বাংলাদেশে অবস্থান করেছে ঘূর্ণিঝড় 'ফণী'। এটি আজ শনিবার সকালে সাতক্ষীরা, যশোর ও খুলনা অঞ্চল এবং এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় প্রবেশ করে। আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে (ক্রমিক নম্বর-৪৩) এমনটাই জানানো হয়েছে।
তবে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়টি দুর্বল হয়ে এখন ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে এবং সারাদেশে দমকা/ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি/বজ্রবৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। তবে সাগর খুবই উত্তাল।
শুক্রবার ওড়িষা উপকূলে আঘাত হানার সময় ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্রে বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৭৫ থেকে ১৮৫ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৯৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছিল। এরপর বৃষ্টি ঝরিয়ে ক্রমশ দুর্বল হতে থাকে এটি।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, বাংলাদেশে ঢোকার পর ফণী আরও উত্তরে অগ্রসর হচ্ছে। এর প্রভাবে ওই এলাকার আকাশ মেঘলা রয়েছে এবং বইছে ঝড়ো হাওয়া।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক শামসুদ্দিন আহমেদ ঝড়টি দুর্বল হওয়ার দিকটি দেখিয়ে সকাল ১০টায় সাংবাদিকদের বলেন, আশঙ্কা অনেকটাই কেটে গেছে।
তিনি বলেন, ঝড়টি মধ্যাঞ্চলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে, ওই সব জায়গায় বজ্রবৃষ্টি, ভারি বর্ষণ হবে।
রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহের পাশাপাশি সিলেট অঞ্চলেও বৃষ্টিপাতের আভাস দেন শামসুদ্দিন।
এদিকে মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ৭ নম্বর (পুন:) নম্বর বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা ও তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোতে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত (পুন:) সংকেতের আওতায় থাকবে।
চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর (পুন:) বিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর ও তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৬ নম্বর বিপদ (পুন:) সংকেতের আওতায় থাকবে।
এছাড়া কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৪ (চার) নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নম্বর দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় ও অমাবস্যার প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, ভোলা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা ও তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ২-৪ ফুট অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
ঝড় মোকাবেলার যাবতীয় প্রস্তুতি সেরে রেখেছে সরকার।