সৈয়দপুর উপজেলার ১নং কামারপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম লোকমানের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ করলেন ওই পরিষদের সদস্য সেলিনা বেগম, মমিনুল ইসলাম, আতাউর রহমান, কদর বানু, আইনুল হক, ফজলুল হক, মোতাহার, জাকির ও আনছারুল হক। লিখিতভাবে গত ২১ এপ্রিল এ অভিযোগ দায়ের করেছেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দপুর বরাবর। গত ২০১৬ সালের ১৪ আগস্ট শপথ গ্রহণের পর থেকে ওই চেয়ারম্যান ঠিকমত পরিষদে বসেন না। প্রকল্পের মাধ্যমে ইউপি সদস্যের নিয়ে কাজ করার কথা থাকলেও তিনি কোন প্রকার প্রকল্প কমিটি গঠন না করেই নিজেই সমস্ত কাজ পরিচালনা করে আসছেন। প্রতি মাসে সদস্যদের নিয়ে মিটিং করার নিয়ম থাকলেও তিনি তা করছেন প্রায় ৪ থেকে ৫ মাস পরে। ফলে ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন প্রকার উন্নয়নমূলক কাজ বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদের বিদ্যুৎবিল ঠিকমত পরিশোধ করা হয় না। অপরপাশে সাইড লাইন দেয়া হয়েছে ৯ থেকে ১০টি দোকানে। সাইড লাইনের ওই বিদ্যু বিলগুলো প্রতি মাসে কোথায় যাচ্ছে তার কোন হিসেব নেই। গত ২০১৫-২০১৬ অর্থ বছরের এলজিএসপি প্রকল্পের কাজ এখন পর্যন্ত সমাপ্ত হয়নি। এদিকে ২০১৬-২০১৭ ও ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে প্রায় ২৭ লাখ টাকা বাজেট পাস হলেও চেয়ারম্যান কোন প্রকার পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। পরিষদের ট্যাক্স আদায় কমিটি গঠন না করে তিনি নিজেই ট্যাক্স উত্তোলন করছেন। শপথ গ্রহণের পর প্রায় ২৫ লাখ টাকার ট্যাক্স আদায় করিয়া ইউপি সদস্য-সদস্যাগণকে যৎ সামান্য ভাতা প্রদান করা হয়, বাকী টাকার হিসাব নেই। অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়েছে ইউনিয়নে মোট ১৬টি ইটভাটা রয়েছে। যার বাৎসরিক ট্যাক্স আদায় করা হয় প্রতি ভাঁটা থেকে ৩০ হাজার টাকা করে। সে হিসেবে ১৬টি ভাঁটা থেকে বছরে ট্যাক্স আদায় করা হয় ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা। ২টি কোল্ড স্টোর থেকে বছরে ১ লাখ টাকা, ২টি ফিলিং স্টেশন থেকে বছরে ৪০ হাজার টাকা, ২টি অটো রাইস মিল থেকে ১ লাখ টাকা, ২টি তারকাঁটা ফ্যাক্টরি থেকে ২০ হাজার টাকা, ৮টি স’মিল থেকে ১৬ হাজার টাকা ১৬ হাজার টাকা, ২টি হার্ডবোড ফ্যাক্টরি থেকে ২ লাখ টাকা, ১টি টিউবওয়েল ফ্যাক্টরি থেকে ১০ হাজার টাকা, ১টি প্লাস্টিক বদনা ফ্যাক্টরি থেকে ১০ হাজার টাকা, ১টি তৈল শোধনাগার ফ্যাক্টরি থেকে ২০ হাজার টাকা, ১টি পলিথিন ফ্যাক্টরি থেকে ১০ হাজার টাকা, ১টি হাড্ডি মিল থেকে ৫ হাজার টাকা ১টি স্বাদুপানি উপ-কেন্দ্র থেকে ৪০ হাজার টাকা। এছাড়াও ছোট ও মাঝারি প্রায় ৫০টির মতো শিল্পপ্রতিষ্ঠান রয়েছে এ ইউনিয়নে। এত কিছু আয়ের উৎস থাকার পরও নিয়মিত বেতন ভাতা মেলেনা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যদের। এ সকল অনিয়মের অভিযোগ বারবার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সদস্যরা আনলেও তা কোন কাজে আসেনি। চেয়ারম্যানের এ সকল অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার বিচার চেয়ে ইউনিয়ন পরিষদের ৯ জন সদস্য স্বাক্ষরিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে। এ ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রেজাউল করিম লোকমানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলো সত্য নয়।