খুলনার কয়রা উপজেলায় ঘূর্ণিঝড় ফণির প্রভাবে গত তিন দিনে ৪ শতাধিক কাঁচা ঘর বাড়ি সম্পূর্ন বিধ্বস্থ হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে প্রায় ৮ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ। শনিবার দুপুরের জোয়ারে ক্ষতিগ্রস্থ বেড়িবাঁধের তিনটি স্থানে ছাপিয়ে নদীর পানি লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। তবে ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধের ওই সব স্থানে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সহযোগীতায় লোকজন মেরামতের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে শুক্রবার যারা স্থানীয় ১১৬টি সাইক্লোন শেল্টারে আশ্রয় নিয়েছিলেন তারা শনিবার দুপুরের পর থেকে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন। তবে যাদের ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে তাদের অনেকেই সাইক্লোন শেল্টারে অবস্থান করছেন। কয়রা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার পিআইও, কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ঘূণিঝড় ফণির কারণে গত তিন দিনে (বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার) উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে ৪৩৩ টি কাঁচা ঘর সম্পূর্নরূপে বিধ্বস্থ হয়েছে। এ ছাড়া ১ হাজার ৪০০ কাঁচা ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এতে কিছু স্থানে বোরো ধানের ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে স্থানীয় চিংড়ি ঘেরের কোন ক্ষতি হয়নি। ফণির প্রভাবে স্থানীয় নদীতে পানি বৃদ্ধি হওয়ায় ৮ কিলোমিটার বেড়ি বাঁধ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে কয়রা সদর ইউনিয়নের হরিণখোলা, ঘাটাখালি, উত্তর বেদকাশি ইউনিয়নের গাববুনিয়া, মহারাজপুর ইউনিয়নের দশহালিয়া ও দক্ষিনবেদকাশি ইউনিয়নের মাটিয়াভাঙ্গা ও চরামুখা এলাকা। এসব এলাকায় বাঁধ উপচে নদীর পানি প্রবেশ করেছে। ঘাটাখালি গ্রামের আত্তাব শেখ বলেন, ‘ঝড়ে ঘরবাড়ি ও গাছগাছালির ক্ষতি হলিও ঘেরের মাছ ভাল আছে ভেবে কিছুটা স্বস্তিতে আছি। তবে বাঁন্ধের যে অবস্থা তাতে কখন কি হইয়ে যায় বুঝতি পারতিছি নে। ’মাটিয়াভাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য গাজী বেলাল হোসেন জানিয়েছেন, গ্রামের বেশিরভাগ লোকের ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। অনেকের ঘরের টিনের চাল উড়ে গেছে। তারা সাইক্লোন শেল্টারে অবস্থান করছেন। তবে স্থানীয়দের কথা ফনির আতঙ্ক কেটে গেলেও পাউবোর বেড়িবাধ ভাঙ্গন আতঙ্ক এখনও কাটেনি। কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিমুল কুমার সাহা জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। তাৎক্ষনিকভাবে ঘরবাড়ি মেরামতের জন্য কিছু সহযোগীতা করা হয়েছে। বাকিদের দ্রুত সহযোগীতা করা হবে। উল্লেখ্য, ঘূর্ণিঝড় ফণির কারণে গত শুক্রবার কয়রা উপজেলার ১১৬টি সাইক্লোন শেল্টারে ৮৯ হাজার মানুষ আশ্রয় গ্রহন করে। শনিবার দুপুরের পর অধিকাংশ লোকজন বাড়ি ফিরে গেছে। তবে ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় এ মুহুর্তে ৪ শতাধিক লোক বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। কয়রা-পাইকগাছার সংসদ সদস্য আলহাজ¦ মোঃ আক্তারুজ্জামান বাবু ও কয়রা উপজেলা পরিষদের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান আলহাজ¦ এস এম শফিকুল ইসলাম ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষের খোজখবর নেন ও ভাঙ্গন কবলিত বেড়িবাধ পরিদর্শন করেছেন।