মুলাদীতে বাড়ি-ঘর ভেঙ্গে বসত ভিটা থেকে উচ্ছেদ করে মাথা গোজার ঠাই কেড়ে নিয়েও ক্ষান্ত হয়নি প্রভাবশালীরা। উল্টো মামলা দিয়ে হয়রানি করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বাড়ি থেকে উচ্ছেদ, হামলা, ভাঙ্গচুর ও লুটপাট মামলা তুলে নিতে ওই অসহায় পরিবারটিকে এলাকা ছাড়া করা ও হত্যাসহ নানান রকম হুমকি দিচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। উপজেলার সফিপুর ইউনিয়নের উত্তর বালিয়াতলী গ্রামের মৃত আঃ কাদের মালের পুত্র আতাহার মাল ও তার লোকজন সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে এই এলাকার আঃ ছালাম খন্দকারের পুত্র শাহজাহান খন্দকার ও তার পরিবারকে বাড়ি থেকে উচ্ছদ করে তাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দিয়ে হয়রানি করছে বলে জানিয়েছেন শাহজাহান খন্দকার। জানাগেছে উপজেলার উত্তর বালিয়াতলী গ্রামের সালাম খন্দকার ২০০৮ সালে ৫৮ শতাংশ জমি ক্রয় করে বাড়ি-ঘর নির্মাণ করে প্রায় ১১ বছর ধরে ভোগদখল করে আসছেন। কিছুদিন আগে আগে একই এলাকার আঃ কাদের মালের ছেলে আতাহার মাল ও আঃ ওয়াহেদ কাজীর ছেলে মামুন কাজীর নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী ওই জমি দখলের জন্য তাদেরকে বাড়ি-ঘর ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। সালাম খন্দকার ঘর-বাড়ি ছেড়ে দিতে অস্বীকার করলে ২৩ এপ্রিল সকালে আতাহার মাল, মামুন কাজী, আবু তাহের মালের নেতৃত্বে ২৫/৩০জন সশস্ত্র সন্ত্রাসী হাত বোমা, রামদা, লেজা, লাঠিসোটা, হাতুড়ি, শাবল নিয়ে সালাম খন্দকারের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ঘর ভাঙ্গচুর করে করে। এ সময় সালাম খন্দকারের স্ত্রী সালেহা বেগম তাদের বাধা দিলে সন্ত্রাসীরা তাকে মারধর করে টেনে হিচরে শ্লীলতাহানী করে বাইরে নিয়ে গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতন চালায়। সালেহা বেগমের ডাকচিৎকারে তার মেয়ে তামান্না আক্তার, স্বামী সালাম খন্দকার, ছেলে শাহজাহান খন্দকার ছুটে গেলে সন্ত্রাসীরা তাদেরকেও মারধর করে এবং হত্যার হুমকি দেয়। ওই সময়ে হামলাকারীর সালাম খন্দকারের ঘরের চালা, বেড়াসহ সবকিছু নিয়ে যায়। এ ছাড়া ঘরে থাকা নগদ টাকা, দলিলপত্র, মূল্যবান কাগজপত্র স্বর্ণালংকার, ২টি গরু, ১টি ছাগল লুট করে নেয়। পরে সন্ত্রাসীরা ঘরের ভিটা কোদাল দিয়ে সমতল করে সেখানে কলাগাছ রোপন করে দেয়। ওই ঘটনায় সালাম খন্দকারের ছেলে শাজাহান খন্দকার বাদী হয়ে ২৪ এপ্রিল আতাহার মাল, মামুন কাজী, পালাশ মাল, আবু তাহের মাল, শহীদুল মালসহ ১৮জনের নাম উল্লেখ করে ২৩জনের বিরুদ্ধে মুলাদী থানায় মামলা দায়ের করে। মামলার পর থেকেই আতাহার মাল ও তার লোকজন চরমভাবে ক্ষিপ্ত হয় এবং বাদী ও তার পরিবারকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। গত ২৫ এপ্রিল আতাহার মাল বাদী হয়ে শাজাহান খন্দকার, ইমরান খন্দকারসহ ৭জনের নাম উল্øেখ করে অজ্ঞাত ৪/৬জনের বিরুদ্ধে বরিশাল অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। হামলাকারীদের স্বাক্ষী বানিয়ে অসহায় পরিবারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করায় এলাকার সাধারণ মানুষের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তারা তদন্তপূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং অসহায় পরিবারটিকে রক্ষা করার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। আদালত থেকে জামিন নিয়ে আসা আতাহার মাল ও তার লোকজনের হুমকিতে শাজাহান খন্দকার ও তার পরিবার নিরাপত্তাহীনতা ভুগছে এবং এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। অপরদিকে বসত বাড়ি থেকে উচ্ছেদ হওয়ায় চিকিৎসা শেষে কোথায় গিয়ে আশ্রয় নেবেন এই দুশ্চিন্ত নিয়ে হাসপাতালে বেডে শুয়ে দিন কাটাচ্ছেন শাজাহান খন্দকারের আহত মা সালেহা বেগম। এ ব্যাপারে মুলাদী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সাইদ আহমেদ তালুকদার জানান বসত বাড়িতে হামলা, ভাঙ্গচুর ও লুটপাটের ঘটনায় শাজাহান খন্দকারের এজাহারের ভিত্তিতে এক আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। উল্টো মামলা দায়ের হয়ে থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।