কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে বোরো ধান ক্ষেতে নেক ব্লাস্ট রোগের আক্রমণ দেখা দিয়েছে। ভ্যাপসা গরম পরবর্তী বৃষ্টি হলে বাতাসে ভাসতে থাকা ছত্রাকের আক্রমনে তা ছড়াচ্ছে আক্রান্ত জমি থেকে অন্য জমিতে। ওষুধ ছিটিয়েও মিলছে না প্রতিকার। শংকিত কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, চলতি বোরো মৌসুমে ২১ হাজার ২শ হেক্টর জমির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে হাইব্রিড-৫হাজার ৯শ ৯০, উপসি-১৫ হাজার ২শ ১০ ও স্থানীয় জাতের ধান ১শ হেক্টর। কিন্তু কৃষক লাগিয়েছেন ২১ হাজার ৩শ হেক্টর জমিতে সব ধরনের বোরো ধান। চৈত্রে নিয়মিত বিরতীতে বৃষ্টি হওয়ায় চাড়াগাছগুলো সুস্থ সবল হয়ে ওঠে। ভলো ফলনের স্বপ্ন দেখে কৃষক। শীষ বের হওয়ার পুর্বে অথবা পরে হঠাৎই সেগুলো আক্রান্ত হচ্ছে বাইকোলারিস অরাইজি ছত্রাক সৃষ্ট নেক ব্লাস্ট রোগে। ভ্যাপসা গরম পরবর্তী বৃষ্টি হলে বাতাসে ভাসতে থাকা ছত্রাক, রোগাক্রান্ত গাছের জীবানু ও পোকামাকড়ের মাধ্যমে তা এক জমি থেকে ছড়িয়ে পড়ছে অন্য জমিতে। রোগের আক্রমনে ধানের পাতা, গিট, শীষের গোড়া, শাখা-প্রশাখা কালো, দুর্বল হয়ে এবং পানি ও খাদ্য গ্রহণ করতে না পারায় ধান পুষ্ট হওয়ার আগে চিটা হয়ে যাচ্ছে শীষের সব ধান, মরে যাচ্ছে ধানগাছগুলো। উপজেলার সব ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে এ অবস্থা।
পৌরসভার পুর্ব সাঞ্জুয়ার ভিটা গ্রামের কৃষক বাচ্চু মিয়া, চৌবাড়ী পায়রাডাঙ্গা গ্রামের অনিল চন্দ্র, পুর্ব বাঘডাঙ্গা গুন্ডিরচর এলাকার আবু বকর সিদ্দিক, আফছার আলী, শাহদুল ইসলাম, আবুল কাশেম, কালীগঞ্জ ইউনিয়নের মাধাইখাল কুটির জামাল উদ্দিন, রফিক মিয়া, সাহাজুল হক, কুমড়িয়ারপাড় গ্রামের কৃষ্ণ চন্দ্র বলেন গত কয়েক বছর থেকে এ এলাকায় ধান ক্ষেতে নেক ব্লাস্ট রোগের আক্রমনে ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এবারও এ মৌসুমে ধান ক্ষেতগুলোতে এর আক্রমণ দেখা দিয়েছে। ওষুধ ছিটিয়েও প্রতিকার মিলছে না। এতে আমরা শংকিত হয়ে পরেছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শামসুজ্জামান বলেন জমিতে অতিরিক্ত নাইট্রোজেন সার প্রয়োগ, রোগাক্রান্ত বীজ ব্যবহার, দিনে প্রচন্ড গরম ও রাতে ঠান্ডা অবস্থা বিরাজ করায় রোগটি দেখা দিচ্ছে। তবে এর ব্যাপকতা না থাকায় ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা নেই। এ রোগের বিস্তার ঠেকাতে আমরা ১৬ লিটার পানিতে ১০ গ্রাম নাভিটো অথবা ১৬ গ্রাম ট্রুপার অথবা ১৬ মিলি এমিটারটপ অথবা ১৬ গ্রাম জিল অথবা ২ গ্রাম নোইন অথবা অটোস্টিন ও ৮০ গ্রাম পটাশ মিশিয়ে ৪-৫ দিনে ২ বার স্প্রে করতে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি। এ ছাড়া রোগাক্রান্ত হওয়ার পুর্বে প্রতিষেধক ছিটালে ওই ক্ষেতে নেকব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে না।