জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যেসব শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) অধিভুক্ত হয়েছে, তাদের ভোগান্তি লাঘব ও সেশনজট নিরসনকল্পে প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে বিশেষ পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সোমবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ২৮ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের দাবি পর্যালোচনা, বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজের বিকেন্দ্রীকরণ, শিক্ষার্থীদের সেশনজট নিরসন ও সার্বিক শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে ঢাবি উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত হয়। সাত কলেজের কার্যক্রম বিকেন্দ্রীকরণ করা হবে জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রমের যেকোনো সমস্যা স্ব-স্ব কলেজের অধ্যক্ষদের মাধ্যমে দ্রুততম সময়ে নিষ্পত্তি করা হবে। অধ্যক্ষরা শিক্ষার্থীদের যেকোনো আবেদনের বিষয়ে তথ্য উপাত্ত যাচাই করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্ধারিত ডেস্কে (ডেডিকেটেড ডেস্ক) পাঠাবেন। পরীক্ষা/ ভর্তি/ফলাফল/রেজিস্ট্রেশন প্রভৃতি সংক্রান্ত যেকোনো তথ্য শিক্ষার্থীরা স্ব-স্ব কলেজের অধ্যক্ষ/কলেজ অফিস থেকে জানতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনে অধ্যক্ষ/কলেজ অফিস বিশ্ববিদ্যালয়ের সাত কলেজের ডেডিকেটেড ডেস্কের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডেপুটি রেজিস্ট্রারের সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে যোগাযোগ করবেন। কোনো শিক্ষার্থীর তথ্যের জন্য/দরখাস্ত দেওয়ার জন্য সময় ও শ্রম নষ্ট করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসে আসতে হবে না। বিশেষ পরীক্ষা নেওয়া হবে উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, নম্বর স্থগিত ও সর্বোচ্চ দুই বিষয়ে অকৃতকার্য হওয়া শিক্ষার্থীরা শর্তসাপেক্ষে পরবর্তী শ্রেণিতে (প্রিলিমিনারি/মাস্টার্স শেষ পর্ব) ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবেন। তবে সংশ্লিষ্ট শ্রেণির চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশগ্রহণের আগে পূর্ববর্তী শ্রেণির অকৃতকার্য বিষয়ে উত্তীর্ণ হতে হবে। যেসব শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে, তাদেরও বিশেষ বিবেচনায় সংশ্লিষ্ট পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হবে। এছাড়া পরীক্ষার ফলাফল দ্রুত প্রকাশের সুবিধার্থে অন্যান্য অধিভুক্ত ও উপাদানকল্প প্রতিষ্ঠানের মতো পরীক্ষা কেন্দ্র থেকেই সংশ্লিষ্ট পরীক্ষকরা উত্তরপত্র সংগ্রহ করবেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উত্তরপত্র মূল্যায়ন করে নম্বর পরীক্ষা কমিটির সভাপতি/পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কাছে জমা দেবেন। উত্তরপত্র স্ব-স্ব কলেজ নিজ দায়িত্বে সংরক্ষণ করবে। সভায় অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রণয়নের লক্ষ্যে সাত কলেজের অধ্যক্ষদের সমন্বয়ে একটি কমিটি এবং মৌখিক পরীক্ষা দ্রুততম সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে প্রতি কলেজের জন্য একটি করে ভাইভা বোর্ড গঠন করার সিদ্ধান্ত হয়।
অধিভুক্তি বাতিলের দাবি ঢাবি শিক্ষার্থীদের: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) থেকে ২০১৯-২০ সেশনে রাজধানীর সরকারি সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সোমবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা টিএসসি, রাজু ভাস্কর্য এলাকায় অবস্থান নিয়ে এ কর্মসূচি পালন করে। পরে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কার্যালয় অভিমুখে স্মারকলিপি জমা দিতে রওয়ানা দেন। আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী রিফাতুল হক শাওন বলেন, আমরা সাত কলেজের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যে আমাদের কম গুরুত্ব দিচ্ছে, শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি হচ্ছে এসব কারণের প্রতিবাদে আন্দোলন করছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে ওই শিক্ষার্থীদের কাজের জন্য আমরা নিজেরা হয়রানির শিকার হচ্ছি। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। বিশাল সংখ্যক অধিভুক্ত শিক্ষার্থীদের কারণে শিক্ষকদের উত্তরপত্র মূল্যায়নে সমস্যা হচ্ছে। আমাদের রেজাল্ট দিতে যেখানে পাঁচ মাসের সময় লাগছে, সেখানে অধিভুক্ত শিক্ষার্থীদের ৯০ দিনের মধ্যে রেজাল্ট দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে। ঢাবির ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী মিনহাজ বলেন, অধিভুক্ত শিক্ষার্থীরাও ঢাবির অধীনে থাকতে চাচ্ছে না, তাদেরও হয়রানি হচ্ছে। আমরা চাই সবাই ভালো থাকুক। তাদের কারণে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিয়মিত শিক্ষার্থীদের কার্যক্রম চালাতে হিমশিম খাচ্ছে।