিকেরও অভাব রয়েছে।
কৃষি অফিস সূত্র জানায়, বৃষ্টির পানি ও সেচের মাধ্যমে জমিতে প্রয়োজন মত পানি, সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করায় বোরোর ফলনও ভালো হয়েছে। পাকা ধানে ভরে উঠছে মাঠের পর মাঠ। কিন্তু বর্তমান আবহাওয়ার প্রেক্ষিতে যে কোন সময় প্রাকৃতিক দূর্যোগকের আশঙ্কা রয়েছে। যে কারণে উপজেলায় ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ পেকে যাওয়া ধান কাটতে কৃষকদের উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় পুরো উপজেলা ব্যাপী উঠান বৈঠকের পাশাপাশি মাঠে মাঠে কৃষকদের মাঝে সচেতনা সৃষ্টির লক্ষে কাজ করছে স্থানীয় কৃষি অফিস।
কৃষকরা জানায়, উপজেলা ধান ক্ষেতে অধিকাংশ জমির ৮০ থেকে ৯০শতাংশ ধান পেকেছে। কৃষি অফিসের পরামর্শে কৃষকরা ধান কাটার উদ্যোগ নিয়েছে। কারণ বর্তমান অবস্থায় ঝড় বা শিলাবৃষ্টি অথবা বড় ধরনের প্রাকৃতিক দূযোগ হলে কৃষকরা সর্বশান্ত হয়ে যাবে। তবে শ্রমিক সংকট ও শ্রমিকের মজুরি বেশি হওয়ায় কৃষকরা চরম দু:চিন্তায় রয়েছে।
উপজেলার কাথম গ্রামের কৃষক ফেরদৌস সরদার জানান, ‘ঝড়ি হবি বলি কৃষি বিভাগ ধান কাটবার কচ্ছে। ঝড়ির ভয়ে খ্যাতত কামলা লাগে দিমু। বাজারত খোঁজ লিয়ে দেকনো, ধানেত দাম ভাল। একই এলাকার কৃষক আবদুল লতিফ বলেন, মিটিং করে কচ্চে ঝড় হবি, জমিত থ্যাকে জলদি ধান কাটে লেও। শুনে হামার বুকটা তো ছাৎ করে উটিচ্চে। ধান না হয় কাটে লিয়ে আসনো। ঝড়ত যদি বাড়িঘর উল্টি যায়!’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মুহাম্মদ মশিদুল হক জানান, উপজেলায় চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে একটি পৌরসভাসহ উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের ১৯ হাজার ৭৩৫ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। মাঠে থাকা বোরো ধানের ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ পেকে যাওয়া ধান কাটতে বলা হচ্ছে। প্রাকৃতিক দূর্যোগে পুরো ফসল যাতে নষ্ট না হয়, সে জন্য উঠান বৈঠক, দলীয় আলোচনা, কৃষকদের পরামর্শসহ সচেতন করা হচ্ছে। তবে এতে আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।