ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ শহরে শতবর্ষী রেইন্ট্রি গাছের শুকনা ডাল ভেঙ্গে অল্পের জন্য প্রানে রক্ষা পেয়েছেন পথচারীরা। শনিবার সকালে শহরের বৈশাখী মোড়ে রাজু টি ষ্টোরের উপর ডালটি ভেঙ্গে পড়লেও বিদ্যুৎ ও ডিসের তারের কারণে অল্পের জন্য বেচে যায় ৪/৫ টি তাজা প্রাণ। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছে, ফনির ঝড়ো হওয়া না হলেও মৃদু বাতাসেই ভেঙ্গে পড়েছিল ওই ডালটি। তবে ইতঃপূর্বে ডাল ভেঙ্গে পড়ে দু’জন নিহত সহ অনেকেই আহত হয়েছেন।
ঘটনাস্থল বৈশাখী মোড়ে গাছের নিচের চা দোকানী রাজু জানায়, প্রতিদিনের ন্যায় সকালে তার চায়ের দোকানে ৫/৬ জন খরিদ্দার চা পান করছিলেন। সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে হটাৎ তার দোকানের উপর শতবর্ষী রেইন্ট্রি গাছের একটি শুকনা ডাল ভেঙ্গে পড়ে। তবে ডালটি গাছের নিচে থাকা বিদ্যুৎ ও ডিসের তারের উপরে আটকে যাওয়ায় অল্পের জন্য বেচে যান তারা। তিনি বলেন, শুকনা ডালটি সরাসরি তার দোকানের উপরে পড়লে অনেকের হতাহত হওয়ার শংকা ছিল।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৬ সেপ্টেম্বর শহরের নতুন বাজারে কেনাকাটা করতে এসে কালীগঞ্জ পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তা আবদুর রউফের স্ত্রী ফাহমিদা খাতুনের মাথার উপর শুকনা ডাল ভেঙ্গে ঘটনাস্থলে নিহত হয়েছিল। এরই দু’বছর আগে শহরের মোবারকগঞ্জ চিনিকলের গেটের সন্মুখে বাসার ছাদের উপর ডাল পড়ে বলিদাপাড়া গ্রামের মোফাজ্জেল হোসেনের স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন নিহত হয়। এভাবে প্রায়ই শুকনো ডাল পড়ে প্রতিদিনই কোন না কোন সড়কের পথচারীরা আহত হচ্ছেন। এ সকল ঘটনার কথা তুলে ধরে সে সময়ে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হয়। এ নিয়ে টনক নড়ে প্রশাসনের। পরে উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভাতেও জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিকসহ সকলেই ঝুঁকিপূর্ণ গাছ কেটে মানুষকে ঝুঁকিমুক্ত করার দাবি তোলেন। এরপর জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের তড়িৎ সিদ্ধান্তে ঝুঁকিপূর্ণ গাছের শুকনা ডাল কাঁটা শুরু হয়। কিন্তু সে সময়ে কয়েকটি গাছের শুকনা ডাল কাটলেও তাজা ডাল কর্তন নিয়ে জটিলতায় ডাল কাঁটা বন্ধ হয়ে পড়ে। গত মাসেও পূনরায় ডাল কাঁটা শুরু হলেও বিভিন্ন কারণে তা বন্ধ হয়ে পড়ে। ডাল কাটার সময় কতিপয় অসাধু ব্যাক্তিরা শুকনা গাছের ডাল কাটার সাথে কাঁচা মোটা ডাল কাঁটা শুরু করে। বিষয়টি অনেকের চোখে পড়লে তা নিয়ে উঠে সমালোচনার ঝড়, ফলে ডাল কাঁটা বন্ধ হয়ে যায়।
স্থানীয় ভুক্তভোগীরা জানায়, সঠিক তত্বাবধানের অভাবে আজও সেই ঝুঁকিপূর্ণ গাছের শুকনা ডাল কাঁটা সম্ভব হয়নি। যে কারণে প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুকি নিয়েই চলতে হচ্ছে পথচারীদের।