বড় ধরনের কোন ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াই খুলনার উপকুলিয় উপজেলা দাকোপে ঘূর্ণিঝড় ফণী আতংকের অবসান ঘটেছে। ঝড়ের প্রভাবে নদীতে পানির চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার ১টি স্থানে বাঁধ ভেঙে এলাকা প্লাবিত হয়, এ ছাড়া একাধিক স্থানে বাঁধ ছাপিয়ে পানি প্রবেশ করে। এ ঘটনায় কয়েক শ’ পরিবার সম্পূর্ন ক্ষতিগ্রস্থ এবং দেড় হাজার পরিবার আংশিক ক্ষতির সম্মুক্ষিন এমন দাবী উপজেলা প্রশাসনের।
সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ফণীর দূর্যোগ মোকাবেলায় দাকোপ উপজেলা প্রশাসন সর্বাতœক প্রস্তুতি গ্রহন করেছিলো। দু’দিনের টানা উদ্বেগ উৎকন্ঠার অবসান ঘটেছে আবহাওয়া দপ্তরের দেওয়া সর্বশেষ তথ্যের মধ্যদিয়ে। শুক্রবার রাতভর বৃষ্টি এবং ঝড়ো হাওয়া বইয়ে যায়। উপজেলার ৯৯টি সাইক্লোন শেল্টারসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভবনে শুক্রবার রাতে আনুমানিক লক্ষাধীক মানুষ দূর্যোগ আতঙ্কে অবস্থান করে। আশ্রয় শিবির গুলোতে সরকারের পক্ষ থেকে শুকনো খাবার বিতরন করা হয়। তবে স্থানীয় বাজারে খাবারের অপ্রতুলতার কারণে অনেক শিবিরের মানুষ খাবার না পেয়ে প্রায় অভুক্ত অবস্থায় রাত কাটায় বলে জানা যায়। শুক্রবার গভীর রাতে উপজেলার বানীশান্তা বাজার এলাকার আনুমানিক ৪০ মিটার বেড়ীবাঁধ ভেঙে এলাকা প্লাবিত হয়। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী বাঁধটি আটকানো সম্ভব হয়েছে। নব নির্বাচীত উপজেলা চেয়ারম্যান মুনসুর আলী খান ক্ষতিগ্রস্থ বানীশান্তা এলাকা পরিদর্শন করেন। এ ছাড়া সুতারখালী ইউনিয়নের একাধিক স্থানে বাঁধ ছাপিয়ে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করার খবর পাওয়া যায়। উপজেলা প্রশাসনের তথ্য মতে বানীশান্তা, গুনারী, খোনা, গড়খালী, ঝালবুনিয়া, কামিনীবাসিয়া, পানখালী গেট এলাকার সর্বমোট আনুমানিক ২ কিলোমিটার বাঁধ মারাতœক ঝুকির মুখে। দাকোপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল ওয়াদুদ এবং উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শেখ আবদুল কাদের পৃথক ভাবে জানায়, ফণীর প্রভাবে শতাধীক ঘরবাড়ী সম্পূর্নরুপে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে, এ ছাড়া দেড় হাজারের মত পরিবার আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বানীশান্তা এলাকায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের জন্য ত্রান সহায়তা হিসেবে তাৎক্ষনিকভাবে ৫ শ’ পরিবারের জন্য চাল, ডাল, তৈল, লবন, চিনি, ম্যাচ, মোমবাতি, বিস্কুট, চিড়া, মুড়ি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে তারা দাবী করেছেন। বানীশান্তা ইউপি চেয়ারম্যান সুদেব রায় ২ শতাধীক পরিবার প্লাবিত হওয়ার কথা তুলে ধরে বলেন, ভেঙে যাওয়া বাঁধটি আপাতাত মেরামত করা হয়েছে। কিন্তু ইউনিয়নবাসীর নিরাপত্তায় সেখানে উন্নত বাঁধ নির্মান জরুরী। কামারখোলা ইউপি চেয়ারম্যান পঞ্চানন মন্ডল জালিয়াখালী, রেখামারী এবং পারজয়নাগর এলাকার বাঁধ ঝুকিপূর্ন বলে দাবী করেছেন। সুতারখালী ইউপি চেয়ারম্যান মাসুম আলী ফকির জানিয়েছেন বৃহৎ শিপসা নদীর তীরবর্তী গুনারী, নলিয়ান ফরেষ্ট অফিস সংলগ্ন, কালাবগী এবং তেলিরকোনা এলাকার বাঁধ মারাতœক ঝুকিপূর্ন অবস্থায় আছে। তিনি জরুরী ভিত্তিতে ঐ সকল বাঁধ পূর্ন নির্মানের দাবী করেছেন।