পুঁজিবাজার ‘ঠিকই আছে’ দাবি করে সাংবাদিকদের দোষারোপ করার এক সপ্তাহের মাথায় সংসদে গিয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বললেন অন্য কথা। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, পুঁজিবাজার এখন সরকারের নিয়ন্ত্রণে নাই। তবে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নাই, আমি এটাও বলব না। পুঁজিবাজারে যেসব সমস্যা আছে, এগুলো আমরা চিহ্নিত করেছি। সমস্যার সবই একে একে করে সমাধান দেব।
রোববার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে এক সংসদ সদস্যের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন অর্থমন্ত্রী। এ সময় ব্যাংক ঋণের সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনার কথাও বলেন অর্থমন্ত্রী।
আগামী বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য প্রণোদনা থাকবে বলে জানান অর্থমন্ত্রী। তবে তা কী পরিমাণ সেটি নির্দিষ্ট করে বলতে চাননি তিনি।
কিন্তু গত ২২ এপ্রিলে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকের পর অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল দাবি করেন, পুঁজিবাজার ঠিকই আছে, যে ওঠানামা হচ্ছে সেটা স্বাভাবিক।
“আপনারা তো পত্রিকায় লিখতেছেন যে পুঁজিবাজার নাই; বাংলাদেশ নাই। আমরা নাই- এরকম লেখালেখি শুরু করছেন। কোথায় সেরকম ঘটনা ঘটছে? মার্কেট কোথায় ফল করছে?
দেশের পুঁজিবাজার এই মুহূর্তে ‘সঠিক জায়গায়’ আছে দাবি করে তিনি সেদিন বলেন, “এক সময় পিই ৮০-৯০ এ চলে গেছিল; এখন পিই আছে ২০ এর নিচে, ১৫ এর ঘরে। এটা খুব ভালো অবস্থা।” ‘স্বীকার করতে দোষ নেই’
দীর্ঘদিন মন্দা দশার পর জাতীয় নির্বাচনের আগে ১৭ ডিসেম্বর থেকে দেশে পুঁজিবাজারের সূচক বাড়তে শুরু করে। ৩০ ডিসেম্বর ভোটের পর বাজার চাঙ্গাভাবে ফিরে আসে। ২৪ জানুয়ারি ডিএসইএক্স বেড়ে ৫৯৫০ পয়েন্ট হয়।
কিন্তু ৩০ জানুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংক জানুয়ারি-জুন মেয়াদের মুদ্রানীতি ঘোষণার পর থেকেই বাজারে পতন শুরু হয়। রোববার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন শেষ হয় সূচকের ঘরে ৫ হাজার ২৩৮ পয়েন্ট নিয়ে।
এই তিন মাসে ঢাকার বাজারে সূচক কমেছে ৭১২ পয়েন্ট বা প্রায় ১২ দশমিক ৫২ শতাংশ। লেনদেন কমতে কমতে ৩৪৪ কোটি টাকায়, যা জানুয়ারির শেষ দিকে ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকায় উঠেছিল।
এই পরিস্থিতিতে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের একটি সংগঠন রোববারও মতিঝিলে ডিএসই ভবনের সামনে বিক্ষোভ করে। সেখান থেকে সোমবার ডিএসইর সামনে প্রতীক অনশনের ঘোষণা দেওয়া হয়।