নলছিটির দপদপিয়া ইউনিয়নে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানীর সীমাহীন লো ভোল্ট্রেজ নিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছে গ্রাহকরা। জানা গেছে ,নলছিটি বিদ্যুৎ সরবারহের আওতাধীন পূর্ব দপদপিয়া এলাকায় বাণিজ্যিক, আবাসিক, সেচ পাম্প মিলে মোট ৩৫০টি পরিবার বিদ্যুৎ গ্রাহক রয়েছে। গত চার বছর ধরে লো ভোল্টেজের কারণে সব শ্রেণির গ্রাহকদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থীরা। গ্রীস্মকালে ভ্যাপসা গরম ও বৈদু্যুতিক আলো না থাকায় তাদের পড়াশুনা ব্যহত হচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, শীত মৌসুমে বাসাবাড়িতে অল্প পরিসরে বৈদ্যুতিক আলো জ¦ালানো গেলেও গরম কালে সম্পূর্ণ বন্ধ থাকে আলোর ব্যবস্থা। দিনে কিছুটা ভোল্টেজ থাকলেও রাতে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ভোল্টেজ একেবারে কমে যায়। সন্ধ্যা নামার সাথে সাথেই স্বয়ক্রিয় ভাবে বিদ্যুৎ বিহীন হয়ে পড়ে পুরো এলাকা। এ অবস্থায় বিদ্যুৎ বিহীন হয়ে গরমে নাভিশ্বাস উঠেছে স্থানীদের। লো ভোল্টেজ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ওজোপাডিকোর বিদ্যুৎ লাইন শক্তিশালীকরণ প্রকল্প পরিচালকের সাথে স্বশরীরে স্বাক্ষাত করে সমস্যা অবহিতকরণ এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য’র সুপারিশ নিয়ে ওজোপাডিকোর নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবর একাধিক বার আবেদন করলেও কোন প্রতিকার মেলেনি। বিদ্যুৎতের এ সমস্য থেকে রেহাই পেতে এলাকাবাসী রবিবার পুনরায় সংস্থাটির নির্বাহী প্রকৌশলী বরিশাল, নলছিটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও আবাসিক প্রকৌশলীসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত আবেদন করেছেন। লো ভোল্টেজ থাকায় গত কয়েকদিনে ওই গ্রামে বেশ কিছু ফ্রিজ ও টেলিভিশন নষ্ট হয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার পূর্ব দপদপিয়া গ্রামের বাসিন্দা শিপন রাঢ়ী জানান, মাত্র ছয় মাস আগে অনেক কষ্ট করে একটি ফ্রিজ কিনেছিলেন। লো ভোল্টেজের কারণে সেটি নষ্ট হয়ে গেছে। একই গ্রামের বাসিন্দা আরিফ মোল্লা বলেন, কয়েক দিন আগে লো ভোল্টেজের কারণে তাঁর গভীর নলকূপের মিটার পুড়ে গেছে। তিনি বলেন, ভোল্টেজ কম থাকায় সেচ পাম্প চলছে না, এ কারণে জমিতে সেচ দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। নলছিটি বিদ্যুৎ সরবারহ সূত্রে জানা যায়, নিয়মনীতি অমান্য করে ২০১৪ সালে স্থানীয় এক ইউপি সদস্য ঠিকাদারের সাথে যোগসাজসে মোটা অংকের অর্থ লেনদেন করে খুঁটি বসিয়ে ঝঁকিপূর্ণ ভাবে ২ তারের ওই বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণ করে। যেটি ট্যাকনিক্যাল ফিজিবল হয়নি। যার ফলে তখন থেকেই চাহিদামত ভোল্টেজ পাচ্ছে না গ্রাহকরা। এ ছাড়া ওই এলাকায় থাকা ট্রান্সফরমারটি অধিক ঝঁকিপূর্ণ হওয়ায় বর্তমানে প্রকট আকারে ভোল্টেজ সমস্যা দেখা দিয়েছে। জানা গেছে, এলাকাবাসীর আবেদনের প্রেক্ষিতে ওজোপাডিকোর নির্বাহী প্রকৌশলী আমজাদ হোসেন গত ছয়মাস আগে ওই এলাকা সরেজমিন পরির্দশন করেছিলেন। তখন নলছিটি উপজেলায় চলমান বিদ্যুৎ লাইন শক্তিকরণ প্রকল্পে পূর্ব দপদপিয়া গ্রামের লো ভেল্টেজ সমস্যাটি সংযুক্ত করে ০৭ দিনের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু ঠিকাদরি প্রতিষ্ঠান মেসার্স আজাদ ট্রেন্ডিং করপোরেশন নির্বাহী প্রকৌশলীর নির্দেশ তোয়াক্কা না করে কাজ বন্ধ রাখেন। পরে প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হওয়ায় কাজ সম্পন্ন করা যায়নি। এ ব্যাপারে নলছিটি বিদ্যুৎ সরবারহের আবাসিক প্রকৌশলী ফিরোজ হোসেন সন্যামত বলেন, পূর্ব দপদপিয়া গ্রামের লো ভোল্টেজ সমস্যা দীর্ঘদিনের। এটি সমাধানে ১৪টি এসটি খুঁটি স্থাপন, ২ তারের ঝঁকিপূর্ণ লাইনটি ৪ তারে রুপান্তর এবং একটি ট্র্রান্সফারমার সংযোজন করতে পারলে সমস্যার স্থায়ী সমাধান দেয়া যাবে। এ ব্যাপারে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিষ্টিবিউশন কোম্পানীর নির্বাহী প্রকৌশলী আমজাদ হোসেন জানান, নলছিটির পূর্ব দপদপিয়া গ্রামে লো ভেল্টেজ সমস্যা সমাধানের জন্য ইতোমধ্যে বিদ্যুৎ বিভাগের নলছিটিতে চলমান নতুন প্রকল্পে আওতাভূক্ত করা হয়েছে। আগামি ১৬ মে দরপত্র ওপেন হবে বলে আশা করছি। কাজ শুরু হলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ওই গ্রামের বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধান করা হবে।