কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান রুস্তম সংবাদ সম্মেলন করে ১০জন সদস্যের দূর্নীতির ফিরিস্তি তুলে ধরেন। শুক্রবার বিকালে ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, পরিষদের উদ্যোক্তা ও ১০জন সদস্য মিলে বাল্য বিবাহ, বিদেশগামীদের পাসপোর্ট তৈরি, চাকুরী প্রার্থীদের বয়স কম-বেশী করে অবৈধভাবে ১২৯৩টি জন্ম নিবন্ধন কার্ড প্রদান করেছেন। এর প্রত্যেকটিতে আমার স্বাক্ষর জাল করা হয়েছে। জন্ম নিবন্ধন আবেদন পত্রে চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর বাধ্যতামূলক হওয়া সত্ত্বেও কোন আবেদন পত্রে আমার স্বাক্ষর গ্রহণ করা হয় নাই। এ কার্যক্রমে অনিয়ম ও অসদুপায় অবলম্বন করে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ করেন। এর প্রতিবাদ করায় আমার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব দাখিল করেন পরিষদের ১০জন সদস্য। অনাস্থা দেয়ার পর এলজিএসপি প্রকল্পের টাকা, আয়কর, ট্যাক্সের টাকা আত্মসাৎ করার প্রমাণ রয়েছে। তাছাড়া বয়স্ক ভাতা, মৃত্যুর সনদপত্র, ৪০ দিনের কর্মসৃজন প্রকল্পে ১৯জন লোক নিজেদের আত্মীয় স্বজনের নাম দিয়ে কাজ না করিয়ে টাকা উত্তোলন করে আত্মসাতের অভিযোগ করেন এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের আহবান জানান। এ ব্যাপারে তিনি স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব বরাবরে একটি লিখিত আবেদনও করেছেন।
অত্র পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান রুস্তমের বিরুদ্ধে বিগত ০৩/০৯/২০১৮ তারিখে ৯জন সদস্য স্বাক্ষরিত স্থানীয় সরকার ইউনিয়ন পরিষদ আইন ২০০৯ এর ৩৯নং অনুচ্ছেদের উপ ধারা (১) অনুযায়ী ১% তহবিলের অর্থ আত্মসাৎ, বেরি বাঁধ প্রকল্পের কাজ না করে টাকা আত্মসাত, বাজারের কসাই এর নিকট থেকে বিনা রশিদে টাকা উত্তোলন, ভূয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ, হোল্ডিং ট্যাক্স এর টাকা আত্মসাৎ, পরিষদের নির্বাচিত সদস্যদের সাথে অসদাচরণ, ট্রেড লাইসেন্স এর টাকা রাজস্ব খাতে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ ও মাদক সেবন করে অস্বাভাবিক আচরণসহ নানা দূর্নীতির অভিযোগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে একটি অনাস্থা প্রস্তাব দাখিল করেন।
এই অনাস্থা প্রস্তাবে আনীত অভিযোগের প্রেক্ষিতে সহকারী কমিশনার (ভূমি)কে তদন্তভার দেয়া হয়। সহকারী কমিশনার (ভূমি) একবার তদন্তও করে যান। কিন্তু অদৃশ্য কারণে তদন্ত প্রতিবেদন আলোরমুখ দেখে নি।
এলাকার বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হান্নান ভূঞা বলেন, চেয়ারম্যান এবং মেম্বারদের ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে পরিষদের অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। পরিষদের সার্বিক কার্যক্রমে মারাত্মক বিঘেœর সৃষ্টি হচ্ছে। জনগণ সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে দূর্ভোগ পোহাচ্ছে। সাধারণ মানুষ দ্রুত এই অচলাবস্থার অবসান চায়।
তদন্তের বিষয়ে জানতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাত জাহান কেয়ার মুঠোফোনে বেশ কয়েক বার চেষ্টা করে ফোন রিসিভ না করায় জানা সম্ভব হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে সংরক্ষিত আসনের সদস্য আলেয়া খাতুন, স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তি, দুস্থ নারী, ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।