অবশেষে চট্টগ্রাম বন্দরের চাঞ্চল্যকর তরল কোকেন জব্দের সেই মামলায় চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার মহানগর দায়রা জজ আকবর হোসেন মৃধার আদালত ওই আদেশ দেন। এর আগে নগর গোয়েন্দা পুলিশের কাছ থেকে তথ্য পেয়ে তরল কোকেন সন্দেহে ২০১৫ সালের ৬ জুন রাতে বন্দরে একটি কনটেইনার সিলগালা করেন শুল্ক গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। এরপর ৮ জুন এটি খুলে ১০৭টি ড্রামের প্রতিটিতে ১শ’৮৫ কেজি করে সূর্যমুখী তেল পাওয়া যায়। তেলের নমুনার প্রাথমিক পরীক্ষায় কোকেনের প্রথমে অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। ঘটনাটি ফলাও করে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে প্রশাসনের ওপরের মহলের নির্দেশে উন্নত ল্যাবে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। ওই বছরের ২৭ জুন শুল্ক গোয়েন্দারা কেমিক্যাল পরীক্ষায় তরল কোকেনের অস্তিত্ব খুঁজে পায়। একপর্যায়ে ২৮ জুন চট্টগ্রাম বন্দর থানার এসআই ওসমান গনি বাদী হয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের আসামি করে মামলা দায়ের করেন। এতে আসামি করা হয় খানজাহান আলী লিমিটেডের চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ ও তার ভাই খানজাহান আলী লিমিটেডের মালিকানাধীন প্রাইম হ্যাচারির ব্যবস্থাপক মোস্তাক আহমেদকে। তখন শহরে গুঞ্জন উঠে এদের নির্দেশেই কোকেন আমদানি করা হয়। পরে আদালতের নির্দেশে চোরাচালান সংক্রান্ত বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫ (বি) ধারা সংযুক্ত করা হয়। একই বছরের ১৯ নভেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। এতে গ্রেফতার হওয়া ৬জনের সঙ্গে বিদেশে অবস্থানরত দু’জনসহ মোট ৮ জনকে আসামি করা হয়। তবে এতে খানজাহান আলী লিমিটেডের মালিক নূর মোহাম্মদকে ও তার ভাই মোস্তাক আহমেদকে অভিযোগপত্রে অব্যাহতি দেওয়া হয়। পরে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে কারণে মামলা অধিকতর তদন্ত শেষে নূর মোহাম্মদ ও তার ভাই মোস্তাক আহমেদ এবং আগের আটজনসহ ১০ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়া হয়। ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও র্যাব-৭ তৎকালীন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহম্মদ মহিউদ্দিন ফারুকী অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ফখরুদ্দীন চৌধুরীও। তিনি বলেন, তরল কোকেন জব্দের মামলায় চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আদালত। এ বছরের ১৯ মে মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করেছেন সংশ্লিষ্ট আদালত।